রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের হাসান নগর এলাকার ছাপাখানা ব্যবসায়ী মো. নূর আলম হত্যার ঘটনায় কারখানাটির কর্মচারী মিরাজ মিয়াসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত অপর দুজন হলেন মিরাজের বন্ধু মো. শিপন ওরফে সম্রাট (২৫) ও মো. রিফাত (১৯)।
পুলিশ বলছে, গত শুক্রবার রাতে মিরাজ তার বন্ধু শিপন, রিফাতসহ অজ্ঞাত ২/৩ জনকে নিয়ে কারখানার ভেতর জুয়ার আড্ডা বসিয়েছিল। ভোররাতে কারখানার মালিক নূর আলম তাদেরকে জুয়া খেলায় বাঁধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান লালবাগ বিভাগের উপ কমিশনার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
তিনি বলেন, মো.নূর আলম কামরাঙ্গীরচর থানার হাসান নগর আন্ডারী মোড়ে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ফেব্রিক্সের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। গত ৬ ডিসেম্বর সকালে তিনি গ্রামের বাড়িতে যাবেন বলে তার স্ত্রীকে জানান। কিন্তু এরপর থেকে নূর আলমের ফোনটি বন্ধ পায় তার পরিবার। এ ঘটনায় ভিকটিমের জামাতা মো. আতাউল্লাহ খান সজিব কামরাঙ্গীরচর থানাকে বিষয়টি জানান।
পরবর্তীতে প্রাথমিক তদন্ত এবং গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে ছাপাখানা থেকে কর্মচারী মিরাজকে গ্রেফতার করা হয়। একই দিন কামরাঙ্গীরচরের ঝাউরাহাটি থেকে রিফাতকে ও কোতয়ালী থানার সদরঘাট এলাকা থেকে শিপনকে গ্রেফতার করা হয়।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লালবাগ বিভাগের ডিসি জানান, গত শুক্রবার রাতে গ্রেফতারকৃত শিপন, মিরাজ, রিফাত ও পলাতক জিহাদ সহ অজ্ঞাত ২/৩ জনকে নিয়ে কারখানার মধ্যে তাসের জুয়া খেলছিল। তাদেরকে খেলায় বাধা দিলে নূর আলমের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে চাকু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে এবং মৃতদেহ বাথরুমে নিয়ে দুই খণ্ড করে তারা। ভিকটিমের মৃতদেহ যাতে কেউ খুঁজে না পায় সেজন্য মৃতদেহ গুম করার উদ্দেশে মৃতদেহের খন্ড দুটি পলিথিন ও কাপড় দ্বারা পেঁচিয়ে একটি বস্তায় ভরে ছাপাখানার ভেতরে টেবিলের নিচের মেঝে ভেঙ্গে মাটি চাপা দেয়। এরপর জায়গাটি বালু ও সিমেন্ট দ্বারা ঢালাই করে।
এ ঘটনায় নিহতের জামাতা আতাউল্লাহ খান সজিব বাদী হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
ডিসি জসীম জানিয়েছেন, এ ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অন্যান্য আসমিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।