মাহমুদ: একমাত্র ছেলে হিন্দোলের পরীক্ষা শেষ হয়েছে ক’দিন হলো। রাজনৈতিক দলের হরতালের কারণে পরীক্ষার তারিখ পিছিয়েছে কয়েকবার। পরিবর্তিত তারিখ অনুযায়ী পর পর তিন শুক্রবার দিতে হয়েছে পরীক্ষা। ওর মনে ছিল পরীক্ষার ক্লান্তি। ছিল রাজনীতিবিদদের হটকারী কর্মসূচির প্রতি বিরূপ মনোভাব। ভাবলাম ওকে নিয়ে সাভার স্মৃতিসৌধে যাব। সুন্দর পরিবেশের একটু বেড়ানোও হবে, আর স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের স্মরণে নির্মিত জাতীয় স্মৃতিসৌধও দেখা হবে। আজ তাই সকাল বেলায় স্ত্রী অনু আর ছেলে হিন্দোলকে নিয়ে সকাল বেলায় গিয়েছিলাম সাভার স্মৃতিসৌধে। সেখান থেকে দুপুর নাগাদ ফিরে এসে শাহবাগের সিলভানা হোটেলে বসেছি দুপুরে খাবারটা সেরে নিবো। এই সিলভানা হোটেলটি আমার কাছে স্মৃতিময় একটি হোটেল। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অনেকবার এসেছি বন্ধু-বান্ধবদের সাথে। বিশেষ করে অনুকে নিয়ে বিয়ের আগে আমরা প্রায়ই এখানে আসতাম। কখনো বা খাবারের প্যাকেট নিয়ে ক্রিসেন্ট লেকের পাশে বসে খেতাম।
খাবার অর্ডার দেয়া হয়নি এখনো। এমন সময় ডান কানের লতিতে অতিপরিচিত একটা টোকা অনুভব করি। প্রায় বিশ বছর আগের সেই ব্যাথাহীন টোকার অনুভূতি। পিছন ফিরে তাকাতেই দেখি শেলী। সাথে সুদর্শন ভদ্রলোক আর পাঁচ-ছয় বছর বয়সী একটি মেয়ে। সেই হাসি মাখা মুখ, একই ভঙ্গি, কথা বললে গালে টোল পড়ে। কেমন আছো ভাইয়া। তুমি নিশ্চয়ই অনু ভাবী, আর তুমি হিন্দোল। ঠিক বললাম না।
হ্যাঁ ঠিকই বলেছো। তা জ্যোতিষির মত এমন মুখস্ত বললে কি করে?
ইচ্ছে থাকলে সবই জানা যায়, বলাও যায়। ভাবী এ হলো আমার হাজবেন্ড কৌশিক চৌধুরী আর মেয়ে শেজুতি। আমার দিকে তাকিয়ে অনুর কাছে নিজ স্বামীর আর্থিক স্বচ্ছলতা আর সামাজিক অবস্থানের ফিরিস্তি দিচ্ছে। অনেক বড়লোক স্বামী, ধানমন্ডি বাসা, গুলশান অফিস। নিজেও শরীর ভর্তি গহনা পড়ে সমাজে নিজেকে অন্য সবার চেয়ে আলাদা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়েও জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কাংখিত চাওয়া পূরণ না হওয়ার বেদনা আর কেউ না বুঝলেও আমার বুঝতে কষ্ট হলো না এতটুকু। বিশ বছর আগে আমি তখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্র। থাকি বড়ভাইয়ের পূর্ব ধোলাইর পাড় এর বাসায়। সেখানেই পরিচয় শেলীর সাথে। শেলী তখন ইন্টার মিডিয়েটের ছাত্রী। বড়লোক ব্যবসায়ী বাবার একমাত্র