জয় হলো বাবার প্রতি মেয়ের ভালোবাসার

পিবিএ, নারায়ণগঞ্জ: অবশেষে ছোট্ট মহিমার ভালোবাসার জয় হলো। মহিমা কাছে পেল তার বাবা মজিবরকে। গত বুধবার ‘বাবার প্রতি ভালোবাসা’ শিরোনামে একটি মানাবিক সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়। ছয় বছরের একটা শিশু ১০ কিলোমিটার হেঁটে কারাগারে আটক তার বাবা মজিবরকে দেখতে এসেছে এমন খবর প্রকাশ পায়। সংবাদটি প্রকাশের পর বুধবার মজিবরের আইনজীবী আদালতে তার জামিনের আবেদন করেন। জামিন আবেদনে তিনি নয়া দিগন্তের সংবাদটি আদালতের নজরে আনেন। পরে আদালত মজিবরে জামিন মঞ্জুর করে। ওইদিন সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হন মজিবর। বাবাকে কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত ছোট্ট মহিমা। ছোট্ট মেয়ে মহিমার ভালেবাসা পেলেও মজিবরের কষ্টের শেষ নেই । মাত্র ছয় দিন আগে মারা গেছে মজিবরের মা রূপবান বেগম। জেলে থাকার কারণে মায়ের নামাজে জানাজা ও কবর দিতে পারেননি তিনি।

মহিমা জানায়, তার বাবা কোনো অন্যায় করেননি। বাবা জেলে থাকলে আমরা ভাত খাইতে পারি না। আমার মা পুরান কাপড় বেচে এখন বৃষ্টির দিন তাই বেচা যায় না। বাবা ঘরে থাকলে আমার ভালো লাগে। এ কথা বলে সে তার বাবা মজিবরকে গলায় জড়িয়ে ধরে।
সরেজমিন গতকাল বৃহস্পতিবার দুুপুরে ফতুল্লার মাহমুদপুর করিম মার্কেট এলাকায় মজিবরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার দৈন্যদশা। একই এলাকায় একটি মোটরপার্টসের গোডাউনে দারোয়ানের চাকরি করতেন মজিবর। মাসে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা পেতেন তিনি। এটা দিয়ে খেয়ে না খেয়ে চলে তার পরিবার।গত এপ্রিল মাসে শবে বরাতের দুই দিন পর রাত ২টায় মাহমুদপুর এলাকায় মজিবরের কর্মস্থল থেকে র‌্যাব -১০-এর সদস্যরা তাকে আটক করে। ওই সময় প্রচণ্ড জ্বরে ভুগছেন তিনি। মজিবরের অভিযোগ, র‌্যাব তাকে ধরার পরপরই ইয়াবা বিক্রেতা বলে বেদম মারধর করে। তবে তিনি কখনো ইয়াবা বিক্রি করেননি বলে জানান। র্যাব আটক করার পর দুই দিন ধরে মজিবরের স্বজনেরা তার কোনো খোঁজ না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন।

মজিবর জানার, দুই দিন পর র্যাব তাকে ২০৬ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার দেখিয়ে ফতুল্লা থানায় হস্তান্তর করে। মামলা দায়ের করার পর পুলিশ তাকে ইয়াবা বিক্রেতা দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে। পরে সেখান থেকে কারাগারে কেটে যায় মজিবরের প্রায় চার মাস।

পিবিএ/বাখ

আরও পড়ুন...