চুয়াডাঙ্গায় কুমড়োবড়ি তৈরিতে ব্যস্ত গৃহবধুরা

chuadanga (maskolai bori) pictur 2019 PBA

পিবিএ, চুয়াডাঙ্গা: এই শীতে গ্রাম-শহরের গৃহবধুরা বাড়ির উঠানে কুমড়োর বড়ি তৈরীতে ব্যস্ত সময় পাড় করছে। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য শীতকালে এই কুমড়োবড়ির তৈরী অনেক বছর আগে থেকেই করে আসছে গ্রামের বধুরা। শীতকালে সারিবদ্ধ ভাবে বসে গ্রামের মেয়েরা হাতের বিভিন্ন ছোয়ায় ডালার উপর কুমড়োর বড়ি দিয়ে থাকে। শীতকালে রান্না করা বিভিন্ন তরকারির সাথে কুমড়োবড়ি যেন খাবারের আলাদা স্বাদ নিয়ে আসে। বর্তমানে নানা ধরনের খাবারের প্রচলন হলেও লোভনীয় খাবারের তালিকায় কুমড়োবড়ির অবস্থান এখনও প্রথম সারিতে।

গ্রামের গৃহবধু মরিয়ম বিবি বলেন, কুমড়োর বড়ি তৈরীতে বিশেষ কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। কুমড়োবড়ি তৈরির দুদিন আগে বড়ির উপকরণ মাসকলাই ডাল রাতে পানিতে ভেজানো হয়। চামচ বা কুরনি দিয়ে কুমড়া কেটে আগে থেকে কুরে রাখা হয়। ভেজানো ডাল ও কুমড়ো পানিতে ধুয়ে আলাদা ঢেঁকি অথবা শিলপাটায় পেষায় করা হয়। সকালে রোদ উঠলে পেষানো কুমড়ো ও ডাল একত্রে মিশিয়ে কাদার মতো করে নেট অথবা কাপড়ের উপর হাতে ছোঁয়ায় লাইন করে বড়ি বসানো হয়। বড়ি বসানো শেষ হলে বাড়ির উঠানের মাচায়, ঘরের চালে বা ঘরের ছাদে রোদের তাপে শুকানো হয়। রোদ হলে সপ্তাহ খানেক পর কুমড়োর বড়ি রান্না করে খাওয়ার উপযোগী হয়।

গৃহবধু কুলসুম বেগম বলেন, রোঁদ ভাল না হলে কুমড়োবড়ি শুকানো যায় না। এতে করে বড়িতে ছাতা পরে এবং গন্ধ হয়ে যায়। ফলে আর খাওয়া যায় না। এজন্য কুমড়োর বড়ি তৈরীর জন্য সঠিক সময় বেছে নিতে হবে।

chuadanga (maskolai bori) news pictur-2019 PBA

বর্তমান বাজারে একটি চাল কুমড়া প্রতি পিচ ২শ টাকা এবং প্রতি কেজি মাসকলাই কিনতে হচ্ছে ১০০ টাকা। কুমড়োবড়ি বনিয়ে স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি বড়ি ২৫০ টাকা থেকে ৩শ টাকা টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গ্রামের অনেক গৃহবধু বাড়তি আয়ে সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে শীত মৌসুমে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বড়ি তৈরি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে। অনেকে আবার এটিকে মৌসুমী ব্যবস্যা হিসেবেও বেছে নিয়েছে।

ডিঙ্গেদহ বাজারের সেলিম বলেন শীতের এই মৌসুমে তিনি গ্রামের গৃহবধুদের কাছে থেকে কুমড়োবড়ি কিনে শহরের বাড়ি বাড়ি সাইকেল করে বিক্রি করেন। মৌসুমী এই ব্যবস্যায় তার ভাল লাভ হয়।
গ্রামের গৃহবধুরা অনেকেই মনে করে বাড়িতে বসেই সংসারের কাজের ফাঁকে ও অবসর সময়ে কুমড়োর বড়ি বিক্রির একটু বাড়তি আয় করে অভাবের সংসারে ক্ষনিকের হাঁসি ফুটায়।

পিবিএ/এসি/এসআই

আরও পড়ুন...