চুয়াডাঙ্গায় ঈদের ছুটির সুযোগে সরকারি গাছ কর্তন

পিবিএ,চুয়াডাঙ্গা: ঈদের ছুটিতে জীবননগর উপজেলার সকল অফিস কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবেই বন্ধ থাকে বিষয়টি সকলেরই জানা। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঝোপ বুঝে কোপ মারলেন জীবননগর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকী।

তিনি কয়েক দিন যাবৎ স্থানীয় কাঠ ব্যবসয়াীদের সাথে আতাত করে ঈদের ছুটির সুযোগে উপজেলা চত্বর থেকে সরকারী গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। ঘটনার সরেজমিনে জানা গেছে জীবননগর উপজেলা পরিষদের সরকারি স্থাপনার ভেতর থেকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকীর নির্দেশে গাছ কর্তন করা হয়েছে। কিভাবে একজন জনপ্রতিনিধি এভাবে গোপনে সরকারী গাছ কেটে বিক্রি করেন এ বিষয়টি নিয়ে জীবননগর উপজেলা শহরে টক অপ দা টাউনে পরিনত হয়েছে। এবিষয়ে গাছ চুরির মামলা দায়ের করেছেন জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান ।

উপজেলা পরিষদ সূত্র থেকে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদের সরকারি স্থাপনার ভিতর থেকে একটি সেগুন গাছ কেটে আলমসাধু যোগে নিয়ে যাচ্ছিল কয়েকজন শ্রমিক। এ সময় স্থানীয়রা গাছসহ আলমসাধু ও তাদেরকে আটকিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে খবর দেন। তখন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিরাজুল ইসলাম হাজির হয়ে কর্তনকৃত গাছ জব্দ করেন এবং গাছ কর্তনে নিযুক্ত শ্রমিকদের আটক করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার জিজ্ঞাসাবাদে আটক শ্রমিকরা পিবিএ’কে জানান, সীমান্ত স’মিলের মালিক শফিকুল ইসলাম(শফি) তাদেরকে গাছ কর্তনের জন্য নিযুক্ত করেছেন। পরে সীমান্ত স’মিল থেকে সেগুন গাছের আরো দুটি বড় গুড়ি উদ্ধার করে নিয়ে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সীমান্ত স’মিলের মালিক শফিকুল ইসলাম পিবিএ’কে জানান, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকীর নির্দেশে তিনি গাছ কর্তন করে স’মিলে নিয়ে গেছেন।

জীবননগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী হাফিজুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান আঃ সালাম ইশা পিবিএ’কে জানান, আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে শুনতে পারি পরিষদের ভিতর থেকে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার সময় গাছসহ কয়েকজন লোককে আটক করা হয়েছে। আমরা খবর শোনা মাত্র ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছি। আটককৃতদের সাথে কথা বলে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার জন্য থানায় মামলা করবো। উপজেলা পরিষদের কেউ যদি এই ঘটনার সাথে জড়িত আছে নাকি জানতে জানান, যথাযথ নির্দেশনা ছাড়া সরকারি গাছ কর্তনের সাথে পরিষদের কেউ যদি জড়িত থাকে সঠিক তদন্ত করে তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিরাজুল ইসলাম পিবিএ’কে বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে মুঠোফোনে জানতে পারি উপজেলা পরিষদের মধ্যে থেকে কে বা কারা সেগুন গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে আসি এবং মজুরদের জবানবন্দীতে উপজেলার পিচ মোড় নামক স্থানে অবস্থিত সীমান্ত স’মিলে অভিযান চালিয়ে পরিষদের সেগুন গাছের দুইটি গুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।

জীবননগর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি পিবিএ’কে জানান, কে বা কারা সরাসরি গাছ কর্তন করেছে এই বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। তবে একটি মহল এই ঘটনার সাথে আমার নাম জড়িয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের পাঁয়তারা করছে। আমাকে রাজনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে।

এ ব্যাপারে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ গনি মিয়া পিবিএ’কে জানান,চুরি করে উপজেলা পরিষদের সরকারি গাছ কর্তনের ব্যাপারে জীবননগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী হাফিজুর রহমান বাদি হয়ে একটি চুরির মামলা দায়ের করেন। পুলিশের একটি দল দোষী ব্যক্তিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যহত রয়েছে।

পিবিএ/টিটিি/এমএসএম

আরও পড়ুন...