ছাত্রলীগ কর্মীর হাতে মারধরের শিকার রাবি শিক্ষার্থী বিশ্বজিৎ

মনির হোসেন মাহিন,রাবি: রুমে গান বন্ধ করাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (০৩ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাবিবুর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্বজিৎ হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগের কর্মী হলেন,বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (১ মার্চ) রাত ১১ টার পর হবিবুর রহমান হলে (২৫৩ নং) রুমের মধ্যে উচ্চ ভলিউম দিয়ে গান বাজাতে থাকেন সাব্বির। একই রুমে থাকা বিশ্বজিৎ তাকে গান বন্ধ করতে বললে অভিযুক্ত সাব্বির তার উপর রাগান্বিত হয়ে ছুটে আসে। তিনি বলেন রাত ১২টার আগে গান বন্ধ হবে না। একপর্যায়ে ধাক্কা দিয়ে গলা চেপে ধরে। এতে তার গলায় নখের আঁচড় লেগে রক্ত ঝরতে থাকে।

ভুক্তভোগী বিশ্বজিৎ বলেন, গত (মঙ্গলবার) রাত ১১ টার পর অভিযুক্ত সাব্বির রুমের মধ্যে উচ্চ ভলিউম দিয়ে গান শুনছিলেন। আমি গানটি বন্ধ করতে বললে আমার দিকে রাগান্বিত হয়ে ছুটে আসে এবং আমাকে ধাক্কা দিয়ে গলা টিপে ধরেন। এতে আমার গলায় নখের দাগ বসে রক্ত বের হতে থাকে। পরে আজ (বৃহস্পতিবার) জুতা পরে রুমে ঢুকে পরে। এতে আমি আর আমার অন্য রুমমেট নিষেধ করলে আবারও মারার জন্য ছুটে আসে।

অভিযুক্ত সাব্বির আহমেদ জানান, সেদিন রাতে রুমে কেউ ছিল না। আমি গান বাজিয়ে প্র্যাকটিক্যাল খাতায় লিখছিলাম। এমন সময় বিশ্বজিৎ দরজা জোরে শব্দ করে খুলে। বেডে বসার কিছুক্ষণ পরেই গান বন্ধ করতে বলে। আমি যেহেতু সিনিয়র তাই আমি রাগের সাথেই বললাম ‘ না আমি রাত বারোটার আগে গান বন্ধ করব না’।

আঘাতের ব্যাপারে জানতে চাইলে সাব্বির বলেন, ঐ ঘটনার পর ওর দুজন বন্ধু এসে উদ্ধত আচরণ করে। আমার তখন হাত কাপছিল। পরে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলে আমি বিশ্বজিতকে ধাক্কা দিই। তখন আমার নখ একটু বড় থাকায় গলায় আঁচড় লেগে যায়।

ঘটনাস্থলে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরা বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্বজিৎ এর কিছু বন্ধু আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে তার রুমে গিয়ে অভিযুক্ত সাব্বিরের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে সে উত্তেজিত সে বলতে থাকে, আমি মিনহাজ ভাইয়ের সাথে রাজনীতি করি। সাব্বির তার বন্ধুদের কাছে কল দিয়ে ৮-১০ জন লোক নিয়ে হলে আসতে বলে ও হলগেটে তালা দিতে বলে।

বিষয়টি নিয়ে হবিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগ নেতা মিনহাজ বলেন, ‘সাব্বির আমার সাথে রাজনীতি করে এটা মিথ্যা। সে কোন রাজনীতি সাথে জড়িত না। আমি একজন নেতা হিসেবে সমাধান করতে এসেছি’।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হাবিবুর রহমান হল সভাপতি মমিনুল বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনাটি শুনেছি এবং উভয়েকে নিয়ে সমস্যাটি সমাধান করে দিয়েছি। আশাকরি এটা নিয়ে আর কোনো ঝামেলা হবে না’।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাবিবুর রহমান হল প্রাধ্যক্ষ জাহিদুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি, তাদের সাথে আমার কথা হয়েছে। বিষয়টি আমি সমাধানের চেষ্টা করছি। আশাকরি সমাধান হয়ে যাবে’।

 

আরও পড়ুন...