পিবিএ ডেস্ক; স্বপ্নদোষ হলো একজন নারী-পুরুষের ঘুমের মধ্যে বীর্যপাতের অভিজ্ঞতা। এটাকে ‘ভেজাস্বপ্ন’ও বলা হয়। ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার প্রাথমিক বছরগুলোতে স্বপ্নদোষ খুব সাধারণ।তবে বয়ঃসন্ধিকালের পরে যেকোনো সময় স্বপ্নদোষ হতে পারে। এটার সাথে যৌন উত্তেজক স্বপ্নের সম্পর্ক থাকতে পারে, আবার নাও পারে।
আবার পুরুষদের উত্থান ছাড়াই স্বপ্নদোষ ঘটতে পারে। ঘুম থেকে জাগার সময় কিংবা সাধারণ ঘুমের মধ্যে যে স্বপ্নদোষ হয়, তাকে কখনো কখনো ‘সেক্স ড্রিম’ বলে। মহিলাদের ঘুমের মধ্যে চরম পুলক লাভের অভিজ্ঞতা ঘটতে পারে। পুরুষদের বেলায় স্বপ্নদোষ হয়েছে কিনা তা কাপড়ে লেগে থাকা প্রমান থেকে সহজেই অনুমান করা সম্ভব হলেও নারীদের বেলায় অনুমান তুলনামূলক জটিল,কারন স্বপ্ন দোষের ফলে নারীর যোনিপথ থেকে নির্গত বীর্যরস কাপড়ে লাগার আগেই গঠনগত কারনে যোনিতেই শুকিয়ে যায়।
কিছু নারী-পুরুষ কেবল একটা নির্দিষ্ট বয়সে এ ধরনের স্বপ্ন দেখেন, পক্ষান্তরে অন্যদের বেলায় বয়ঃসন্ধিকালের পর থেকেই সারাজীবন এ ধরনের স্বপ্ন দেখার অভিজ্ঞতা বাস্তব প্রমানিত। ঘন ঘন স্বপ্নদোষের সাথে ঘনঘন হস্তমৈথুন করার সুনিশ্চিত সম্পর্ক নেই। বিশ্বখ্যাত যৌন গবেষক আলফ্রেড কিনসে গবেষনায় দেখেছেন, ‘ঘনঘন হস্তমৈথুন এবং ঘনঘন যৌন উত্তেজক স্বপ্নের মধ্যে কিছুটা সম্পর্ক থাকতে পারে। সাধারণভাবে যেসব নারী-পুরুষের ঘনঘন স্বপ্নদোষ হয়, তারা কম হস্তমৈথুন করেন। এদের অনেকে গর্বিত হন এই ভেবে যে, তাদের ঘনঘন স্বপ্নদোষ হয়, এ কারণে তারা হস্তমৈথুন করেন না। অথচ এদের বেলায় উল্টোটা সত্যি।
প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষের স্বপ্নদোষের মাত্রা বেড়ে যায় যদি তিনি টেস্টোসটেরনসমৃদ্ধ ওষুধ গ্রহণ করেন। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কিছুসংখ্যক নারী-পুরুষের দেহে টেস্টোসটেরনের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে তাদের স্বপ্নদোষের মাত্রাও মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। ১৭ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ শতাংশে।
অনেকে স্বপ্নদোষ হওয়া মারাত্মক রোগ বলে মনে করেন। তাদের ধারণা, যৌবনে এটা একটা প্রধান যৌন সম্পর্কিত রোগ। কেউ কেউ নানা ধরনের চিকিৎসা করিয়ে থাকেন, এমনকি স্বপ্নদোষ ও হস্তমৈথুনের জন্য প্রচলিত ব্যয়বহুল চিকিৎসা করান। এদের অজ্ঞতার সুযোগ নেন অনেকে। স্বপ্নদোষকে ভয়াবহ রোগ হিসেবে অভিহিত করে রোগীর মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন।
পিবিএ/বিএইচ
স্বপ্নদোষ থেকে বাঁচার উপায়:-
- পর্ন মুভি-ভিডিও ক্লিপ দেখা থেকে বিরত থাকুন।
- বিবাহিত নারী-পুরুষ যাদের স্বামী-স্ত্রী প্রবাসে থাকেন তারা যৌন চিন্তা বাদ দিয়ে পরিবার-সমাজ নিয়ে পজেটিভ চিন্তা করুন।
- রাস্তা-ঘাটে চলার সময় পুরুষগন দৃষ্টি সংযত রাখুন এবং নারীগণ সাবলীল পোষাক পরিধান করুন,যাতে আপনার শরীরের বিশেষ দৃশ্য পুরুষের যৌন উত্তেজনার কারন না হয়।
- ঘুমাতে যাওয়ার আগে এমন পোষাক পরিধান করুন যা আপনাকে যৌন সুড়সুড়ি দিবেনা।
- সবসময় ওযু করে নিজেকে পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রাখুন।
- ঘুমাতে যাওয়ার আগে প্রস্রাব করে নিন। যদিও এটি স্বপ্নদোষের চিকিৎসা নয়। তবে এটি স্বপ্নদোষের চাপ কমাতে শরিরকে সাহায্য করে।
- ঘুমাতে যাওয়ার আগে এককাপ ঋষি পাতা(sage leaves- Google এ search করে দেকতে পারেন। হয়ত এটি আপনার অঞ্চলে ভিন্ন নামে পরিচিত) এর চা পান করলে অতিরিক্ত হস্থমৈথুন জনিত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
- অশ্বগন্ধা স্বপ্নদোষে সৃষ্ট সমস্যার উপকরণ সহ সর্বোপরি যৌন স্বাস্থ্য শুদ্ধি হরমোন ব্যালেন্স এবং হস্থমৈথুন এর ফলে দুর্বল হয়ে যাওয়া পেশি শক্তি ফিরে পাওয়া ও ছোট খাটো ইঞ্জুরি সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।
- ঘুমানোর আগে অতিরিক্ত পানি পান করবেন না।যদি সামান্য পরিমাণ প্রস্রাবের লক্ষণও থাকে বিছানায় যাওয়ার আগে প্রস্রাব করে নিন।
- রাতে খাবার পর পরই ঘুমাতে যাবেন না। কিছুক্ষণ হাটা হাটি করুন।
- প্রতিদিন সামান্য করে হলেও পুদিনা পাতা অথবা মিছরি খাবার অভ্যাস করুন।
- পবিত্র কোরানের ৩০ নাম্বার পারার ” সুরা তারিক” পরে শয়ন করুন। হালকা জিকির এবং অন্যান্য দোয়া পরে ঘুমাতে গেলে আল্লাহর রহমতে স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।