সন্তান। প্রাচুর্যের কমতি ছিল না এতটুকু। কোন কিছু চেয়ে পায়নি এমন নজির ওর অভিধানে ছিল না। শুধু নিজের পছন্দের ভালোবাসাকে নিয়ে ঘর বাঁধতে পারেনি এটুকুই যা। এজন্য অবশ্য আমাকে কম দোষ দেয়া হয়নি। অনেকেই আমাকে নানাভাবে বোঝাতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমার জীবনের সবচেয়ে কাছের বন্ধু, আমার বাবা যে যুক্তিসঙ্গত ভিন্নমত পোষণ করলেন তার বিরুদ্ধে যাওয়ার মত মানসিকতা আমার ছিল না। বাবা বলেছিলেন, বর্তমান সমাজে আর্থিক অসমতা আত্মীয়তার ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ হৃদ্যতার বহি:প্রকাশ ঘটাতে পারে না। আর অল্প শিক্ষিত ব্যবসায়ীদের কাছে উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তির যথাযথ মূল্যায়ন প্রত্যাশা করা বোকামি ছাড়া আর কিছুই না।
বাবার সাথে আমার ‘বন্ধুর সম্পর্ক’ দেখে অনেকেই ঈর্ষা করতো। আমি প্রায় সব বিষয়ই বাবার সাথে শেয়ার করতাম। দুষ্টমিও করতাম। বাবাও নিজ জীবনের সমস্ত স্মৃতি, জীবনের গল্প বলতেন সত্যিকারের বন্ধুর মতোই। নিজের শিক্ষাজীবন, ফুটবলার হয়ে উঠা, গুরু ট্রেনিং (জি টি) নিয়ে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নেয়া, বিয়ের গল্প সবই বলতেন। শুনতাম মুক্তিযুদ্ধের গল্প। কিভাবে একজন সাধারণ মানুষ যুদ্ধের নেশায় ভয়ংকর হয়ে উঠে, যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ঘটনাপ্রবাহ ইত্যাদি। বাবাকে বন্ধু হিসেবে পেয়ে আমিও যেন একটু বেশীই বেয়ারা হয়ে গিয়েছিলাম। আমিও আমার গোপন সব কথা বাবাকে বলতে এতটুকু দ্বিধা করতাম না। এমন কি আমার কোন বান্ধবী কেমন, কাকে বিয়ে করলে জীবন ভালো ভাবে চলবে সবই কিছুই। একবার ঈদে বাড়ি গিয়ে আমার এক বান্ধবী সম্পর্কে অনেক কিছু বলেছিলাম। বলেছিলাম বিয়ের আসরে কবুল বলার সাথে সাথেই আমি কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়ে যাবো। বাবা খুব মনোযোগ দিয়ে আমার কথা শুনে বললেন, পরিবারের অবস্থা জানলাম, মেয়ের অবস্থাতো বললে না। আমি বললাম, মেয়েটা অনেক ভালো, নম্র, ভদ্র, বিনয়ী, তবে একটু খাটো। বাবার সরল উক্তি ছিল, ‘যা দেখতে ভালো না, তা খেতেও ভালো না’। বিয়ে করে বড়লোক হওয়ার সাধ আমার তখনই মিটে যায়।
