চার মাস পর রশিদ হত্যা মামলার রহস্য উম্মোচন

শেরপুর (বগুড়া): চার মাস নিরবিচ্ছিন্ন পুলিশি তদন্তে উম্মোচিত হল আব্দুর রশিদ (৪৫) হত্যাকান্ডের মূল রহস্য। এই ঘটনায় পুলিশ মোট ০৬ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেছে। উক্ত ০৬ আসামীর মধ্যে ০১ জন আসামী ঘটনার সাথে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

জমিজমা সহ ভিটা মাটির ভাগ বাটোয়ারা ও পারিবারিক কলহের জের ধরেই এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে বলে মামলা তদন্তকালে প্রকাশিত হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ মৃত আব্দুর রশিদের ছোট ভাই মোঃ বাবলু মিয়া (৩২) ও মৃতের পিতা-মোঃ ময়েজ উদ্দিন (৭০) স বাবলু মিয়ার সম্বন্ধী তথা পারভবানীপুর গ্রামের আঃ রশিদের পুত্র আঃ বারেক (৩০), ঘোরদৌড় গ্রামের জনৈক মৃত কাদের বক্স মুন্সির পুত্র মোঃ ইয়াছিন আলী মুন্সি (৫৪), জনৈক আবুল হোসেনের পুত্র মোঃ হাফিজার রহমান (৫০) ও মোঃ আফজাল হোসেন (৫৬)দেরকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে জনৈক মোঃ ইয়াছিন আলী মুন্সি নিজের দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

উল্লেখ্য যে, শেরপুর উপজেলার ঘোরদৌড় নতুনপাড়া গ্রামের জনৈক ময়েজ উদ্দিন এর বড় ছেলে আব্দুর রশিদ (৪৫) গত ২৩ মার্চ, ২০২০ খ্রিঃ তারিখে অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতিকারী কর্তৃক হত্যাকান্ডের শিকার হয়। উক্ত ব্যক্তির লাশ ঘোরদৌড় গ্রামের জনৈক আঃ হালিমের ডোবার মধ্যে নৌকার সাথে বাধা অবস্থায় পানির নিচে ডুবানো ছিল। গ্রেফতার হওয়া ইয়াছিন আলী মুন্সি আদালতে জানান যে, তিনি ২৩ তারিখ রাত ১২ টার পরে পেশাব করতে বের হয়ে দেখেন কয়েকজন লোক ডোবায় কিছু করছে। এত রাতে তারা কি করছে দেখার জন্য এগিয়ে গেলে আসামীরা তার হাত পা ধরে এবং সে যেন বিষয় কাওকে না বলে এ জন্য সকাল ১০ টার মধ্যে ১ লাখ টাকা দিতে চায়। পরে বিকাল পর্যন্ত টাকা না দিলে সে ২৪ মার্চ বিকাল ০৫.০০ ঘটিকায় উক্ত ডোবা থেকে নৌকা টেনে আঃ রশিদ এর লাশ বের করে।

২৪ মার্চ ২০২০ খ্রিঃ মৃত আঃ রশিদের লাশ ডোবায় পাওয়া গেলে শেরপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং মৃত আঃ রশিদের লাশ ময়না তদন্তের জন্য শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ মর্গে প্রেরণ করেন। এরপর পুলিশ নিবিড় তদন্ত শুরু করে। তদন্তকালে মৃতের পরিবারের লোকজন সহ উক্ত এলাকার সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। মামলার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করেন। পুলিশ সুপার বগুড়া জনাব মোঃ আলী আশরাফ ভূঞা-বিপিএম বার প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে ও নির্দেশনায় শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ গাজিউর রহমানের নেতৃত্বে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান, সার্বক্ষনিক নাছড়বান্দা হয়ে লেগে থাকা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোঃ আবুল কালাম আজাদ ও তদন্তকারী অফিসার এস.আই মোঃ ফজলুল হকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মামলার ক্ল্যু উদ্ধার হয়। গ্রেফতারকৃত ইয়াছিন আলী মুন্সি ২৮ জুলাই বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। বর্তমানে মৃত আব্দুর রশিদের ছোট ভাই মোঃ বাবলু মিয়া (৩২) ও মৃতের পিতা-মোঃ ময়েজ উদ্দিন (৭০) উভয়ে দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডে থানা হেফাজতে নিবির জিজ্ঞাসাবাদে আছে। গ্রেফতারকৃত আঃ বারেক এর ০৭ দিনের পুলিশ রিমান্ড প্রার্থনা করে আজ বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

পিবিএ/আবু বকর সিদ্দিক/এসডি

আরও পড়ুন...