পিবিএ,জামালপুর: বেদে সম্প্রদায়, ভবঘুরে যাদের জীবনযাপন, আর জীবিকা উপার্জন। এক সময় এদেশের মানুষ বেদেদের চিকিৎসার উপর বিশ্বাসী ছিলো। বেদে সম্প্রদায়ের লোকেরা ঘুরে ঘুরে তাবিজ কবজ বিক্রি করে বেড়াতো। ওরা বাতের ব্যথা নিরাময়ের জন্য মানুষের হাত পায়ে সিঙ্গা লাগিয়ে রক্ত চুষে আনতো। এখনো কিছুকিছু মানুষ আছে, বেদেদের চিকিৎসায় বিশ্বাসী। বেদেদের চিকিৎসায় বিশ্বাসী আগের মতন লোক না থাকায় ও বর্তমান করোনার কারণে তাদের উপার্জনে পড়েছে ভাঁটা। তাই বেদেরাও বসে নেই। বেদে সম্প্রদায়ের লোকেরা অনুসরণ করছেন অন্য পন্থা। তাঁরা এখন বেছে নিয়েছেন অন্যরকমভাবে কামাই রোজগারের পথ।তাদের মধ্যে অনেকেই ওইসব চিকিৎসা বাদ দিয়ে বিভিন্ন কাজ করেও দিনাতিপাত করছেন। কেউ আবার বাপদাদার ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহীর নাটোরের সিংড়া থেকে আসা জামালপুরে ইসলামপুরের ডিগ্রীরচর এলাকায় বসবাস রত বেদেরা করোনার প্রভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। করোনার প্রভাবে হাটে-বাজারে মজমা (মানুষ জমিয়ে) দিয়ে সাপের খেলা দেখাতে ও বিক্রি করতে পারছেনা তাদের তাবিজ কবজ। ফলে তাদের উপার্জনে পড়েছে ভাঁটা।এতে তারা আরো বেশি অসহায় হয়ে পড়েছে। কোনো আর্থিক বা খাদ্যসামগ্রীর সহায়তা জোটেনি তাদের কপালে। ১৫ টি পরিবারের ৪৮ জন লোক খুব অসহায় জীবন যাপন করছেন বলে জানান তারা।
বেদে পল্লীর সর্দার মো: রইচউদ্দিন বলেন, আমরা করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পরেছি। করোনার আগে,দিনে প্রায় হাজার টাকা কামাই হতো।এখন তো এক-দুশ টাকা কামাই করাই মুশকিল হয়ে যায়।ছেলেপেলে নিয়ে খুবই কষ্টে আছি।
মোছা:পারভীন আক্তারসহ একাধিক ব্যক্তি জানায়,আমাদের পল্লীতে পতিবন্ধীসহ কয়েকজন বয়স্ক লোক আছে,তাদের ভাগ্যেও জুটেনি সরকারি অনুদান।এখানের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেও কোন লাভ হয়নি। খুবি কষ্টে আছি পরিবার নিয়ে।আমরা এখনো কোনো সরকারি ত্রাণ পাইনি। আর পাবো কি না জানি না।
মানুষ মানুষের জন্য। এই বিপদের সময় মানুষই পারে একজন মানুষ কে বাঁচাতে। তাই এই বেদে পল্লীর মানুষদের পাশে সমাজের বিত্তবাণদের দাড়াঁনোর কথা বলে মনে করছেন, সুধীমহল।
পিবিএ/আব্দুল্লাহ আল লোমান/এসডি