অনুর কথা বাবাকে বলেছিলাম, আমি তখন মাষ্টার্সের ছাত্র। আমার মা’র পা ভেঙ্গে যাওয়ায় অপারেশন করাতে ঢাকা নিয়ে আসা হয়। অপারেশন করা হয় একটা প্রাইভেট ক্লিনিকে। মা’র সাথে বাবাও এসেছিলেন। ঐ ক্লিনিকেই এসেছিল অনুসহ আরো অনেক সহপাঠি। সেখানেই বাবাকে দেখিয়েছিলাম অনুকে। বাবার সাথে অনুর পরিচয়ও করিয়ে দিয়েছিলাম। বাবা দেখে শুধু বলেছিলেন, তোমার যতগুলো বান্ধবী তাদের মধ্যে এই মেয়েটিই আমার পছন্দ। বাবারতো পছন্দ কিন্তু আমার যে বান্ধবীর বাইরে আর কোন সম্পর্ক তৈরীই হয়নি এখনো। খুব সহজেই আমি মানুষের সাথে মিশতে পারতাম। যে কারণে ক্যাম্পাসের সবাই ছিল আমার বন্ধু-বান্ধবীর তালিকায়। অনুর সাথে তখনও আমার বন্ধুত্বের সম্পর্কই ছিল। আর আমিও কিছুই বলিনি।
ক্যাম্পাসে একদিন সুইটি, লাভলী, রূপা, শামীমা, নীপা, নীরু, রিপনসহ অনেকেই বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। ক্লাশ শুরু হলে সবাই চলে যাচ্ছে ক্লাশ রুমে। অনুও যাওয়ার জন্য উঠতে যাবে এমন সময় হাত ধরে টান দিতেই আবার বসে পড়ে।
-কি রে টান দিয়ে বসিয়ে দিলি যে, ক্লাশে যাবি না।
-না যাব না।
-তুই যাবি না ঠিক আছে, আমি যাই।
-ক্লাশ তো জীবনে অনেক করলি, এবার বস্ আমরা একটু একা একা গল্প করি।
ও ঠিকই বসে পড়লো। একবার ভেবেছিলাম বাবার কথটা ওকে আজকে বলি। চেষ্টাও করেছি কিন্তু অনেক কথার ফাঁকে একটিবারের জন্যও বলতে পারলাম না। একটা বিশেষ কথা বলবো বলেছিলাম। কি সে বিশেষ কথা তা শোনার জন্য শান্ত স্বভাবের অনুকে অতটা আগ্রহী মনে হলো না। ওর অনাগ্রহ দেখে আমারও বলার ইচ্ছাটা মনের গভীরেই চাপা দিয়ে দিলাম। এভাবেই চলে কিছু দিন। একদিন ও কি মনে করে বলে, কিরে তোর ঐ বিশেষ কথাটা বললি না। আমি অনেক দুষ্টামি করি সবার সাথে সমান তালে কিন্তু ঐ একটা বিষয়ে কেন জানি নিজেকে গুছাতে পারছি না। আকারে ইঙ্গিতে বোঝাতে চেষ্টা করেছি অনেক বার। পিকনিক স্পটে বলবো বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। কিন্তু সারাদিন এত আড্ডা, এত কথা কিন্তু সেই কথা আর বলা হলো না। এরই মাঝে ক্লাশ বন্ধ হয়ে যায় এক মাসের জন্য। মনটা খারাপ লাগছে। দেখা হবে না ওর সাথে এ কেমন কথা। বন্ধুরা সেদিন লক্ষ্য করে আমার মন খারাপ। বান্ধবীরাতো বলেই ফেললো যে, আমরা মন খারাপ নিয়ে ক্যাম্পাসে আসি তোর সাথে আড্ডায় মনটা ভালো হবে ভেবে, আর আজ তোরই কিনা এ অবস্থা। কাউকে কিছুই বলতে পারিনি। যাবার বেলায় শুধু অনুকে বলি, আগামী শুক্রবার টিএসসি আসতে। কেন, সেই কথাটা বলবি নাকি? মনের মাঝে ধাক্কা খেলাম যেন। কিছু না বলে বাসায় চলে আসি। শুক্রবারে ঠিকই আসে ও। সন্ধ্যায় বিদায় নেয়ার আগ পর্যন্ত সে কথাটা কিন্তু ঠিকই বলা