পিবিএ,ঢাকা: রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখানের মসজিদের ইমাম (৪২) ইদ্রিস আহাম্মেদ।পাশাপাশি একটি মাদ্রাসায় শিক্ষতাও করেন তিনি। এলাকায় পরিচিত ঝাড়ফুঁক ও তাবিজ-কবজের জন্য। দাবি করেন নিজের কাছে পোষা জ্বিন আছে। কিন্তু তার এসব পরিচয়ের আড়ালেও আরেকটি পরিচয় রয়েছে। তিনি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর একজন মানুষ।
দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে এই এলাকায় তাবিজ-কবজ ও জ্বিনের ভয় দেখিয়ে নারীদের ধর্ষণ করে চলেছেন তিনি। তার লালসা থেকে বাদ যায়নি তার মাদ্রাসার কিশোররাও।
অবশেষে গতকাল রোববার র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ইদ্রিস সম্পর্কে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে চলে আসে। ইদ্রিসের হাতে ধর্ষণের শিকার এক নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়ার পর গতকাল মধ্যরাতে র্যাব-১ এর একটি দল দক্ষিণখান থানার সৈয়দনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় ইদ্রিসের কাছে পাওয়া মোবাইলফোনে ধর্ষণ ও বলাৎকারের অনেক ভিডিও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
আজ সোমবার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।
তিনি জানান, সিলেটের বাসিন্দা ইদ্রিস আহাম্মেদ ২০০২ সালে দক্ষিণখানের ওই মসজিদে ইমাম হিসেবে যোগ দেন। এরপরই নিজের কাছে জ্বিন আছে মর্মে প্রচার শুরু করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় তাবিজ-কবজ ও ঝাড়ফুঁকের সাহায্যে এলাকাবাসীর কাছে বিশ্বস্ত হয়ে ওঠেন। এরপরই সেই কথিত জ্বিনের ভয় দেখিয়ে তার কাছে বিভিন্ন অসুখে ঝাড়ফুঁক নিতে আসা নারীদের ধর্ষণ করতে শুরু করে তিনি। তবে নিজের মানসম্মান এবং জ্বিনের ভয়ে কোনো নারীই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি।
তিনি আরও জানান, কেবল ধর্ষণ নয়, ধর্ষণের ভিডিও করে রাখতো ইদ্রিস। খেদমতের কথা বলে মাদ্রাসা থেকে কিশোরদের ডেকে এনে তাদেরও ধর্ষণ করতেন তিনি। এসব কিশোরদের অধিকাংশের বয়স ১২ থেকে ১৯ এর মধ্যে। জ্বিন এবং ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনাও ঘটিয়েছেন ইদ্রিস।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া ইদ্রিস প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার অপকর্মের কথা স্বীকার করেছে। জিন নিয়ে তার প্রচারণা মিথ্যা এবং খাদেমদের দিয়ে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করতো বলেও স্বীকার করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
পিবিএ/ইকে