চীন থেকে আমদানিকৃত ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যাটারি, কম্পিউটার চিপ এবং চিকিৎসাপণ্যসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের ওপর উচ্চহারে শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
রয়টার্সের খবর বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার অর্থনৈতিক নীতিমালার সমালোচনাকারীদের জবাব দিতে এবং আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে নতুন এই পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে বাইডেনের এমন পদক্ষেপ ফের আমেরিকা-চীন দ্বন্দ্বকে উস্কে দিল বলে মনে করছেন অনেকে।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস রোজ গার্ডেনে ট্রেড ইউনিয়ন ও সংস্থাগুলোর সামনে বক্তব্যকালে বাইডেন বলেন, ‘আমেরিকান কর্মীরা যতক্ষণ পর্যন্ত প্রতিযোগিতা সুষ্ঠূ হবে ততক্ষণ পর্যন্ত যে কাউকে আউট-ওয়ার্ক এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে প্রতিযোগিতা সুষ্ঠূ ছিল না। বছরের পর বছর ধরে, চীন সরকার চীনা কোম্পানিগুলোতে রাষ্ট্রীয় অর্থ ঢেলে দিয়েছে এটি প্রতিযোগিতা নয়, এটি প্রতারণা।’
হোয়াইট হাউসের দাবি, সস্তা ভর্তুকিযুক্ত চীনা পণ্যগুলো মার্কিন বাজারে প্লাবিত হওয়া ও আমেরিকান সবুজ প্রযুক্তি খাতের বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল।
বাইডেন বলেন, ‘আমরা চীনকে আমাদের বাজারে প্লাবিত হতে দেব না।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে চীন। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে চীন। ওয়াশিংটনকে এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারেরও আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং। চীন জানিয়েছে, নিজের স্বার্থ রক্ষায় তারাও এবার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।
হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানিয়ছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্ক বহাল থাকবে এবং নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়বে। যার মধ্যে রয়েছে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম, সেমিকন্ডাক্টর, ব্যাটারি, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ, সোলার সেল ও ক্রেন। এর মধ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করা হয়েছে।সেমিকন্ডাক্টরের ক্ষেত্রে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। লিথিয়াম ব্যাটরির উপর শুল্ক ৭ দশমিক ৫ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের ক্ষেত্রে শুল্ক শূন্য থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ, সোলার সেলের ক্ষেত্রে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে।
এছাড়া ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জামের উপর শুল্ক শূন্য থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে।
মার্কিন সেন্সাস ব্যুরো অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র ২০২৩ সালে চীন থেকে ৪২৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে এবং ১৪৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। আমদানি-রপ্তানির এই ব্যবধান গত কয়েক দশক ধরে অব্যাহত রয়েছে এবং ওয়াশিংটনে এটি বেশ সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছে।