‘জনগণের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধিত্ব ছাড়া রাষ্ট্রের সংস্কার সম্ভব নয়’

যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধি দেশ পরিচালনার দায়িত্ব না পাবেন ততক্ষণ পর্যন্ত কোনোভাবেই এই সংস্কার পূর্ণ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে আমরা বিএনপি পরিবার কর্তৃক আয়োজিত ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে আহত বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ফটোসাংবাদিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

জনগণের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধি ছাড়া কেন সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন সম্ভব নয় এর ব্যাখ্যা দিয়ে তারেক রহমান বলেন, যাদের সঙ্গে জনগণের সরাসরি সম্পৃক্ততা আছে তারাই কেবল জনগণের কথা তুলে ধরতে পারবেন। তারাই কেবল আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সামগ্রিকভাবে দেশকে সামনের দিকে পরিচালনা করতে সক্ষম হবেন। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে রাজনৈতিক অধিকার আগে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক স্বাধীনতা না পেলে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা যাবে না৷ রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে হলে ভোটের অধিকার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।

যারা আন্দোলনকে সফল করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত উল্লেখ করে বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, কয়দিন আগে আমরা দেখেছি, ছাত্র সমাজের বেশ কিছু সদস্য রাস্তা বন্ধ করে রেখেছেন, কেন? তারা সুচিকিৎসা পাচ্ছেন না। জুলাই-আগস্ট মাসে যারা আন্দোলনকে সফল করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত। এই ঘটনা একবার না একাধিকবার ঘটেছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমার প্রশ্ন, আমরা যদি প্রতিদিনের কিছু কাজ করার চেষ্টা করি তাহলে কি সঠিকভাবে, সঠিক সময়ে অধিকাংশ মানুষের কাছে সহযোগিতা পৌঁছানো সম্ভব? অবশ্যই সম্ভব না। তাই সংস্কারকে সফল করার জন্যই এমন মানুষের দরকার যারা সরাসরিভাবে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তা না হলে কোনো সংস্কারই সফল করা সম্ভব হবে না।

সংস্কারের প্রস্তাবনা দুবছর আগে এই দেশের রাজনীতিবিদরাই জনগণের সামনে তুলে ধরেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংস্কারের প্রস্তাবনা দুবছর আগে এই দেশের রাজনীতিবিদরাই মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন। কাজেই এই দেশে প্রকৃত সংস্কার যদি করতে হয় রাজনীতিবিদদের মাধ্যমেই করতে হবে। অবশ্যই রাজনীতিবিদদের বাইরে দেশে বহু মানুষ আছেন, বহু শ্রেণি পেশার মানুষ আছেন, বুদ্ধিজীবীরা আছেন, আইনজীবীরা আছেন, সিভিল সোসাইটির মানুষ আছেন, আমরা অবশ্যই তাদের পরামর্শ নেব। তার ভিত্তিতেই আমরা ধীরে ধীরে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব।

তারেক রহমান বলেন, শুধু ভোটের অধিকার নিশ্চিত করলে চলবে না, ভোট প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে৷ অর্থাৎ আমি একজন ভোটার, আমার যেমন ভোটের অধিকার থাকবে তেমনি ভোট প্রয়োগে যেন স্বাধীন ও নির্ভয়ে আমাদের পছন্দের প্রতিনিধিকে ভোট দিতে পারি সে অধিকারও নিশ্চিত করতে হবে।

বৈষম্যহীন সমাজের কথা বিএনপি অনেক আগেই বলেছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এখন যারা বৈষমহীনের কথা বলছেন, আমরা অনেক আগেই সে কথা বলেছিলাম। আমরা আমাদের ৩১ দফা নিয়ে মানুষের ঘরে ঘরে যাওয়ার চেষ্টা করছি, আমরা মানুষকে বলার চেষ্টা করছি, আমাদের ৩১ দফা। ৩১ দফার মূল কথা একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশের প্রত্যাশা প্রত্যেকটি মানুষের। যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অধিকার থাকবে৷ যেখানে মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থাকবে। কারণ একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি মানুষের রাজনৈতিক অধিকার ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা যদি নিশ্চিত করা না যায়, তাহলে সব কিছুই নষ্ট হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন...