চৌদ্দগ্রামে কিশোর গ্যাং লিডার ও মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতারের দাবি

মোঃ এমদাদ উল্যাহ, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা): কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কিশোর গ্যাং লিডার ও স্থানীয় মাদক আবু বক্করকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছে গ্রামবাসী।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের বশকরা গ্রামে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে গ্রামবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, কিশোর গ্যাং লিডার আবু বক্করের হাতে আহত আনোয়ার হোসেন বাবু।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি একজন প্রবাসী। দীর্ঘদিন যাবৎ প্রবাসে (কাতার) থেকে ব্যবসা-বানিজ্য করি। কিছুদিন পূর্বে ছুটিতে দেশে এসেছি। এরমধ্যে গত ২৫ নভেম্বর বিকালে আমার নিজ গ্রামের চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী আবু বক্কর তাদের একই বাড়ীর তার আপন ফুফাতো ভাই মৃত আতাউর রহমানের বিধবা স্ত্রী মোসা: সালমা আক্তার লাকিকে কু-প্রস্তাব দেয় দিয়ে প্রতিনিয়ত মানসিকভাবে হয়রানি করে আসছে বলে অভিযোগ শুনতে পাই। ঐদিন রাতেই আবু বক্কর তার ফুফাতো ভাইয়ের বউ সালমা আক্তার লাকিকে তুচ্ছ ঘটনার অজুহাতে বেধড়ক মারধর করে। পরে বিষয়টি নিয়ে বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী গৃহবধূ সালমা আক্তার লাকি সমাজের গণ্যমান্য লোকজনকে অবহিত করলে তাদের সিদ্ধান্তে পরদিন ২৬ নভেম্বর বিকালে গ্রামে একটি শালিস-বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, শালিস-বৈঠক চলাকালে আবু বক্কর গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে কঠাক্ষ করে অপমানমূলক বিভিন্ন কথাবার্তা বলতে থাকে। একপর্যায়ে আমি বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করি। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে আবু বক্কর হঠাৎ করে নিজ কোমরে লুকিয়ে রাখা একটি চাইনিজ কুড়াল বের করে আমার মাথার মধ্যিভাগে কোপ মারে। কুড়ালের কোপে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে গেলে আমার আপন ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন বাবু এগিয়ে আসে। এ সময় ক্ষিপ্ত আবু বক্কর চাইনিজ কুড়াল দিয়ে তাকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। একই সময় আবু বক্করের মা এলাকার চিহিৃত মাদক সম্রাজ্ঞী মনোয়ারা বেগম ও তার মেয়ে পাখি আক্তার এবং মেয়ে জামাতা আব্দুল হান্নানসহ কিশোর গ্যাং সদস্যরা মিলে উপস্থিত সবাই মারধর শুরু করে। এতে আমরা দুই ভাইসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হই। পরে শালিসে উপস্থিত অন্যান্য লোকজন এগিয়ে আসলে আবু বক্কর ও তার মা-বোনসহ হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, গত ১ ডিসেম্বর চৌদ্দগ্রাম থানায় চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী, স্থানীয় কিশোর গ্যাং লিডার ও সন্ত্রাসী আবু বক্করকে প্রধান আসামী করে, তার মা এলাকার চিহিৃত মাদক সম্রাজ্ঞী মনোয়ার বেগম ও মেয়ে পাখি ও মেয়ে জামাতা আব্দুল হানানসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করি। মামলা করার পর থেকে সন্ত্রাসী আবু বক্কর আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি অব্যাহত রাখায় নিজ বাড়ীতে এখনো আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এর আগ থেকে আবু বক্কর ও তার মা মনোয়ারা বেগম দীর্ঘদিন যাবৎ প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা করে আসছে। মাদকের এ ভয়াল থাবায় এলাকার যুব সমাজ ধ্বংসের পথে। ইতিমধ্যে আবু বক্কর, তার মা মনোয়ারা বেগমসহ তার পরিবারের আরো কয়েকজন সদস্য একাধিক মাদক মামলায় বেশ কয়েকবার জেল খেটেছেন। তাদের বিভিন্ন অত্যাচারে গ্রামবাসী আজ অতিষ্ঠ। বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে মাদক সম্রাজ্ঞী মনোয়ারা বেগম, তার সন্ত্রাসী ছেলে আবু বকরসহ অপরাপর আসামীদেরকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা আজ সময়ের অন্যতম দাবি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অবিলম্বে উল্লেখিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য জোরালো দাবি জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলন শেষে এলাকার সর্বস্তরের লোকজন তাদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে।

আরও পড়ুন...