পিবিএ ডেস্ক: ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে মানবিক সংকট ও সেখানকার নাগরিকদের অবরুদ্ধ জীবনযাপনের বিষয়টি জাতিসংঘে উপস্থাপন করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে ভারত সরকারের নির্মম অত্যাচারের বিষয়টি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরে ইমরান খান বলেন, গত ৫২ দিন ধরে ৮০ লাখ কাশ্মীরিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ৯ লাখের বেশি সেনা মোতায়েন করে সেখানকার নাগরিকদের সঙ্গে পশুসুলভ আচরণ করছে আরএসএস মতাদর্শী মোদি সরকার।
মুসলিম নির্যাতনে বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতার সমালোচনা করে ইমরান খান বলেন, মুসলমানদের সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে তাদের ব্যাপারে সবাই নীরব বসে থাকে। আজকে যদি ইহুদিরা এভাবে অবরুদ্ধ থাকতো, তাহলে কি বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া এমন হতো? রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানো হলো, আন্তর্জাতিক শক্তি কি ভূমিকা পালন করেছে?
তিনি বলেন, মুসলিমদের মধ্যে যারা উগ্রবাদে জড়ায়, তারা ইসলামের কারণে নয় ইনসাফের অভাবেই এ পথে পা বাড়ায়। এ জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দায় এড়াতে পারে না।
ইসলামি জঙ্গিবাদ উগ্রবাদ বলতে কোন শব্দ নাই। ইসলাম একটাই আর সেটা হলো ১৪০০ বছর পূর্বে মোহাম্মদ (সাঃ) শিখিয়ে গেছেন। পশ্চিমারা সন্ত্রাসীদের ইসলামের সাথে যুক্ত করে ইসলামকে অপমান করছে। আমাদের মুসলমানদের দায়িত্ব সঠিক ইসলামের বানী প্রচার করা যাতে পশ্চিমারা আমাদের ইসলাম ও প্রাণের নবী মোহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে মিথ্যা প্রচার না করতে পারে।
ইজরাইল জবরদস্তি করে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে তাদের ভূমি দখল করেছে, জাতিসংঘ তামাশা দেখছে।
মিয়ানমার জবরদস্তি করে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা করে বিতাড়িত করেছে, কিন্তু জাতিসংঘ কিছুই করে নাই।
খবরদার ভারত যদি একই কাজ কাশ্মীরে করতে চায়, পরিনতি হবে ভয়াবহ। পাকিস্তান জানে ভারত তার থেকে ৫ গুণ বড় তারপরেও পাকিস্তান শেষ রক্তবিন্দু দিয়েও লড়াই করবে।
লা ইলাহা ইল্লালাহ। আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নাই। আমরা একমাত্র তারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি। জাতিসংঘ যদি কাশ্মীরের পাশে নাও থাকে, পাকিস্তান মজলুম কাশ্মীরের ভাগ্য জালেম মোদির হাতে ছেড়ে দিবে না!
পারমাণবিক শক্তিধর দুই রাষ্ট্রের যুদ্ধ হলে পৃথিবীর কেউই নিরাপদ নয়। জাতিসংঘের আর প্রয়োজন নাই, যেহেতু ৭৪ বছরে জাতিসংঘ তামাশা দেখেছে মুসলমান হত্যাযজ্ঞের।
প্রায় ৫০ মিনিটের দীর্ঘ ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত শাসিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করে গত প্রায় দু মাস ধরে ৮০ লাখ কাশ্মীরিকে যেভাবে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে তা যে কোনো সময় বিপজ্জনক পরিণতি বয়ে আনতে পারে।
পিবিএ/এমএসএম