জামালপুরে ওভারপাস নির্মাণে উচ্ছেদকৃত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিপূরণ চায়

রাজন্য রুহানি,জামালপুর: জামালপুরে রেলওয়ের লিজ নেওয়া জমিতে থাকা ৪৪টি দোকান ভেঙে দিয়ে রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ করায় ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। ক্ষতিপূরণের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা। স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইফতেখার ইউনুস।

বুধবার (৯ এপ্রিল) সকালে শহরের ফৌজদারি মোড়ে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। পরে তারা জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগমের কাছে স্মারকলিপি দেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গেইটপাড় এলাকার ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নিরল ইসলাম, মোখলেছুর রহমান সোহেল, রুহুল আমিন রাজা, মনিরুল ইসলাম মনি, লিখন, ফরহাদ হাসান, ফরিদ হোসেন, আবুল কালাম, কামরুজ্জামান নয়ন, আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা জানান, জামালপুর পৌরসভার গেইটপাড়ে রেলওয়ে ওভারোস নির্মাণ করা হয়। এতে রেলওয়ের অংশের কিছু জমি (০৪/২০১৭-২০১৮ নং এল.এ কেস মূলে) স্থানীয় ৪৪ জন মালিকের লিজ নেওয়া। তারা দীর্ঘদিন ধরে সেখানে দোকানপাট তুলে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। ওই ওভারপাস ব্রিজ ও সড়কের কিছু অংশের জমি বাংলাদেশ রেলওয়ে মালিকাধীন। এই জমিতে রেলওয়ে কৃর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে (১৪১৪১, ১৪০০৩, ১৪০০৮, ১৪০০৬ এবং ১৪০০৭ নং দাগে মোট ০.৩০০০ একর) ব্রিজ ও সড়ক নিমার্ণ করা হয়।

তারা আরও জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকাধীন বর্ণিত দাগগুলোতে আমাদের ৪৪টি পরিবার ৯৯ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে লিজ নিয়ে ৪৪টি দোকান ঘর নিমার্ণ করে দীর্ঘদিন যাবত ব্যবসাবাণিজ্য পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। যার বাণিজ্যিক লিজকৃত প্লট নং- ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৬/এ, ৪৬, ৫৬, ৫৭, ৪৯, ৫৮, ৫১, ৫৯, ১৫১, ১৫০, ১১৭/এ, ১৫২, ১১১ ভাড়াটিয়া ও মালিকরা তৎকালীন ফ্যাসিষ্ট সরকারের অংশীদার ও জামালপুর সদর উপজেলা ধ্বংসকারী মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী বাজার নিবাসী সাবেক এমপি মির্জা আজম, জামালপুর পৌরসভার সাবেক পৌর মেয়র মো. ছানুয়ার হোসেন ছানু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার চন্দ ও পৌর কাউন্সিলর হেলাল সরাসরি মদদে ও ক্ষমতাবলে সড়ক ও জনপথের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাদ্দাম হোসেন, সার্ভেয়ার মো. ফরহাদ হোসেন, ভূমি অধিগ্রহণ শাখার তৎকালীন কর্মরত সার্ভেয়ার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ জহুরুল হক, মালেক মিয়া ও ইসমাইলের কু-পরামর্শে বাংলাদেশ রেলওয়ের বর্ণিত দাগগুলো বেআইনিভাবে অধিগ্রহণের আওতায় না নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে প্রায় দুই কিলোমিটার বাইপাস সড়ক ও ওবারপাস ব্রিজ নিমার্ণ করা হয়।

বক্তারা জানান, আমাদেরকে এই বলে মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হয় যে, আপনারা আপনাদের দোকান ঘর ভেঙ্গে নিয়ে যান, পরবর্তীতে আপনাদের ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হবে। তবুও আমরা নোটিশ না পাওয়া পর্যন্ত দোকান ঘরগুলো ভেঙ্গে নেই নাই। কয়েকদিন পর রাতের অন্ধকারে তৎকালীন ফ্যাসিষ্ট সরকারের অংশীদার মির্জা আজম এমপির সরাসরি মদদে ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের ৪৪টি দোকান ঘর ভেঙে দোকানের মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। এতে পরিবারগুলো নিঃস্ব, অসহায় ও সম্বলহীন হয়ে পড়ে। তখন হতে আমরা এখন পর্যন্ত আমরা সন্তানাদিসহ মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমরা পূর্ববর্তী ও বর্তমান জেলা প্রশাসক বরাবর আমরা ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার জন্য লিখিত ও মৌখিকভাবে বারবার আবেদন/অনুরোধ করি। কিন্তু অদ্যাবধি আমরা কোনো ন্যায্য ও আইন সংগত সুরাহা পাইনি।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানান।

আরও পড়ুন...