ছাগল যে ঘরটিতে থাকে তাতে একদিন আগুন লেগেছিল।সেখানে তার সদ্য গর্ভজাত দুটি বাচ্চাও ছিল।কিন্তু নিমিষেই সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেল।তাই ছাগল সারাদিন খুব ভ্যা ভ্যা করে কাদলো,অনেক ছোটাছুটি করলো,রাতেও প্রায় নির্ঘুম আর কান্নাকাটি,শেষে ক্লান্ত হয়ে ঘুম।পরের দিন সকালে পেটে প্রচন্ড ক্ষিদে অনুভব করলো।তাই দু – একবার কান্নাকাটি করেই ডানে-বায়ে তাকালো ঘাস বা কচি পাতা পাওয়া যায় কিনা? পাওয়া মাত্রই খাওয়া শুরু।ব্যাস এরপর ভোজন রত অবস্থায়ই দু চার বার ভ্যা ভ্যা।পরের দিন থেকে আবার আগের নিয়মে খাওয়া।এছাড়া আর কি করার আছে? তার যে স্মৃতিশক্তি কম!!
ইদানিং বাংলাদেশে প্রেমের টানে সুদুর বিদেশ থেকে সুন্দরী যুবক-যুবতী এসে অজপাড়া গায়ে সংসার বাধছে!! এসব কি সবই স্বাভাবিক ঘটনা? বাংলাদেশি যুবক যদি এতই লোভনীয় হয়,তাহলে বিদেশে অবস্থানরত লক্ষ লক্ষ যুবক শ্রমিকদের কাছে কতগুলো সুন্দরী অফার করেছে? কতজন বিয়ে করে এদেশে বউ এনেছে?
সচেতন ইতিহাসের পাঠক একমত হবেন যে – কোন ভুখন্ড থেকে মুসলিম জাতি সত্বাকে সমুলে উচ্ছেদ করতে কত প্রকার আগ্রাসন চালানো হয়?
ও-ই সমস্ত মেয়ে-পুরুষ কি সত্যিকারেই প্রেম করে?
কখনোই না।
তারা প্রত্যেকেই দীর্ঘদিনের ট্রেইনিংপ্রাপ্ত হয়ে কোন বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্তে বাংলাদেশে আসিতেছে।দেশের প্রত্যন্ত অজ-পাড়াগায়ে কোন লোভী বেকুবের সাথে ঘর সংসার করছে।বাচ্চা জন্ম দিচ্ছে। সবাইকে ভালবেসে আপন করে মাথা ঘোল করে দিচ্ছে। এর মধ্যেই বিশেষ সময়ে বিশেষ পদ্ধতিতে তার নির্ধারিত চাকুরী বা মিশনের দায়িত্ব পালন করছে।বলা বাহুল্য ও-ই বিশেষ কাজটি এই দেশের জনগণের জন্য অবশ্যই কল্যাণকর নয়।
উল্লেখ্য যে দেশের এলিট শ্রেনীর মাথা তারা অনেক আগেই কিনে ফেলেছে।ইয়াসির আরাফাতের সাথে সুহার প্রেম দিয়ে শুরু করে এখন দেশে এ প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত ভিন্ন ভিন্ন দেশ থেকে এসে ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে অবস্থান নিচ্ছে।
সি *আই *এ,মোসা*দ, এফ /বি /আই, ইরগুন *জাই *লিউমি,কু /ক্লাক্স /ক্লান ইত্যাদি দুধর্ষ ও ভয়ংকর গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এভাবেই তাদের টার্গেটকৃত জনপদে রন্ধ্রে রন্ধ্রে জাল পেতে রাখে।তারপর সবকিছু ঠিকঠাক মতো মিলে গেলে নিমিষেই ইতিহাসের পট পরিবর্তন।যেমন কিছুদিন আগেই ঘটে গেল লিবিয়ায়।মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারী লিবিয়া সফরে এলেন। কিছুক্ষণ থেকে চলে গেলেন।তারপরই গাদ্দাফী ফুটুশ!!
সাথে সাথেই আবার হিলারী এলেন,বিজয়ের হাসি হেসে বাণী দিলেন আর লিবিয়ার সবকিছু শুষে ছোবড়া করার সকল ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করলেন।হিলারীর জন্য মসৃন মাঠটি কি একদিনেই তৈরী হয়েছিল?
মুসলিম উম্মাহর জন্য এই ফাদগুলো আরো ভয়ংকর।নিষ্ঠাবান মুসলমানদের একতা,চরিত্র,নেতৃত্ব,মেধা ও সম্পদকে ছিন্ন-ভিন্ন করতে কোটি কোটি ডলার খরচ করছে জায়নবাদি গোষ্ঠী।শুধুমাত্র অষ্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত ইহুদী ব্যবসায়ী দের ওশর থেকেই দৈনিক আদায় হয় হাজার হাজার ডলার।তা দিয়ে ফিলিস্তিন সহ সারা বিশ্বের মুসলমানদের চরিত্র হনন,মাথা ক্রয়,সমাজে গ্রুপিং,অস্থিরতা সৃষ্টির মাধ্যমে ইহুদিদের স্বার্থসিদ্ধির মাঠ তৈরী করা হয়।ইহুদীগণ তাদের ধর্মের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার স্বার্থেই উপার্জন থেকে অকাতরে এই অর্থ ব্যয় করে।অথচ আমাদের সমাজে লোকেরা ওশর আদায় করতেই চায় না।দু-একজন দিলেও তা দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে ব্যয় না করে পেশাদার ভিক্ষুক কিংবা আত্মমর্যাদা বিহিন মতলববাজ মুফতি -শায়খ গড়ার পিছনে ব্যয় করে।
সাবার পুত্র আব্দুল্লাহ মুসলমানদের সাথে সম্মুখ সমরে না গিয়ে বরং নিজে মুসলমানের বেশ ধরে কুরআন অধ্যয়ন করে। সে অনুযায়ী নিজেদেরকে সুসংহত ও সমৃদ্ধি অর্জন করে অন্তর্ঘাতের মাধ্যমে হজরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর খেলাফত সময়কে চরম অস্থির করে তোলে,ক্রমাগত ষড়যন্ত্রে হজরত আলি(রাঃ),ইমাম হাসান হয়ে কারবালায় তারা ষড়যন্ত্রের ষোলকলা পুর্ণ করে।
ইবনে সাবার সেই পদ্ধতি অনুসরণ করেই উসমানী খিলাফতেরও সমাপ্তি টানা হয়েছিল।(দিরিলিস এরতুগুল দেখুন)
বর্তমান প্রজন্ম এসব কেন চিন্তা করবে? তারা জানে মধ্য যুগের ইতিহাস তো অন্ধকার,তারমানে তখনকার মুসলমানেরা শুধু খেতো আর ঘুমাতো।তাদের হঠানোর পরেই তো জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা শুরু হল, দুনিয়া উন্নত হল সুতরাং অথর্ব বুলি সবস্ব মুসলমানদের ইতিহাস পড়ে সময় নষ্ট করার দরকার নেই।
আর সেই ইতিহাস পাবেই কোথায়? সিরিজ বর্ণনার তুখোড় লিখক আবুল আসাদগং পচে জেলখানায় আর তাদের প্রিন্টিং প্রেসে ঝুলছে তালা।
সুতরাং রামবাবু আর হেনরী-ডেভিড দের ডায়েরী ছাড়া ইতিহাস পাবো কোথায়???
লেখক: মোঃ তাহমিদুর রহমান, কলামিষ্ট।