পিবিএ ডেস্কঃ ধূমপানের অভ্যাস ছাড়তে চেয়েও বারবার ব্যর্থতার মুখ দেখতে হয়েছে অসংখ্য মানুষকে। ধূমপান ছাড়ার ছ’মাস, এক বছর কাটানোর পরও ফের ধূমপানের আসক্তিতে জড়িয়ে পড়েছেন অনেকেই। ধূমপানের এই অভ্যাস বা পরোক্ষ ধূমপানও তিলে তিলে মারাত্মক ক্ষতি করছে আমাদের ফুসফুসের। তবে শুধু ধূমপানের অভ্যাসই নয়, বাতাসে বাড়তে থাকা দূষণের ফলেও ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হয়। কমে আসে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা। কিন্তু এমন কিছু খাবার বা মশলা রয়েছে যেগুলি দূষণ বা ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আমাদের ফুসফুসকে রক্ষা করতে অনেকটাই সক্ষম। সুতরাং, ধূমপানের অভ্যাস ছাড়ার চেষ্টা করার পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় কয়েকটি শাক-সবজি বা মশলার সংযোজন, কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে সহজেই ফুসফুসকে সুস্থ রাখা সম্ভব। আসুন এ সম্পর্কে সবিস্তারে জেনে নেওয়া যাক…
ব্রকোলিঃ ফুলকপির মতো দেখতে সবুজ রঙের এই সবজিটি এখন যে কোনও বাজারেই পাওয়া যায়। ব্রোকলিতে রয়েছে ভিটামিন সি, ফাইবার, আয়রন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরকে সামগ্রিকভাবে সুস্থ রাখে। ভিটামিন সি শরীরের পরিপাকতন্ত্রকে ঠিক রাখে। সুতরাং, ব্রকোলি খেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিক মতো হবে আর ফুসফুসে নিকোটিনের খারাপ প্রভাবও কম পড়বে!
কমলা লেবুঃ কমলা লেবু খেতে কে না ভালবাসেন! নিকোটিন শরীরে গেলে ভিটামিন সি-এর পরিমাণ কমিয়ে দেয়। শরীরে ভিটামিন সি-এর সেই ঘাটতি পূরণ করতে পারে কমলা লেবু। কারণ, কমলা লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। নিকোটিন থেকে যে ক্লান্তি এবং শারীরিক অস্বস্তি তৈরি হয়, কমলা লেবুর এক কোয়া খেলে তা সহজেই কেটে যাবে।
মধুঃ মধুতে থাকা বেশ কিছু ভিটামিন, উত্সেচক এবং প্রোটিন শরীর থেকে নিকোটিন বের করে দেওয়ার পাশাপাশি ধূমপানের ইচ্ছাকেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণ মধু সেবনের মাধ্যমে ধূমপানের অভ্যাস কাটাতে সুবিধা হয়।
পালং শাকঃ পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ফাইবার ও মিনারেল যা শরীর থেকে নিকোটিন বের করে দিতে সাহায্য করে!
বাঁধাকপিঃ বাঁধাকপিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা রক্ত পরিষ্কার করে শরীরকে সুস্থ এবং তরতাজা রাখতে সাহায্য করে।
আঙুরের রসঃ ধূমপানের ফলে শরীরে নিকোটিনের মাধ্যমে জমতে থাকা টক্সিন ফুসফুসের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এই টক্সিন শরীর থেকে বেরিয়ে গেলেই ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আঙুরের রস ফুসফুসকে টক্সিন-মুক্ত করতে অত্যন্ত কার্যকর। শুধু তাই নয়, আঙুরের রস ধূমপানের ইচ্ছাও কমাতে সাহায্য করে।
মূলাঃ ১ গ্লাস মূলার রসের সঙ্গে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে দিনে ২ বার করে নিয়মিত খেতে পারলে ধূমপানের ইচ্ছা অনেকটাই কমে যায়। শুধু ধূমপানের অভ্যাসই নয়, যে কোনও ধরনের নেশামুক্তির ক্ষেত্রে আয়ুর্বেদিক চিকিত্সায় যুগ যুগ ধরে মূলার উপরই ভরসা রাখা হয়।
মরিচ গুঁড়োঃ একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, যদি নিয়মিত মরিচ গুঁড়ো বা মরিচ খাওয়া যায়, তাহলে ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, ধূমপান করার ইচ্ছাও কমতে শুরু করে। প্রতিদিন এক গ্লাস পানিতে এক চিমটে মরিচের গুঁড়ো ফেলে খেতে পারলে দারুন উপকার পাওয়া যায়।
আদাঃ ধূমপানের অভ্যাস ছাড়াতে আদার রস অত্যন্ত কার্যকর! আদা চা বা কাঁচা আদা নিয়মিত খেলে ধীরে ধীরে ধূমপানের ইচ্ছে কমে যায়।
যে কোনও নেশা বা আসক্তি কাটানোর জন্য চাই ধৈর্য আর মনোবল। মনের জোরে ধৈর্য ধরে এই পদ্ধতিগুলির যে কোনও একটি ঠিক মতো মেনে চলতে পারলেই সুফল মিলবেই। এতে ধূমপান ও দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ফুসফুসকে রক্ষা করা যাবে।
পিবিএ/এমআর