চৌদ্দগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় মামলা

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে আবদুল হাই কানুর পাঠানো লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেছে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ।

২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, জুতার মালা পরানোয় ১০০ কোটি টাকার মানহানি এবং মারধরের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ১০ জনের নাম উল্লেখ ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আক্তার উজ জামান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজ দেখে পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলায় আটক পাঁচজনের মধ্যে একজনকে আসামি করা হয়েছে। আর দুজনের নাম সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আক্তার উজ জামান বলেন, পুলিশ যে পাঁচজনকে আটক করেছে, তাদের মধ্যে কুলিয়ারা গ্রামের ইসমাইল হোসেন মজুমদারকে (৪৩) মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি করেছেন। আর বাকিদের মধ্যে দুজনকে তিনি সাক্ষী মেনেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আটকদের মধ্যে কাকে কাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধার ছেলে ও উপজেলার বাতিসা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া জানান, মঙ্গলবার ফেনী আদালতের সামনে হামলার চেষ্টা করে তাদের কাছ থেকে এজাহারের অনুলিপি ছিনিয়ে নেওয়ার পর চৌদ্দগ্রামের ওসি তাকে বলেছিলেন, প্রয়োজনে হোয়াটসঅ্যাপে এজাহার পাঠাতে। তিনি মঙ্গলবার রাতে হোয়াটসঅ্যাপে এজাহার পাঠিয়েছেন। বুধবার চৌদ্দগ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিনিধিদল ও স্বজনদের মাধ্যমে মামলার অনুলিপি থানায় পাঠানো হয়।

কাউকে অযথা হয়রানি করতে চান না উল্লেখ করে গোলাম মোস্তফা জানান, যারা ঘটনায় জড়িত এবং যাদের তারা চেনেন, তাদের নামই মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ যে পাঁচজনকে আটকের কথা বলেছে, তাদের মধ্যে জামায়াত সমর্থক ইসমাইল হোসেন লাঞ্ছনাকারীদের সঙ্গে ছিলেন। জামাল উদ্দিন মজুমদার ও ইলিয়াছ ভূইয়া ঘটনাস্থলে ছিলেন, তবে তারা কোনো প্রকার অত্যাচার করেননি। এ জন্য মামলায় তাদের সাক্ষী করা হয়েছে। বাকি দুজনের বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। তারা যদি ঘটনায় জড়িত থাকেন, তাহলে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই বলেন, সেদিন তারা আমাকে মারধর করেছে কিন্তু সেগুলোর ভিডিও করেনি। শুধু জুতার মালা পরানোর সময় ভিডিও করেছে। আমি এই অপমানের বিচার চাই। মূল যারা ঘটনা ঘটিয়েছে (বহিষ্কৃত জামায়াত সমর্থক আবুল হাশেম ও অহিদুর রহমান) তারা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।

ওসি এ টি এম আক্তার উজ জামান বলেন, আবুল হাশেম ও অহিদুর রহমানসহ অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আরও পড়ুন...