পিবিএ,ঢাকা: উগ্র জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে এলিট ফোর্স র্যাব এর প্রথম থেকেই কঠোর অবস্থানে। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে র্যাব সহ আইন শৃংখলা বাহিনীর অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ইউনিটের তৎপরতায় জঙ্গি গোষ্ঠীর অপতৎপরতা লোপ পেয়েছে। ২০০৪ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গী বিরোধী সকল অভিযানে র্যাব নাশকতা সৃষ্টিকারী জঙ্গী সংগঠন সমূহের শীর্ষ নেতা, এহসার সদস্য, সুইসাইড স্কোয়াডের সদস্য সহ বিভিন্ন স্থানে জঙ্গিদের গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে বিচার পরবর্তীতে অনেকেই বিভিন্ন মেয়াদে দন্ড ভোগ করছে, বেশ কিছু মামলা বিচারধীন। নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলামের বেশ কিছু সদস্য আত্মগোপণে থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
গত ৩১/৮/২০১৯ খৃঃ সকাল অনুমান ৬ঃ৩০ ঘটিকায় ডিএমপি ঢাকার কোতয়ালী থানাধীন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিলানস্থ ২নং গেইটের টিকেট কাউন্টারের সামনে থেকে ভোলা হতে ছেড়ে আসা লঞ্চ “এম ভি তাসরিফ” থেকে জঙ্গী সদস্য আবু সুফিয়ান ইমু (২৫) এবং ২। সহিফুল ইসলাম সাইফ নামের ২ জঙ্গিকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-২। সে সময় বেশ কিছু জঙ্গি লঞ্চ থেকে লাফিয়ে নদী পার হয়ে পালিয়ে যায়। লঞ্চে করে বরিশাল থেকে আসা জঙ্গিরা ৩১/০৮/২০১৯ খৃঃ রাত ৯ঃ৩০ ঘটিকা বা তার কিছু আগে পরে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডস্থ সায়েন্স ল্যাবরেটরী মোড়ে কর্তব্যরত পুলিশের উপর বোমা হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আসামীদের সহযোগী মর্মে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। ঘটনার দিন ধৃত ২ জঙ্গির কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় তারা ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ কে সামনে রেখে নাশকতার পরিকল্পনা আঁটা ও টার্গেট চুড়ান্তের জন্য ঢাকা এসেছিল। এ বিষয়ে ডিএমপি ঢাকার কোতয়ালী থানার মামলা নং-১, তারিখঃ ০১/০৯/১৯ খৃঃ, ধারাঃ-সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ এর ৬/৮/৯/১০/১৩ এ মামলা রুজু হয়।
মামলার ঘটনায় সূত্র ধরে র্যাব-২ ব্যাপক তদন্ত করে ৩০/০৪/২০২০ খৃঃ গাজীপুর জেলার কাশিমপুর মোল্লা পাড়া হতে আসামী ১। মোঃ ইয়াকুব আলী সাজিদ (৩৩), পিতা-মৃত ইদ্রিস আলী, ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন টেংগুরী পুকুরপাড় হতে ২। শাহপরান @ আব্দুল্লাহ সেনা (২৬), পিতা-সুজাত কবির ও ৩। মোঃ শহিদুল ইসলাম @ তাকওয়া (৪৮), পিতা-মৃত ওয়াহেদ আলীকে গ্রেফতার করে আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা মামলার ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করে এবং মামলার অন্যতম পলাতক আসামীর নাম ঠিকানা প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০২/০৫/২০২০ খৃঃ ২১.৩০ ঘটিকায় গাজীপুর জেলার কাশিমপুর থানাধীন দক্ষিণ পানিশাইল হতে আনসার আল ইসলামের শীর্ষ জঙ্গি মোঃ সহিদুল ইসলাম মোবাশ্বের (৩৮), পিতা-মোঃ ইনছান আলীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী সহিদুলকে ০৩ মে, ২০২০ খৃঃ বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি মামলার ঘটনার মুল পরিকল্পনাকারী বলে স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। বিজ্ঞ আদালত সকল আসামীকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
অভিযানকালে আসামীদের কাছ থেকে মোবাইল, ল্যাপটপ, বিভিন্ন শিরোনামে উগ্র জঙ্গিবাদী বই, জঙ্গিবাদী ভিডিও, বিভিন্ন শিরোনামে ১২ সেট ধর্মীয় উগ্রবাদী বই ও বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলাম এর সক্রিয় সদস্য হিসেবে বিভিন্ন দিন ও তারিখে দৈনন্দিন প্যারেড এ হাজিরা ও প্রশিক্ষণ শীট, মিটিং এর এজেন্ডা, মোবাইল, ল্যাপটপসহ অন্যান্য ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। আসামীদের কাছ থেকে জঙ্গিবাদের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ততার অকাট্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। আসামীগণ টর ব্রাউজার, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ ও সোশ্যাল মিডিয়ার অন্যান্য মাধ্যমে জঙ্গিবাদের বিস্থার ঘটাচ্ছিল। তারা মাঝে মধ্যে নিরাপদ স্থানে সভা আহবান করে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় বজায় ও চাঁদা আদায় করে বড় ধরণের নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো।
ধৃত আসামীরা উক্তরূপ কার্য দ্বারা ধর্ম ভীরু সহজ সরল ও শান্তিপ্রিয় যুবক/যুবতীদেরকে টার্গেট করে উগ্রবাদী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত সহ নাশকতা সৃষ্টিতে উদ্ভুদ্ধ করে দেশের আইন শৃঙ্খলা বিনষ্ট, জনসংহতি, নিরাপত্তা ও জনমনে ত্রাস সৃষ্টির প্রয়াস চালানো সহ টার্গেট কিলিং এ অংশ নেয়ার পরিকল্পনা আঁটছিলো।
উক্ত ঘটনায় জড়িত জঙ্গী সংগঠনের পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে র্যাব এর অভিযান অব্যাহত আছে।
পিবিএ/প্রেস বিজ্ঞপ্তি