জয় বাংলা ম্যারাথন: অংশ নিচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার দৌড়বিদ

আগামী ৭ই জুন (শুক্রবার) ভোর ৫টায় ঢাকার হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে “জয় বাংলা ম্যারাথন-২০২৪” শিরোনামে হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগিতা।

হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় ৪টি কাটাগরিতে মোট ৫ হাজার প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও অংশগ্রহণেচ্ছু শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুরোধে এবং ভালো মানের সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ৩ হাজার ৫০০ তে সীমিত রাখা হয়েছে। ম্যারাথনের ওয়েবসাইট (joybanglamarathon.com) এর মাধ্যমে প্রতিযোগীরা রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেন। গত ২৫ মে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বুধবার (৫ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ও সাইক্লিং ক্লাবের সভাপতি ও পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআিই) প্রধান অ্যাডিশনাল আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার।

সংবাদ সম্মেলন শেষে ম্যারাথন আয়োজনের বিস্তারিত তথ্যাদি উপস্থাপন করা এবং কিট ডিসট্রিবিউশন কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতিটি ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ১০ জনকে পুরস্কার প্রদানসহ অংশগ্রহণকারীদের জন্য রয়েছে টি-শার্ট, মেডেল ও সার্টিফিকেট। ১৬ বছর থেকে ৫০ বছর (পুরুষ ও মহিলা) বিজয়ীদের পুরস্কার হিসেবে রয়েছে- ১ম পুরস্কার ১ লাখ টাকা, ২য় পুরস্কার ৭৫ হাজার টাকা, ৩য় পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা, ৪র্থ পুরস্কার ৪০ হাজার টাকা, ৫ম পুরস্কার ৩৫ হাজার টাকা, ৬ষ্ঠ পুরস্কার ৩০ হাজার টাকা, ৭ম পুরস্কার ২৫, হাজার টাকা, ৮ম পুরস্কার ২০ হাজার টাকা, ১ম পুরস্কার ১৫ হাজার টাকা, ১০ম পুরস্কার ১০ হাজার টাকা। ৫১ বছর থেকে তদূর্ধা (পুরুষ ও মহিলা) বিজয়ীদের পুরস্কার হিসেবে রয়েছে- ১ম পুরস্কার ১ লাখ টাকা, ২য় পুরস্কার ৭৫ হাজার টাকা, ৩য় পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা, ৪র্থ পুরস্কার ৪০ হাজার টাকা, ৫ম পুরস্কার ৩৫ হাজার টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডিশনাল আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটির ও সাইক্লিং ক্লাবের উদ্যোগে হাফ ম্যারাথন আয়োজন করা হচ্ছে। ৭ জুন নির্ধারণ করা হয়েছে তারিখটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক গুরুত্বপর্ণ মুহূর্ত। এই তারিখটি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণের জন্য বিখ্যাতভাবে স্মরণ করা হয়। ‘৭ই মার্চের ভাষণ নামে পরিচিত এই ভাষণটি বাঙালি জনগণকে জাগিয়ে তুলতে এবং স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন জোগাড় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ‘জয় বাংলা’ স্লোগান মুক্তিযুদ্ধে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। তাই ৭ই মার্চ, ১৯৭১, বাংলাদেশের স্বাধীনতার দিকে যাত্রার সূচনার প্রতীক এবং বাঙালি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও সার্বভৌমত্বের অন্বেষণে তাদের সাহস, সংকল্প এবং স্থিতিস্থাপকতার স্মারক হিসেবে কাজ করে।

এর আগে, ১৯৬৬ সালের ৭ই জুন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃতে ছয় দফা আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথে এখনও একটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট অব রেফারেন্স। দিনগুলোর তাৎপর্য স্মরণে রাখতে জয় বাংলা ম্যারাথন নামকরণ করা হয়েছে। এই ম্যারাথনের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্যে একটি সুস্থ ও সক্রিয় লাইফ স্টাইল চর্চায় উদ্বুদ্ধ করা।

তিনি বলেন, “জয় বাংলা ম্যারাথন” প্রতিযোগীদেরকে ৩ ঘণ্টা ৪০ মিনিটের মধ্যে ২১,০৯৫ কিলোমিটির পথ পাড়ি দিতে হবে। দৌড় শুরু হবে হাতিরঝিলের মেরুল বাড্ডা পয়েন্টে এবং সমাপ্ত হবে হাতিরঝিলের এম্ফিথিয়েটারের সামনে। প্রতিযোগিদের ওয়ার্মপ্রাণ সেশন চলবে ভোর ৪.৩০-৪.৪৫ ঘটিকা পর্যন্ত এবং লাইন আপ হবে ভোর ৪.৪৬ ঘটিকায়। দৌড় শুরু হবে ভোর ৫ ঘটিকায়।

তিনি বলেন, ম্যারাথনের সময় পুরো ট্র্যাক জুড়ে দৌড়বিদদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে একাধিক মেডিকেল টিম এবং হাইড্রেশন পয়েন্ট, অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ডিএমপির ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগ কর্তৃক ম্যারাথন চলাকালীন সময়ে বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

বনজ কুমার মজুমদার বলেন, মূলত ৫ ও ৬ জুন ঢাকার ইস্কাটন গার্ডেন রোডে পুলিশ কনভেনশন হলে থেকে সকাল ১০ টা থেকে রাত্র ৯ টা পর্যন্ত অংশগ্রহণকারীরা কিট সংগ্রহ করতে পারবেন।

ম্যারাথন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ পুলিশ ক্রীড়া পরিষদের সভাপতি ও পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

দুটি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ও সাইক্লিং ক্লাবের সভাপতি ও পিবিআই’র অ্যাডিশনাল আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার। অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার ও বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ও সাইক্লিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- আয়োজক কমিটির সভাপতি এবং সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান, কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস), ডিএমপি মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ও সাইক্লিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান প্রমুখ।

আরও পড়ুন...