আসাদুজ্জামান স্টালিন, পিবিএ, নীলফামারী: নীলফামারীর জলঢাকা বিন্যাকুড়ি গ্রামে চলছে শোকের মাতম। বনানী এফআর ভবনে অগ্নিকান্ডে নিহত দম্পত্তির একজন রুমকী। একই ঘটনায় তার স্বামী মাকসুদুর রহমান জেমিও নিহত হয়।
ওই ভবনে একই ট্রাভেল এজেন্সিতে কর্মরত ছিল স্বামী-স্ত্রী। নিহত রুমকী জলঢাকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সৈয়দ আলীর ছোট ভাই আশরাফ আলীর মেয়ে।
এফ আর টাওয়ারে ধোঁয়ায় শ্বাসরোধ হয়ে রুমকী নিহত হলে লাশ নিয়ে আসা হয় তার নিজ গ্রামের বাড়িতে। শুক্রবার দুপুর ১২টায় একটি লাশবাহী গাড়ীতে তার মরদেহ ঢাকা থেকে পৌছেছে। এসময় স্বজন ও এলাকাবাসীর বুক ফাটা আহাজারিতে সেখানকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। বাদ জুম্মা রুমকীর জানাযা শেষেপারিবারিক কবরস্থানে তার মায়ের পাশে দাফন করা হয়।
শুক্রবার সকালে উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের বিন্যাকুড়ি এলাকায় নিহত রুমকীর বাবার বাড়ীতে মরদেহ একনজর দেখার আশায় হাজারো মানুষের ভীড় দেখা যায় ।
রুমকীর ভাই রওশন আলী রনির জানান,আমাদের দুই ভাইয়ের মাঝে একটি মাত্র বোনই ছিল । সেও চলে গেল। তার অফিসে আগুন লাাগার সাথেই আমাকে ও আব্বাকে মোবাইল করে বলে, ভাইয়া ধোঁয়ায় আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, আমি বোধ হয় মারা যাবো। আমার জন্য দোয়া করিস! এরপর অনেকবার ফোন দিয়েছি আর ধরে নাই। এই বলে তিনি আবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
রুমকীর জেঠাতো বোন মুক্তা বলেন, এলাকার মানুষ তাকে প্রচন্ড ভালবাসতো। এই তো সেদিন তিন দিনের ছুটিতে বেড়াতে এসেছিল রুমকী। কিন্তু কখনো ভাবিনি এ দেখাই শেষ দেখা হবে। রুমকী তখন বলেছিল সে চার মাসের অন্তসত্তা।
রুমকী লেখা-পড়ায় অনেক মেধাবী ছিল। ২০০১ সালে স্থানীয় বিসি সরকার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে। রংপুর কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাসে অনার্স ও ঢাকা তিতুমীরকলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করে একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরীতে যোগদান করে।
নিহত রুমকীর বড় ভাই রফিকুল ইসলাম রিকু পিবিএ’কে বলেন, তিন বছর আগে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকার মৃত মিজানুর রহমানের ছেলে মাকসুদুর রহমান জেমির সাথে বিয়ে হয়। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস জীবন বাচাতে বোনের স্বামীও বহুতল ভবন থেকে ঝাঁপ দিয়ে সেও মারা যায়। মাত্র ছয় মাস আগে আমাদের মা মারা যায় সেই শোক কাটতে না কাটতেই আবারো একটি শোক।
পিবিএ/এএস/হক