জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মীমের অভিযোগের বিষয়ে যৌণ হয়রানির অভিযোগ কাল্পনিক বলে মন্তব্য ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন। একই বিভাগের চেয়ারম্যান জোনায়েদ হালিম দাবি করেন, মিম দ্বিতীয় ও সপ্তম সেমিস্টারের ক্লাস ও এসাইনমেন্ট জমা দেন নি।
বুধবার ( ২০ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের তারা এ কথা বলেন।
আবু সাহেদ ইমন বলেন, ২০১৯ সালে ঘটনার কথা উল্লেখ করে ২০২২ সালে এসে কাল্পনিক একটি অভিযোগ দেয়। এই বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্ল্যাকার্ড নিয়ে আন্দোলন হয়েছে। এমন কি ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতার ফলে দুই বছরেও ফলাফল পাওয়া যায় নি। এমন কি এই ঘটনায় মিথ্যা তদন্ত রিপোর্টের ঘটনায় উচ্চ আদালতে যাওয়া ও পারিপাশ্বিক অবস্থার বিষয়ে ডিবি আমাদের ডেকেছে। এই বিষয়ে তারা যা জানতে চেয়েছে আমরা সেই তথ্য দিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিম বলেন, এখানে দুই ধরনের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে ডিবির হারুন সাহেব আমাদের সঙ্গে কথা বললেন। যৌণ হয়রানির বিষয়টি আদালতে কার্যক্রম চলছে। তাই এটা নিয়ে আমরা কথা বলতে পারছি না।
ভাইভা পরীক্ষায় জিরো পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজাল্টের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার একটা নিয়ম আছে। পরীক্ষকরা গোপন একটি খামে সিলগালা করে নম্বর পত্র পাঠান। ও (ভুক্তভোগী ছাত্রী) ঠিকমতো ক্লাসে আসত না। দ্বিতীয় সেমিস্টারের একটি কোর্সে এসাইনমন্টে ও উপস্থিতি মিলিয়ে ৪০ মার্ক থাকে। সে এইটার কোনো কার্যক্রমে যোগ দেয় নি।
ফলে সে শুন্য পেয়েছে। সপ্তম সেমিস্টারেও চারটি এসাইনমেন্ট জমা দেয় নি। ফলে সব মিলিয়ে ২৩ পেয়েছিল। যেহেতু ৪০ মার্কে পাস তাই রেজাল্ট শীটে শুন্য এসেছে।
সব কিছু মিলিয়ে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, ডিবিতে ছাত্রীর অভিযোগের বিষয়ে তারা আমাদের ডেকেছে ক্রস চেক করার জন্য। তারা যা যা জানতে চেয়েছে আমরা তথ্য দিয়েছি।
কাজী ফারজানা মীম উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, আমি মিডিয়া বক্তব্য দেওয়ার কারণ অভিযুক্ত শিক্ষকরা নানা মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছিলেন। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলাম। এটা নিয়ে ডিবিতে অভিযোগ দিয়েছিলাম। আজ তারা এই বিষয়ে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে ডেকেছিল। ডিবির প্রধান তাদের কে বলে দিয়েছে যেনো আমাকে কোনো ভাবে হুমকি না দেন।
পরীক্ষায় শুন্য পাওয়ার বিষয়ে মিম বলেন, তারা আমাকে শুন্য দেওয়ার বিষয়ে বানোয়াট কথা বলেছে। আমি পরীক্ষা দিয়েছি। কিন্তু তারা আমাকে অনুপস্থিত দেখিয়েছেন। এই ঘটনা আমার যৌণ হয়রানির অভিযোগেও উল্লেখ করেছি।
দুই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, দুই পক্ষকে আমরা ডেকেছি। তাদের আমরা ডেকেছি। ভুক্তভোগী মিম আমাদের কাছে আবদার করেছে সে যেনো স্বাধীন ভাবে চলাচল করতে পারে। আর যেনো কেউ ডিস্ট্রাব না করে। আমরা বিষয়টি শিক্ষকদের বলেছি। তারা বলেছে, আমরা কোনো ডিস্ট্রার্ব করবো না।
তিনি আরও বলেন, এর পরেও যদি মিমকে কেউ ডিস্ট্রার্ব করে। তাহলে মিমকে বলা হয়েছে আমাদের ডিবির দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাকে যেনো জানানো হয়। তারা পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেবে।
যৌণ হয়রানির বিষয়ে ডিবি প্রধান বলেন, এটি আমরা তদন্ত করছি। এটার তদন্ত শেষ হয় নি। পরবর্তীতে জানাতে পারবো।