হয়নি। চলে যাবার সময় আমার হাতে একটা কাগজ গুজে দিয়ে রিক্সায় চড়ে বসে। কাগজটা একটা চিঠি। যে কথাটা বলা হয়নি সেটাই ও নিজের মত করে লিখে এনেছে। এর পর দীর্ঘদিন চলে শুধু পত্র মিতালী। প্রতিদিন ক্যাম্পাসে গিয়ে আমার লেখা চিঠি ওকে দিতাম আর ওরটা আমি নিয়ে বাসায় ফিরতাম। মজার ব্যাপার ছিল বন্ধু-বান্ধবীদের সবার প্রেমের খবর আমরা জানলেও আমাদেরটা কেউ ক্ষুণাক্ষরেও টের পায়নি। মাষ্টার্স পরীক্ষার পর বাবা অনুকে আংটি পড়িয়ে দেওয়ার পরদিন জেনেছে সবাই। সবাইতো অবাক। সুইটিতো মন্তব্য করেই বসলো, ‘আমরা একটা মশা খেয়ে তোর সামনে হজম করতে পারি না, আর তুই আস্ত গরু খেয়ে ফেললি টের পেলাম না’।
তার কিছু দিন পর বিয়ে। বিয়েতে অবশ্য বাবা আসতে পারেননি। পরিবারের কয়েকজন নিয়ে গিয়েছিলাম শুধু কাবিন করাতে। কিন্তু মুুরুব্বীদের কথায় ম্যাক্সের জিন্স প্যান্ট আর সাদা শার্ট পড়ে ঐ দিনই বিয়ে হয়ে যায়। বিয়েতে পাঞ্জাবি পড়তে না পরার দুঃখটা যদিও এখনো আছে। বিয়ের পর বাসর ঘর নিয়ে সে এক হাস্যকর পরিবেশ। বন্ধু সাদেক, বিপু, রিপন, বিপ্লব কোথা থেকে মরা, শুকিয়ে যাওয়া কয়েকটি ফুল দিয়ে সাজিয়ে দেয় আমাদের বাসর ঘর। ফুলে সুগন্ধ না থাকলেও বন্ধুদের ধন্যবাদ দিয়েছিলাম মনে মনে অনেক।
ট্রাভেল এজেন্সীতে চাকুরী নিয়ে বিয়ের কিছুদিন পরই আমরা নারিন্দা হলুদ মসজিদের বাসা ভাড়া নেই। আমাদের বাসাটি দুই রুমের ছিল। এরই মাঝে আমাদের বান্ধবী লাভলী প্রেম করে বিয়ে করে এবং ওঠে আমাদের বাসায়। ভালোই লাগছিল তখন। খুব মজা করতাম আমরা।
এক বছরের মাথায় কোল জুড়ে আসে স্রষ্টার সবচেয়ে বড় উপহার হিন্দোল। সেটা উনিশ’শ সাতানব্বই সালের ঘটনা। আজ দুই হাজার তের সাল। এর মাঝে জীবনের অনেক চড়াই উতরাই পার করেছি। চাকরি ছেড়ে বড়লোক হওয়ার নেশায় বাড়িতে সিনেমা হল করতে গেছি। পরিনামে মূলধন হারিয়ে নি:স্ব হয়েছি। ইউএনডিপির চাকরী পেয়েছি, পরবর্তীতে সরকারের একটি মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্য যেন আমার পিছু ছাড়েনি। শত চেষ্টা করেও চাকুরিতে স্থায়ী হতে পারিনি। যে কারণে সংসারের আর্থিক স্বচ্ছলতাও আসেনি। সৎ থাকার কারণেই হয়তো এমনটি হয়েছে। তা না হলে আমার সামনেই দেখেছি কতজনকে অবৈধভাবে টাকা কামিয়ে অর্থবিত্তের মালিক হতে। তবে আমার সংসার চলে যাচ্ছে কোন না কোনভাবে।
