চার জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৭

পিবিএ,ঢাকা: টাঙ্গাইল,কিশোরগঞ্জ,, ফরিদপুর, ও ফেনীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৮৪ জন।

ঈদুল আজহার চতুর্থ দিন বৃহস্পতিবার এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের সখীপুরে পিকআপভ্যানের চাপায় ইসতিয়াক আহমেদ (১৭) নামে এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সখীপুর-গোড়াই সড়কের বোয়ালী উত্তরপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ইসতিয়াক আহমেদ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের শাকিল আজাদের ছেলে। তিনি সরকারি মুজিব কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।

সখীপুর থানার ওসি আমির হোসেন পিবিএ’কে জানান, সকালে ইসতিয়াক আহমেদ মোটরসাইকেলযোগে সখীপুর থেকে নলুয়া যাওযার সময় বোয়ালী উত্তরপাড়া এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপভ্যান তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এ সময় তিনি মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে গিয়ে রাস্তায় পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ট্রাকের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।

বেলা ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়কের কটিয়াদী উপজেলার আছমিতা ইউনিয়ন পরিষদের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- তোফাজ্জাল হোসেন, ওমর ও সিএনজিচালক জামাল।

আহতরা হলেন- আবুদাল কাদের, পরিমল, গিয়াস উদ্দিন ও সিরাজ মিয়া।

নিহতদের মধ্যে সিএনজিচালক জামাল উদ্দিনের বাড়ি করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামে। অন্য দুজনের বাড়ি ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী পিবিএ’কে জানায়, সকালে যাত্রীবোঝাই একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিশোরগঞ্জ থেকে কটিয়াদীর দিকে যাচ্ছিল।

অটোরিকশাটি আছমিতার ভিটাদিয়া এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হয়। উদ্ধার করে বাকিদের বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক আরও দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া আহত চারজনকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কটিয়াদী হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাসির উদ্দিন মজুমদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ফরিদপুর: ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ তিনজন নিহত ও কমপক্ষে ৫০ যাত্রী আহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন- বাসচালক রওশন মিয়া, মীরাকুণ্ড নামে এক নারী ও অজ্ঞাত এক বৃদ্ধ।

সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভাঙ্গার নওপাড়া নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি আতাউর রহমান এ দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আহত ৫০ জনকে প্রথমে ভাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গুরুতর আহত ২৫ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এদের মধ্যে ফরিদপুর মেডিকেলে অজ্ঞাতনামা এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।

এদিকে দুর্ঘটনার পর রাস্তার দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়লে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহায়তায় ফের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বরিশাল থেকে রাজশাহীগামী তুহিন পরিবহন ও ফরিদপুর থেকে টেকেরহাটগামী লোকাল বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। বাস দুটি সামনের অংশ সম্পূর্ণ দুমড়ে-মুচড়ে যায়।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজ শুরু করেন। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তুহিন পরিবহনের যাত্রী আহত লিমা আক্তার পিবিএ’কে জানান, লোকাল বাসটি উল্টোপাশে এসে আমাদের গাড়িতে ধাক্কা মারে। তখনই চালক নিয়ন্ত্রণ হারান।

একই বাসের অপর এক যাত্রী পিবিএ’কে জানান, লোকাল বাসের বেপরোয়া চালানো এবং দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই সরু কালভার্ট ব্রিজ হওয়ায় ওই বাসকে সাইড দিতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

ফেনী: ফেনীতে কক্সবাজারগামী পিকনিকের একটি বাস দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন।

ভোর পৌনে ৬টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফেনীর লেমুয়ায় ব্রিজের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- বিক্রমপুরের অপু (৩৫), মিরপুরের ইকবাল (৩৮), মাদারীপুরের রিপন (৩০), নারায়ণগঞ্জের মুন্না খান (৩০), মিরপুরের শামীম (৩০), ছাগলনাইয়ার রাঁধানগর এলাকার শাহাদাত হোসেন (২৮) ও বিক্রমপুরের সুজন মিয়া।

আহতদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

মহিপাল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এসআই কাওসার যুগান্তরকে বলেন, ঘটনাস্থলেই ছয়জনের মৃত্যু হয়। আর হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও একজন মারা যান।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে যাচ্ছিল প্রাইম পরিবহনের বাসটি। ফেনীর লেমুয়ায় পৌঁছলে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই ছয়জন এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়।

হতাহতদের মধ্যে একই পরিবারের ৯ জন সদস্য রয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার ও বান্দরবান ভ্রমণে যাচ্ছিলেন।

পিবিএ/ইকে

আরও পড়ুন...