শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, আমরা যত্রতত্র অনার্স খুলেছি। সেটি জনপ্রতিনিধিদের আগ্রহেই হয়েছে। সেখানে শিক্ষার্থীও অনার্স মানের নয়। শিক্ষকও হয়ত অনার্স মানের নয়, কিন্তু আমরা খুলেছি।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়, মেহেরপুর বিল-২০২৩ এর সংশোধনীর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশে ৫৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এখন পর্যন্ত নিজেদের কোনো স্থান নেই। কাজই শুরু হয়নি। তার বাইরেও কিছু আছে একেবারে নতুন তৈরি হয়েছে। সেখানে শুধুমাত্র উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ছাড়া অধ্যাপক পদমর্যাদার আর কেউ নেই।
তিনি বলেন, পুরানো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যাপক পদমর্যাদার কেউ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চান না। ওখানকার শিক্ষক হিসেবে প্রভাষক নিয়োগ হন, তাদের অধ্যাপক পদে যেতে লাগবে আরও ১৫ বছর। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার সুযোগ তৈরি হয়ে গেছে তা কিন্তু নয়। সেই বাস্তবতাটা আমাদের মেনে নিতে হবে। সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা এক রকম নয়।
তিনি বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ে মান এবং গবেষণায় আগ্রহ এক রকম নয়। বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান চর্চার নয়, জ্ঞান সৃষ্টির স্থান। সেই জ্ঞান সৃষ্টির উপায় হচ্ছে গবেষণা।
জনমত যাচাইয়ের আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। আমাদের উচ্চ শিক্ষার ৭০ শতাংশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। সারা দেশব্যাপী ২ হাজার ২৫৭টি কলেজে।
জনমত যাচাইয়ের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী প্রবাসী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি করেন।
তিনি বলেন, বছরে আমাদের আট থেকে ১০ লাখ লোক বিদেশে যায়। তাদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা কী দিয়েছে? কিছুই করেনি। তাদের ভাষাও শেখায়নি। পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন জ্ঞান দেওয়া হয়নি। আমাদের প্রবাসী বিশ্ববিদ্যালয় দরকার। যেখানে প্রবাসীদের ছেলে-মেয়েরা পড়বে এবং প্রবাসে গিয়ে কী করবে তার দীক্ষা লাভ করবে।
দেশের কোন খাতে কত জনবল দরকার তা নিয়ে কোন গবেষণা হয়নি দাবি করে সংশোধনী আলোচনায় শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, আমাদের কোনো গ্লোবাল গবেষণা হয়নি। সারা পৃথিবীতে লরি চালক কত দরকার, নার্সিং দরকার কতজন, আমাদের দেশে দরকার কতজন, সেসব বিষয় নিয়ে গবেষণা হয়নি। আমরা বানাচ্ছি রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতির স্নাতক কিন্তু প্রয়োজন হলো নার্স, চালক, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। এই গবেষণা বাংলাদেশ কখনোই হয়নি। এটা না করার কারণে আমাদের স্নাতকরা বেকার হচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সঙ্গে ট্যালেন্ট পাটনারশিপে আগ্রহী দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের উচিত ট্যালেন্ট পার্টনারশিপে যাওয়া। এটা না করে শুধু স্নাতক বানালে তারা সারা পৃথিবীতে বেকার হয়ে ঘুরবে।
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড ছিল, আছে, থাকবে। যে দেশে কোন সম্পদ, তেল, গ্যাস নেই সে দেশে জনগণই সম্পদ। তাদের শিক্ষিত ও দক্ষ করাই সম্পদ। সেখান থেকে আমরা ইট, পাথরকে বেশি ফোকাস দিচ্ছি। ব্রিজ, কালভার্টকে জাতির মেরুদণ্ড ভাবছি। শিক্ষা ও দক্ষতা জাতির মেরুদণ্ড হতে হবে।