পিবিএ,কক্সবাজার: ছাত্রলীগ নেতা আনাছ ইব্রাহিম হত্যার তিনদিন পার হলেও এখনো মুল কিলারকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। রিয়াজ নামের এক আসামীকে গ্রেফতার করলেও অন্য আসামীদের ধরতে তেমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। তবে এখনো ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছেন আনাছের আসল খুনিরা। এতে ক্ষোভ বাড়ছে আনাছের পরিবারের মাঝে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৫মে রাত ৯টার দিকে চকরিয়া পৌরশহরের চিরিঙ্গা ওয়ের্ষ্টান প্লাজায় ছাত্রলীগ নেতা আনাছ ইব্রাহীমকে ক্ষুর দিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এঘটনায় আনাছের পিতা হাফেজ নেছার আহমদ বাদী হয়ে ৬জনের নাম উল্লেখ করে ১২জনের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে রিয়াজ নামের এক যুবককে গ্রেফতার করলেও এখনো আসল খুনিদের গ্রেফতার করতে পারেনি। খুনিদের ধরতে পুলিশের একের পর এক অভিযান চালালেও পরিবারের অভিযোগ, আসল খুনিদের গ্রেফতারে কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
এদিকে কী কারণে আনাছকে হত্যা করা হয়েছে তা এখনো সঠিক রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। আনাছের হত্যাকান্ড নিয়ে নানা তথ্য পাওয়া গেলেও আসল রহস্যের জট খুলেনি। কেউ বলছে প্রেমঘটিত বিষয়, কেউ বলছে মোবাইল চুরির ঘটনা নিয়ে এ হত্যাকান্ড হতে পারে।
অপরদিকে জনসম্মুখে ছাত্রলীগ নেতা আনাছকে হত্যা করে খুনিরা কিভাবে পালিয়ে গেল তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
ছাত্রলীগ নেতা আনাছ হত্যার বিচারে কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না উপজেলা ছাত্রলীগ বা পৌর ছাত্রলীগের মধ্যে। হত্যার দিন ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী খুনিদের গ্রেফতারে মিছিল মিটিং করলেও গত তিন ধরে নীরব রয়েছেন। এতে সাধারণ কর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
একাধিক ছাত্রলীগ নেতা জানান, গত ২৮ এপ্রিল ছাত্রলীগ নেতা তারেকুল ইসলাম রাহিতকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় পুরো কক্সবাজার জেলা তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়েছিলো। এতে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছিলো। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরহান মো: রুবেল সহ ১০জন নেতাকর্মীকে বহিস্কার করে। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতা আনাছ হত্যাকান্ড নিয়ে তার সহকর্মীদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।
এব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো: মারুফ পিবিএ’কে বলেন, আনাছ হত্যার বিচার নিয়ে আমরা তৎপর রয়েছি। তার পরিবারের সাথে সাক্ষাত করে খুনিদের গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রলীগ মাঠে থাকবে।
অন্যদিকে পুলিশ বলছে, আনাছ হত্যার সাথে জড়িত খুনিদের গ্রেফতারে পুলিশের কয়েকটি টিম গঠন করে অভিযান চালানো হচ্ছে। খুনিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। তবে খুনিরা ছটকে পড়ায় বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানান চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, খুনিদের ধরতে রাতদিন অভিযান চালানো হচ্ছে। এখানে ছাড় দেওয়া হবে না। আসল খুনিরা যাতে পার না পায় সেভাবে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাকির হোসেন পিবিএ’কে বলেন, মামলার যথেষ্ঠ অগ্রগতি হয়েছে। আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আসামীরা কে কোথায় আছে, তা প্রায় নিশ্চিত হয়েছি। যে কোন মুহুর্তে আসামীদের গ্রেফতার করার কথা জানান তিনি।
পিবিএ/এমএইচ/হক
