পিবিএ,চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গা জেলার ১৩ লাখ মানুষের জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একমাত্র ভরসা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল। কিন্তু এ হাসপাতালে ডাক্তার ও বেড সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে দিনের পর দিন। ২০০৩ সালে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল। খাতা কলমে ১০০ শয্যায় রুপ নিলেও সেই ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে কোনরকমে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে হাসপাতালটি। এতে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে মারত্মক হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও দেখা পাচ্ছেন না চিকিৎসকের। অন্যদিকে হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স না থাকায় বাড়তি সুবিধা নিতে প্রাথমিক চিকিৎসা কাজে হাত লাগাচ্ছে অদক্ষ স্বেচ্ছাসেবকরা। যদিও বিষয়টি অবৈধ তবুও নিরুপায় হয়ে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এসব অদক্ষ স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে সাধারণ রোগীরা।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস বলছে, সদর হাসপাতালে ৪২টি পদের মধ্যে চিকিৎসকের স্থলে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১৭ জন। ২৫টি পদ শূন্য রয়েছে। সাত মাস আগে হাসপাতালের বাইকেমিস্ট্রি পরীক্ষা করার মেশিন নষ্ট হয়ে আছে। এর ফলে গুরুত্বপূর্ন পরীক্ষাসহ বিভিন্ন টেস্ট রোগীদের বাইরে থেকে করে আনতে হচ্ছে। ১৯৭০ সালে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। জনসংখ্যার সাথে সাথে রোগীর চাপও বেড়ে যাওয়ায় ২০০৩ সালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালকে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। শয্যা সংখ্যা নামমাত্র বাড়লেও হাসপাতালটিতে ডাক্তার, নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। ডাক্তার সংকটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগীদের বসে থাকতে হয় হাসপাতালের বাইরে। রোগীদের সেবার মান বৃদ্ধির জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যর প্রচেষ্টায় ২০১১ সালের প্রায় সাড়ে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫০ বেডের জন্য নতুন ভবন নির্মাণ শুরু করে। ২০১৬ সালে হাসপাতালটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পাচ বছরেও আজো তা আলোর মুখ দেখেনি।
এদিকে জনবল সংকটের কারণে এত রোগীর চাপ সামাল দিতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে ওয়ার্ড নার্সদের। প্রতিটি ওয়ার্ডে ১৫-২০ টি বেড রয়েছে সেই তুলনায় প্রতিদিন একেকটি ওয়ার্ড থেকে শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। এতে করে ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। বেড না পাওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসক ও ওষুধ না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে রোগীদের। অনেকে ঘন্টার পর ঘন্টা হাসপাতালের বারান্দায় অপেক্ষা করে চিকিৎসকের দেখা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিটা বিভাগেই জনবলের সংকট রয়েছে। এতসব সমস্যার কারণেই ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা।
দীর্ঘদিনের সদর হাসপাতালের জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা ডা: খায়রুল আলম বলেন জনবল সংকটের কারণে জরুরী বিভাগে স্বেচ্ছাসেবকদের কাজ লাগানো হচ্ছে। যদিও কাজটি সঠিক নয় তবুও কোন উপায় না পেয়ে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে দাবী তার। খুব দ্রুত ২৫০ শয্যা হাসপাতালটি চালু হলে রোগী সাধারণের দূর্ভোগ কমবে বলে দাবী তার।
পিবিএ/কেসি/এফএস