সংসার জীবনে আমার কাছে অনুর বাড়তি কোন চাহিদা ছিল না কখনোই, এখনো নেই। স্বর্ণের কোন অলংকার আমি আজ পর্যন্ত বানিয়ে দিতে পারিনি তাতে কোন আক্ষেপ নাই, বেলী ফুলের দু’চারটা মালা দিলে তা হতো ওর কাছে অনেক বড় পাওয়া, অনেক খুশীর ব্যাপার। ঘরে বাজার নেই। কোন সমস্যা নেই ডিম দিয়েই চালিয়ে নিচ্ছে। ডিম নেই তো কি হয়েছে আলু ভর্তা আর ডাল হলেও ওর অরুচি হয়না। আর ছেলেটাও হয়েছে মায়ের মতোই। আজ পর্যন্ত কোন চাহিদার কথা শুনিনি হিন্দোলের মুখে। আজতো বড়ই হয়েছে, বাবাকে বুঝতে শিখেছে।
বর্তমানে আর্থিক দৈন্যতা যেন একটু বেশীই দেখা দিয়েছে। সংসারের প্রয়োজনীয়তা মিটাতে পারছি না। কিন্তু ঘরের মানুষ, মনের মানুষ যখন এ নিয়ে অভিযোগ না করে, সবকিছুই স্বাভাবিক হিসেবে নিয়ে তার সাথেই তাল মিলিয়ে চলে তবে সে সংসার স্বর্গের সাথেই তুলনা করা চলে। আমি সে রকম সংসারেই ভালো আছি। বাবার পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করে বউ ছেলেকে নিয়ে অর্থনৈতিক দৈন্যতার মাঝেও সে সুখ আমি অনুভব করি, তা হয়তো অনেকেই প্রাচুর্যের মধ্যে থেকেও পায় না। বিত্ত বৈভব সামাজিক অবস্থান তুলে ধরলেও, সংসারের প্রকৃত সুখ লক্ষী, নির্লোভ বউ ছাড়া কখনোই সম্ভব না। ক’দিন আগেই ছিল আমাদের বিবাহ বার্ষিকী। কিন্তু আমার একটুকুও মনে ছিল না এদিনটার কথা। কেন মনে ছিল না সেটা অনু ঠিকই টের পেয়েছে। সে জন্য কোন রকম মন খারাপ বা অভিযোগ করেনি আমার কাছে। তারপরও বলবো আমি সুখে আছি। অর্থবিত্তের সুখে না, আমি আছি অনু আর হিন্দোলের পরম সহিষ্ণুতার সুখে, অনাবিল নির্লোভ ভালোবাসায় ভরপুর একটা সংসারের সুখে।
-কি হলো খাচেছা না যে-অনুর প্রশ্ন।
-হ্যা কি হলো ভাইয়া খাচ্ছ না কেন?-শেলীর প্রশ্ন।
সামনে দেখি সবই আমার প্রিয় খাবার। কিন্তু আমি তো এগুলো অর্ডার দেইনি। বুঝতে পারলাম বড়লোকের দুলালী, ধনাঢ্য স্বামীর স্ত্রীর অর্ডারে এগুলো এসেছে। তাকিয়ে আছে শেলী আমার দিকে আনমনা হয়ে। মানুষের উপরে দেখে ভিতরটা বোঝা যায় না। দু’এক চামচ খেয়েই হাত মুছে নেয় শেলী। ওয়াসরুমে গিয়ে মুখ ধুয়ে আসে। তাহলে কি চোখের কোনে লোনা পানি চলে এসেছিল?
বিলটা আর আমাকে দিতে হয়নি। কৌশিক চৌধুরী পরিশোধ করেছে। একত্রেই নামি আমরা হোটেল থেকে। হোটেলের সামনে প্রাডো গাড়ী দাঁড়িয়ে। স্বামী মেয়েকে নিয়ে গাড়িতে উঠছে। নামতে নামতে এবার বাম কানে টোকা দিয়ে শেলী বলে, তুমিই সত্যিকারের সুখে আছো। আর এই সুখটাই চেয়েছিলাম আমি। পেলাম না। আমি আছি লোক দেখানো সুখে। দোয়া করি তুমি আরও সুখে থেকো, ভালো থেকো।
পিবিএ/এফএস