চা পাতার ১০টি গোপন টিপস

পিবিএ ডেস্কঃ আমাদের দেশে যে পানীয় গুলো সবচাইতে বেশী প্রচলিত, তাদের মাঝে একটি হলো চা। চা হচ্ছে সেই পানীয়, যা ছাড়া বাঙালির যেন চলেই না। কিন্তু চা কি শুধু পানীয় রূপেই পান করার যোগ্য? আর কিছুই কি হয় না চা দিয়ে? অবশ্যই হয়। শুধু আপনাকে জানতে হবে যে কি করে প্রয়োগ করতে হয় বা ব্যবহার করতে হয় চা পাতাকে। পানীয় হিসাবে চায়ের আছে শরীরের জন্য উপকারী নানান গুন, তা আমরা কমবেশি সকলেই জানি। কোমল পানীয়ের ক্যালোরি কমানো থেকে শুরু করে খাবারের স্বাদ বাড়াতে, রূপ চর্চার সামগ্রী তৈরি করতে, ঘরদোর পরিষ্কার রাখতে, বাজে গন্ধ দূর করতে… ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রেই আছে চা পাতার ব্যবহার। এমনকি ফেলনা নয় ব্যবহৃত চা পাতাও। আসুন জেনে নেই, এই চা পাতার ব্যবহার—

  • ১)ক্লান্ত চোখকে আরাম দিতে-

কাজের চাপে হোক বা কম ঘুমের কারণে হোক, চোখের নিচে ফোলা ভাব বা চোখ লাল হয়ে যাওয়া আমাদের অনেকেরই সমস্যা। সেই সাথে কালো দাগের সমস্যা তো আছেই। এই সমস্ত সমস্যা থেকে আরাম পেতে টি ব্যাগ নিন, ঠাণ্ডা পানিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে চোখের অপর রেখে শুয়ে থাকুন ২০ মিনিট। দেখবেন চোখের ফোলা বা লাল ভাব কমে গিয়ে কান্তি দূর হয়েছে অনেকটাই। নিয়মিত ব্যবহার করলে কালো দাগও চলে যাবে।

  • ২) খাবারের স্বাদ বাড়াতে-

খাবারের স্বাদ বাড়াতে চা পাতা একটা অতি চমৎকার একটা উপাদান। ওভেনে মুরগী বা গরু রোস্ট করতে চাইলে মেরিনেশনে দিন চমৎকার সুগন্ধ যুক্ত কোনও চায়ের লিকার। আপনার পছন্দ মতন যে কোনও চায়ের ব্যবহার চলতে পারে। এছাড়াও জেসমিন টি আস্তই দিতে পারেন মেরিনেশনে। মাংসের ফ্লেভার বাড়াতে চা খুব চমৎকার একটা উপাদান। এছাড়াও আইস টি, টি ফ্লেভারড আইসক্রিম ইত্যাদি কত কিছু যে প্রস্তুত কড়া যায় তার ইয়ত্তা নেই।

  • ৩)কোমল পানীয়ের ক্যালোরি কমাতে-

ভীষণ শরীর সচেতন আপনি, কিন্তু অন্যদিকে কোমল পানীয় খেতেও ভালোবাসেন? এই ধরনের পানীয়ের ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহার করুন ছোট্টও একটা উপায়। পছন্দসই যে কোনও চা পাতা জ্বাল দিয়ে হাল্কা লিকার করে নিন। তারপর ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে অল্প লেবুর রস মিশিয়ে রাখুন। আপনার পানীয়ের গ্লাসে অর্ধেক নিন কোমল পানীয়, আর অর্ধেক নিন এই ঠাণ্ডা চা। স্বাদ তো কমবেই না, বরং বাড়বে। সাথে ক্যালোরিও কমে যাবে অনেকটাই।

