জেনে নিন, হালখাতার ইতি কথা

halkhata-PBA

পিবিএ ডেস্ক: হিসাবের খাতা হাল নাগাদ করা থেকেই ‘হালখাতা’র উদ্ভব। গ্রাম-নগরের ব্যবসায়ীরা পুরনো খাতা তুলে রেখে পহেলা বৈশাখ বা বাংলা সনের প্রথম দিনে খুলতেন হিসাবের নতুন খাতা। হালখাতার প্রচলন ঠিক কবে থেকে শুরু হয় তা নিয়ে দু-ধরনের তথ্য পাওয়া যায়।

কেউ বলেন, গৌড়ের রাজা শশাঙ্কের আমল থেকে শুরু, আবার কেউ বলেন, মুঘল সম্রাট আকবরের আমল থেকে। তবে দ্বিমত যাই থাক, হালখাতা খাজনা আদায় থেকে শুরু হয়েছে। জমিদারী আমল শেষে এটি ব্যবসায়ীরা এখন পালন করে থাকেন।

বাংলা নববর্ষের প্রথমদিন ব্যবসায়ীরা তাদের দেনা-পাওনার হিসেব সমন্বয় করে নতুন খাতা খোলেন। এ জন্য ক্রেতাদের পাওনা শোধ করার অনুরোধ করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। পুরোনো হিসেবের খাতা বাদ দিয়ে নতুন বছরে নতুন খাতায় আবারো নতুন করে হিসেব হালনাগাদ করা হয়। এদিন নতুন হিসেবের সাথে ক্রেতাদের মিষ্টিমুখ করানো হয়। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে এখনও হালখাতার বেশ প্রচলন লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে পুরান ঢাকার শ্যাম বাজার, ফরাশগঞ্জ, মৌলভী বাজার, তাঁতিবাজার, শাঁখারিবাজার এবং চকবাজারে পয়লা বৈশাখে ঘটা করে এখনও হালখাতা উদযাপন করা হয়।

ইতিহাস বলে একটা সময় ছিল হালখাতার আমন্ত্রণ পত্র লেখা হতো তালপাতায়। কাগজের প্রচলন হলে কাগজে লিখে দাওয়াত দেয়া হতো পয়লা বৈশাখের এই আয়োজনে। বর্তমানে নানান ডিজাইনে আধুনিক প্রযুক্তির মুদ্রণ যন্ত্রে ছাপা দাওয়াত কার্ড পৌঁছে যায় ক্রেতার কাছে।

এখন পয়লা বৈশাখ জাঁকজমকের সঙ্গে পালন করা হলেও আধুনিকতার ছোঁয়া ও কালের বিবর্তনে অনেকটাই বিলুপ্তির পথে এক সময়ের জনপ্রিয় ও প্রাণের উৎসব হালখাতা। এক সময় হালখাতায় ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের গরম মিষ্টি, জিলেপি ও অন্যান্য খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করতেন। সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে খাবারের আয়োজনেও পরিবর্তন এসেছে। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী হোটেল বুকিং করে রেখেছেন এবং টোকেনের ব্যবস্থা করেছেন। ক্রেতারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দেনা মিটিয়ে একটি টোকেন দেখিয়ে হোটেলগুলো থেকে খাবার নেবেন। রাখা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের দামি ও আকর্ষণীয় উপহারের ব্যবস্থা

 

পিবিএ/এফএস

আরও পড়ুন...