রাজন্য রুহানি, জামালপুর: জামালপুর জেলা কারাগারের ভেতর আগুন লাগিয়ে বের হবার সময় গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন ছয়জন বিদ্রোহী কারাবন্দী। এ সময় জেলার, কারারক্ষী ও বন্দীসহ ১৯ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে জেলা কারাগারের প্রধান গেইটে গণমাধ্যম কর্মীদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলার আবু ফাতাহ।
নিহতরা হলেন, জামালপুর সদর উপজেলার ফহিমের ছেলে আরমান, মাসুদের ছেলে শ্যামল, নুরুল ইসলামের ছেলে জসিম, রাহাত, ফজলে রাব্বি বাবু ও রায়হান। এছাড়াও জেলার আবু ফাতাহ, কারারক্ষী রুকুনুজ্জামান (৫০), সাদেক আলী (৪৫), জাহিদুল ইসলাম (৪১) ও সোহেল রানাসহ ১৯ জন আহত হন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক মামলার বন্দীরা গত কয়েকদিনে কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন। অন্য মামলার আসামিরা কারাগারে বন্দী রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বন্দী আসামিরা দুইভাগে বিভক্ত হন। তাদের একটি পক্ষ মুক্তির জন্য বিদ্রোহ করেন এবং অপরপক্ষকে মারধর শুরু করেন। পরে ওই বিদ্রোহী গ্রুপ দায়িত্বরত কারারক্ষীদের হাত-পা বাঁধে এবং জিম্মি করেন। পরে বিদ্রোহীরা প্রথম গেইট দিয়ে জেলার কক্ষে ঢুকে তাঁকে প্রধান গেইট খুলে দিতে বলেন। তখন তিনি গেইট খুলে দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিদ্রোহীরা তাঁকে মারধর করেন। পরে বন্দীদের একটি পক্ষ ও কারারক্ষীদের সহায়তায় তিনি বের হয়ে আসেন।
এ সময় জেলারের কক্ষ, হাসপাতাল ও বন্দীদের সাতটি সেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বিদ্রোহীরা। পরে কারারক্ষীরা ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কারারক্ষীদের পাশাপাশি অন্যান্য আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কারাগারে অবস্থান নেন। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা সঙ্কাটাপন্ন হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য আহতরা জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে জেলা কারাগারের জেলার আবু ফাতাহ বলেন, ‘বন্দীদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। তারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে মারামারি শুরু করে। এ সময় তারা আমাকে ও কারারক্ষীদের উপর আক্রমণ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়া হয়। পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় ৬ জন বন্দী নিহত হয় এবং আমি, কারারক্ষী ও বন্দিসহ ১৯ জন আহত হই।’