  • ৪)ঘরদোর পরিষ্কার করতে-

পরিষ্কার করতে চান ঘোলাটে বা ময়লা আয়না? একটা ব্যবহার হয়ে যাওয়া টি ব্যাগ ভালো করে ঘষুন আয়নায়। তারপর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিন। কাঠের আসবাব থেকে ফাঙ্গাসের আক্রমণ কমাতে চায়ের লিকারের সাথে ভিনেগার মিশিয়ে আক্রান্ত স্থান মুছুন। মেঝে, চুলা বা সিঙ্ক থেকে চটচটে ভাব কমাতেও ব্যবহার করুন ভেজা টি ব্যাগ বা চায়ের লিকার। দাগ তোলা হয়ে গেলে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিন।

  • ৫)ভালো রাখতে কাপড়-

আলমারি বা ওয়ারড্রবে সব সময় কয়েকটি শুকনো টি ব্যাগ রেখে দিন। এতে কাপড়ে স্যাঁতসেঁতে ভাব যেমন হবে না তেমনই হবে না বাজে গন্ধও।

  • ৬)চিকিৎসায়-

মুখে ঘা হয়েছে? চায়ের ঠাণ্ডা লিকার মাউথ ওয়াশের মতন ব্যবহার করুন কুলি করতে। নিরাময় হবে এই সমস্যা। দাঁত তোলার পর বেশী রক্তপাত ও ব্যথা হচ্ছে? ঠাণ্ডা পানিতে ভেজানো টি ব্যাগ আক্রান্ত স্থানে দিয়ে রাখুন। রক্তপাত কমবে ও ব্যথাও কম হবে।

  • ৭) ত্বকের সমস্যা দূর করতে-

ব্রণের সমস্যা অনেক বেশী? রঙ চা বানাবার পর রয়ে যায়না চা পাতা? সেই পাতা জ্বাল দিয়ে হাল্কা লিকার তৈরি করে রাখুন। মুখ ধোয়ার জন্য সেই পানি ব্যবহার করুন। চাইলে নতুন চা পাতা জ্বাল দিয়েও তৈরি করতে পারেন এই লিকার। তবে চা পাতা দিবেন খুব সামান্য। ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করার জন্যে আক্রান্ত স্থানে ঠাণ্ডা চায়ের লিকার বা ভেজা টি ব্যাগ লাগান। জ্বলুনি কমবে। নিয়মিত ব্যবহারে দাগও চলে যাবে।

  • ৮)গাছের সার-

চা তৈরি হয়ে যাবার পর ফেলে দেন পুরানো পাতা? কক্ষনো তা করবেন না। কেননা এই ব্যবহৃত চা পাতা ভীষণ ভালো একটা সার গাছের জন্য। ঠাণ্ডা করে যে কোনও গাছের গোঁড়ায় দিয়ে দিন, কখনো আর সার কিনতে হবে না।

  • ৯)চুলের কন্ডিশনার হিসাবে-

এক কাড়ি টাকা খরচ করে দামী কন্ডিশনার কেনার দিন এখন শেষ। বরং বারিতেই তৈরি করে নিন এই বস্তু। চা পাতা অনেকটা সময় জ্বাল দিয়ে গাঢ় ও ঘন লিকার তৈরি করে নিন। শ্যাম্পু করার পর চুলে ভালো করে লাগিয়ে নিন ও ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। চাইলে পানি দিয়ে হাল্কা করে ধুয়ে নিতে পারেন, না ধুলেও সমস্যা নেই। চুল হয়ে উঠবে চকচকে আর মোলায়েম। আর সুবিধা হলো যে কোনও প্রকার চুলেই ব্যবহারযোগ্য।

  • ১০) গন্ধ দূর করতে

জুতায় বা ফ্রিজে হয়েছে বিচ্ছিরি পচা গন্ধ? শুকনো টি ব্যাগ রেখে দিন জুতো বা ফ্রিজের মাঝে সারারাত। গন্ধ চলে যাবে।

আরও পড়ুন...