পিবিএ,জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী। সোমবার ( ১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সদ্য স্থগিতকৃত ছাত্রলীগের কমিটির সঙ্গে বিদ্রোহী গ্রুপের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষ শুরু হয়। এরই এক পর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের স্থগিতকৃত
জানা যায়, কয়েকদিন আগে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর মধ্যে মারামারির ঘটনায় জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ ঘটনা জের ধরে জবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদ। এরপর ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নামে অবস্থান নেয় ভিন্ন একটি গ্রুপ।
এতে সদ্য স্থগিত কমিটির দুই গ্রুপ এবং নতুন উদ্ভব এই গ্রুপের মধ্যে কয়েকদিন ধরে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। উভয় পক্ষয় ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। এতে উত্তেজনা আরো বাড়ে। এর জেরে সোমবার ফের দুই গ্রুপের মধ্যে বেঁধে যায় সংঘর্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি (স্থগিত) তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক (স্থগিত) জয়নাল আবেদিন রাসেলের নেতা কর্মীরা ক্যাম্পাসে ধারালো অস্ত্র, লাঠি-সোটা, ইটপাটকেল, রড, হাতুড়ি নিয়ে অবস্থান নেয় যাতে করে নতুন কমিটির পদ প্রত্যাশীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পারে।
পরে ছাত্রলীগের ওই গ্রুপের নেতা কর্মীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় তারা।
পরে বিকেল ৩টার দিকে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে মূল ফটকে অবস্থান নেয় তরিকুল-রাসেল গ্রুপের কর্মীরা। এ সময় তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও দৈনিক সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রাকিবুল ইসলামের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। এছাড়াও হামলার শিকার হোন দৈনিক সমকালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি লতিফুল ইসলামসহ ৭ জন সাংবাদিক। তরিকুল-রাসেলের পক্ষে হামলার নেতৃত্ব দেন ছোট তরিকুল রিমন ওরফে ছোট তরিকুল।
পরে পুলিশ এসে আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে পাশ্ববর্তী সুমনা হাসপাতাল ও ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জবি ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল বলেন, ক্যাম্পাসে কি হচ্ছে তা আমরা জানি না। এটা জানার কথা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের। কারা কি করছে সেটার দায় আমাদের ওপর এখন বর্তায় না। অন্যদিকে সভাপতি তরিকুল ইসলামকে ফোন দেওয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এছাড়া জবি প্রক্টর নূর মোহাম্মদ কে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রেজুয়ানুল হক শোভন বলেন, সাংবাদিকদের ওপর আঘাত অত্যন্ত দুঃখজনক। তাদেরকে (জবি ছাত্রলীগ) একবার স্থগিত করে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে কঠিন থেকে কঠিনতর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিবিএ/এফএস