পিবিএ ডেস্ক: ভাত বাঙালির প্রাণ। রান্না করা ভাত বেঁচে গেলে অনেকেই পরের বার খাবারের জন্য রেখে দেয়।পরের বার এই ঠাণ্ডা হওয়া ভাত আমরা গরম করে খেয়ে থাকি। আবার অনেক সময় রেস্তারাঁয় খেতে গেলেও বিশেষ করে ফ্রাইড রাইস যেগুলো বেঁচে যায়,সেগুলো প্যাকেট করে দিতে বলা হয় যেন বাড়িতে এনে পরে একসময় খাওয়া যায়। প্রথমবার রান্না করা খাবার পরের বার গরম করতে গেলেই সমস্যার সৃষ্টি হয়।রান্না করা ভাত দ্বিতীয়বার গরম করে খাওয়া মারাত্মক অসুস্থতার কারণ হতে পারে। খাবার যেগুলো বেঁচে যাচ্ছে সেগুলো থেকে মারাত্মক বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকে। একধরনের বিশেষ ব্যাকটেরিয়া এই বিষক্রিয়ার জন্য দায়ী। ব্যাকটেরিয়াটির নাম ব্যাসিলাস সিরিয়াস-যেটি “সি” দিয়ে শুরু হয়।
ফ্রাইড রাইস সাধারণত শর্করা মিশ্রিত আমিষ। খাবার ঠাণ্ডা হওয়ার ১ ঘন্টা পর খাবার অরক্ষিত থাকলে সেটি ফ্রিজে ৪০ক্কফারেনহাইট তাপমাত্রায় রাখতে হবে নাহলে এ ব্যাকটেরিয়া নিজের অবস্থান নেয় এবং সেখানে ডিম পারতে শুরু করে। যখন ঠাণ্ডা খাবারকে তাপ দেওয়া হয় তখন ডিমগুলো ফেটে যায়, তখন এখান থেকে টকসিন বা বিষ তৈরি হয়। এটি ২ রকমের বিষ তৈরি করে।—টকসিন এ এবং টকসিন বি। টকসিন গুলো কোষের মধ্যে গিয়ে বিষক্রিয়া তৈরি করে।
যখন এই ঠাণ্ডা ভাত গুলো গরম করা হয়,তখন পর্যাপ্ত তাপমাত্রায় গরম করা হয়, যার ফলে টকসিন এ এবং টকসিন বি ফেটে গিয়ে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
শর্করা জাতীয় ভাত বা ফ্রাইড রাইসে এই বিষক্রিয়ার সৃষ্টি বেশি হয় যেখানে বিভিন্ন রকমের আমিষও থাকে। যেমন:পাস্তা,নুডলস ইত্যাদি। এ খাবার গুলো থেকে টকসিন বি পাকস্থলীতে গিয়ে ৩০ মিনিট থেকে ৬ ঘন্টার মধ্যে পাকস্থলীতে বিষক্রিয়া শুরু করে।
এর ফলে রোগীর জ্বর জ্বর ভাব,প্রচন্ডাকারে বমি হতে থাকে। বমি থামতেই চায় না। ১দিন পর্যন্ত বমি থাকে। অর্থাৎ বিষাক্ত ভাত যেটাকে খালি চোখে দেখা যাচ্ছে না, সেটা খাবার আধা ঘন্টার মধ্যে যে অস্বস্তি শুরু হয়ে যায়, এটি টকসিন বি সংক্রান্ত।
টকসিন “এ” সাধারণত অন্ত্রে গিয়ে তৈরি হয়। অর্থাৎ দূষিত খাবার খাওয়ার পর ৬ থেকে ১৫ ঘন্টার মধ্যে এটি বিষক্রিয়া তৈরি করে এবং ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত সাধারণত অন্ত্রের বিষক্রিয়া থাকে।
সাধারণত অন্ত্রের বিষক্রিয়া তৈরি হয় সুপ জাতীয় খাবার, শাক-সবজি,পোডিং এবং দুগ্ধ জাতীয় খাবার থেকে।
ফলে ডায়রিয়া শুরু হয়,জ্বর জ্বর ভাব শুরু হয়। এটি কিছু মানুষের স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি এবং কিডনির ক্ষতি পর্যন্ত করে থাকে, যাদের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কম থাকে।
আমরা যারা ভাতের উপর নির্ভরশীল তাদের সবারই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ১ ঘন্টার বেশি খাবার অরক্ষিত রাখা যাবে না এবং প্রতি ১ কাপ ভাতে ২ চামচ পরিমান পানি দিয়ে ভাতের দলা ভেঙে অল্প তাপমাত্রায় ধীরে ধীরে গরম করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।তাই রান্না করা ভাত দ্বিতীয়বার গরম করার ক্ষেত্রে সবাইকেই সাবধান হতে হবে।
পিবিএ/এমএসএম