ছাতকের ঘটনায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলবে

পিবিএ,সিলেট: সুুনামগঞ্জের ছাতকে বন্ধুকযুদ্ধের ঘটনায় চিকিৎসাধীন ছাতক থানার ওসি সহ ৭ পুলিশ সদস্যকে দেখতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার। বুধবার রাতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল করেজ হাসপাতালে চিকিসাধীন পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান গণমাধ্যমকে বলেন, ছাতকের সংঘর্ষ , পুলিশের উপর হামলা ও ভ্যান চালক হত্যাকান্ডের ঘটনায় নেপথ্যে কিংবা প্রকাশ্যে যে বা যারাই জড়িত থাকুক এমনকি তারা যতবড় প্রভাশালী হউক না কেন তাদের কাউকেই উপর মহলের তদবিরে ছাড় না দিতে জেলা পুলিশের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছি।

ছাতকের ঘটনায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলবে
আহত ৭ পুলিশ সদস্যকে দেখতে হাসপাতালে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার

তিনি আরো বলেন ‘জনগণের শান্তি ভঙ্গকারি কেউ জনগণের জন্য কোন দিন কোন উপকারে আসেনা, তারা রাষ্ট্রের জন্য ভয়ংকর, আমরা শান্তি চাই এবং কোন অপরাধিকে ছাড় দেইনা, তারা যত বড় ক্ষমতাবানই হউক না কেন আইন ভঙ্গ করে সন্ত্রাসীকর্মকান্ড চালানোর জন্য তাদের আইনি শান্তি পেতে হবে’।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাতে শিল্পনগরী ছাতকের সুরমা নদীতে নৌ পথে টোল আদায়ের আড়ালে চাঁদাবাজির দ্বন্ধে ছাতক পৌর মেয়র জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক আবুল কালাম চৌধুরী ওরফে কালাম চৌধুরী ও তার সহোদর জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শামীম আহমদ চৌধুরীর সমর্থকদের বন্ধুকযুদ্ধে শাহাবউদ্দিন নামের এক নিরীহ ভ্যান চালক নিহত হন।

এছাড়াও পুলিশ সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে বন্দুকের গুলি ইট পাটকেলের আঘাতে ছাতক থানার ওসি গোলাম মোস্তফা, আরো ৬ পুলিশ সদস্য সহ ৫০ ব্যাক্তি জখম হন। পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ আনতে ২ঘন্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালায় পুলিশের কয়েকটি টিম। ১৬৩ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ৫২ রাউন্ড গ্যাস গানের গুলি বর্ষণ করে পুলিশ।

এরপর রাতভর পুলিশের এই অভিযানে কোনঠাসা হয়ে পড়লে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া ক্ষমতাসীন দলের দুই সহোদরের গ্রুপের ২৮জনকে গ্রেফতার করা হয়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের উপর হামলার ঘটনার পরদিন বুধবার থানায় ৯৫ জনের নাম উল্ল্যেখ করে পুলিশ এ্যাসল্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মেয়রের বড়ভাই জামাল আহমদ চৌধুরী, কামাল চৌধুরী, চাচা ইলিয়াছ মিয়া চৌধুরীসহ পল্টু দাস, দেলোয়ার হোসেন, সাদমান মাহমুদ সানি, রহিম আলী, গিয়াস উদ্দিন, কামরুল ইসলাম শাওন, আশরাফ রাজা চৌধুরী রয়েছে।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, ঘটনায় জড়িতদের বৈধ অস্ত্র অবৈধভাবে ব্যবহার করার দায়ে সকল লাইসেন্স বাতিল করা হবে। অবৈধ কোন অস্ত্র থাকলেও সেগুলো উদ্ধারে আমাদের অভিযান চলবে। জনগনের শান্তি নষ্ট করে কেউ ক্ষমতার দম্ভ দেখিয়ে চলতে পারবেনা,আইন সবার জন্য সমান।

এই অভিযানে পরিস্থিতি শান্ত করতে আমাদের ৯জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছিলেন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরলেও ৭ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, পুলিশ এ্যাসল্ট মামলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন ইতিমধ্যে ২৮ জনকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছাতকে কোন পক্ষের গুলিতে ভ্যান চালক হত্যার শিকার হলেন সেই রহস্যরও উদঘাটন করা হবে।

পিবিএ/এইচএসএ/আরআই

আরও পড়ুন...