মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ভাষা সৈনিক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (২০ মার্চ) প্রেস ক্লাবে জিল্লুর রহমানের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কীভাবে সংকটে, সংগ্রামে, প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে ধৈর্যশীল থাকতে হয়, নেতৃত্বের প্রতি কীভাবে আস্থাশীল থাকতে হয় সেটির উদাহরণ জিল্লুর রহমান। আমাদের নেত্রী গ্রেপ্তার হওয়ার পর জিল্লুর রহমান দলের হাল ধরেছিলেন। ওয়ান ইলেভেন এর সময় তিনি ধৈর্য ধারণ করে সমস্ত কিছু সামাল দিয়েছেন, সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যে, চাপের মধ্যে অবিচল থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেই কারণেই শেখ হাসিনাকে আমাদের পক্ষে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছিল৷
জিল্লুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে মন্ত্রী বলেন, আমার মনে আছে নেত্রী যেদিন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আমি তার কয়েকদিন আগ থেকে আত্মগোপনে ছিলাম। গ্রেপ্তার হওয়ার খবরে আমি সুধা সদনে ছুটে যাই। সেখানে নেত্রী দুইজন পার্সোনাল ফটোগ্রাফার ছিল। একজন জীবন, আরেকজনের নাম হাবিব। তাদের আমি বাড়ির সব ছবি তুলে রাখতে বলেছিলাম কারণ এগুলো মামলার আলামত হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কারণ পুরো বাড়ি তছনছ করা হয়েছিল। সেখান থেকে যখন জিল্লুর চাচার বাসায় ছুটে যাই তখন দলের পক্ষ থেকে একটা প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়েছিল। জিল্লুর চাচা তখন প্রেস কনফারেন্স বক্তব্য রেখেছিলেন। বক্তব্য শেষে উনি বেডরুমে চলে গিয়েছিলেন৷ আমি এসেছি শুনে আমাকে বেডরুমে ডেকে নিলেন। তার সঙ্গে আমার প্রথম কথা ছিল, চাচা আমাদের প্রথম কাজ হবে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা। এখন চেষ্টা হবে দলকে ভাঙার৷ যদি দল ভেঙে ফেলতে পারে, তাহলে নেত্রীকে মুক্ত করা আমাদের পক্ষে কঠিন হবে৷তিনি আমার কথায় সায় দিয়ে বললেন, “হ্যাঁ এটি আমাদের ফার্স্ট চ্যালেঞ্জ৷”
মন্ত্রী বলেন, তার কাছে অনেক লোভনীয় প্রস্তাব ছিল। সেগুলো তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন৷ আমাদের দেশের ওপর শকুনের দৃষ্টি সব সময় পড়ে৷ওয়ান ইলেভেনের যারা কুশীলব ছিলেন তারা শকুনকে আহ্বান জানায়৷ সুতরাং শকুন থেকে সতর্ক থাকতে হবে৷
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, আমরা যারা পেশাজীবী রাজনীতি করেছি যখনই উনার কাছে গিয়েছি উনি সাড়া দিতেন৷ জিল্লুর রহমান একটা দীর্ঘ সময় ধরে জাতির জনক এবং জাতির জনকের কন্যার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন৷ উনি আত্মবিশ্বাস নিয়ে দুর্বার গতিতে কাজ করে যেতেন৷
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জিল্লুর রহমান পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামান খোকা প্রমুখ।