জেনে নিন, কম ঘুমের কুফল

 

পিবিএ ডেস্কঃ ঘুমের বড় কদর কম। সেই ছোট থেকে দেখে আসছি একটু ঘুমলেই মায়ের কান মোলা আর বাবার বকুনি জুটত ভাগ্যে। সকাল সকাল উঠিয়ে বসিয়ে দিত পাটি গণিতের বই নিয়ে। এদিকে রাত ১২ অবদি চলতো পড়া পড়া খেলা। ফলে ঘুমের কোটা কোনও দিনই পূর্ণ হত না। তখন ভবতাম একবার বড় হয়ে যাই, তাহলেই কেল্লাফতে! তখন তো কেউ আর সাতসকালে ঘুম ভাঙাবে না। কিন্তু বিধি বাম! এখন তো অফিসের চাপে আরো সকালে উঠতে হয়। ফলে ঘুমের ঘন্টা নেমে এসেছে ৬ থেকে ৭-এ। এমন অবস্থা যে শুধুমাত্র আমার, তা নয়। অনেকেই যে এমন সমস্যায় ভুগছেন, তা বলে দিতে হবে না। কিন্তু ঘুম কম হওয়া একেবারেই ঠিক নয়। কেন জানেন? একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে ৬ ঘন্টার কম সময় ঘুমালে শরীরের একাধিক ক্ষতি হয়। আর এমনটা চলতে থাকলে এক সময়ে গিয়ে আয়ু কমতে শুরু করে। তাই তো কম ঘুমনোর অভ্যাস ছাড়ুন, না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!

কম ঘুমলে হয় কীঃ সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে দীর্ঘ সময় ধরে ৬ ঘন্টা বা তার কম সময় ঘুমলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ওবেসিটি এবং কোলেস্টেরল বৃদ্ধির মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় দিগুণ বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। অন্যদিকে যারা প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমান, তাদের মধ্যে এমন রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে খুব একটা দেখা যায় না। সেই সঙ্গে হঠাৎ মৃত্যুর আশঙ্কাও এদের বাকিদের তুলনায় কম থাকে।

হার্টের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটেঃ চিকিৎসকদের মতে, জীবনযাত্রা বা অন্য নানা কারণে যাদের এমনিতেই হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে, তারা যদি কম সময় ঘুমোন, তাহলে এই সম্ভবনা আরও বেড়ে যায়। কারণ ঘুমের পরিধি যত কমতে থাকে, তত হার্টের কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করে। ফলে হার্টের রোগ তো হয়ই, সেই সঙ্গে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ ঠিক মতো না হওয়ার কারণে নানাবিধ ব্রেন ডিজিজ হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের তত্ত্বাবধানে ১৩৪৪ জন প্রাপ্ত বয়স্কের উপর একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। তাতে সবাইকে এক রাত্রি “স্লিপ লাইব্রেরি”তে কাটানোর অনুরোধ করা হয়। সারা রাত প্রত্যেকের ঘুমের প্যাটার্ন লক্ষ করার পর গবেষকরা জানতে পেরেছিলেন, পরীক্ষায় যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে প্রায় ৩৯.২ শতাংশেরই ওজন বেশি। সেই সঙ্গে কোলেস্টরল এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যাও রয়েছে। কারণ তাদের প্রত্যেকেরই রাতের বেলা ঠিক মতো ঘুম হয় না। এবার বুঝতে পারছেন তো শরীরে সুস্থ রাখতে ঘুম হল একটি প্রয়োজনীয় অস্ত্র, যাকে হারনো মানে মৃত্যু নিশ্চিত!

তাহলে উপায়ঃ যে কেরেই হোক দৈনিক ৭-৮ ঘন্টার কম ঘুমনো কোনও ভাবেই চলবে না। তাই তো রাত জেগে ফেসবুক বা সোসাল মিডিয়ায় ঘোরাঘুরি বন্ধ করতে হবে। কেন কি সমীক্ষা বলছে ফোন ঘাটার চক্করেই বেশিরভাগের ঘুমতে ঘুমতে অনেক দেরি হয়ে যায়। এদিকে অফিস যাওয়ার চক্করে সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হয়। ফলে ঘুমের কোটা কমতে শুরু করে। সেই কারণেই রাত ১১ টার পর ফোনকে টাটা বাইবাই ববলে ঘুমনোর চেষ্টা চালাতে হবে। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!

পিবিএ/এমআর

আরও পড়ুন...