নিউজ ডেস্ক, কলকাতা: কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘ঝড়ের মুখে জাহাজ টলমল করলে সবথেকে আগে ঝাঁপ মারে ইঁদুররা৷ কিন্তু তারা বুঝতে পারে না কোথায় ঝাঁপ মারছে৷ ফলে যা পরিণতি হওয়ার তাই হয়৷’ তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকটা সিট একটা রাজনৈতিক দল পেয়েছে৷ তাতে ঘাবড়ে গিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে৷ চাপের মুখে যারা মাথা নত করে পালিয়ে যাচ্ছে তারা আদর্শের রাজনীতি করে না৷ রাজনীতি করলে একটা জীবন একটা আদর্শের জন্য উৎসর্গ করে দেওয়া যায়৷ আদর্শের রাজনীতি যারা করবে তারা আন্দোলন করে তার বিরুদ্ধে লড়াই করবে৷ যারা দল বদল করছে তারা কোনও না কোনও চাপের মুখেই তা করছে৷ মুকুল রায়ও চাপের মুখে পড়েই পার্টি ছেড়েছিলেন৷’
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থানে ভয় পেয়ে তৃণমূলের একদল কাউন্সিলর, একাধিক বিধায়ক মুকুল রায়ের পুত্র শুভ্রাংশুর নেতৃত্বে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন৷ এই দলবদল প্রসঙ্গেই ফিরহাদ এসব মন্তব্য করেন।
২০১৭ সালের নভেম্বরে গেরুয়া শিবিরে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে একসময়ের সেকেন্ড ইন কমান্ড মুকুল রায়৷ যোগদানের পরেই তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন পশ্চিমবঙ্গে খুব দ্রুত বিজেপি ক্ষমতায় আসতে চলেছে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মত মানুষের নেতৃত্বে কাজ করার সুযোগ পেয়ে তিনি গর্বিত৷
তবে মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশ তৃণমূলেই থেকে গিয়েছিলেন৷ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পরই দলবিরোধী মন্তব্যের অভিযোগ তুলে তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড করা হয় শুভ্রাংশুকে৷ প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছিলেন, তৃণমূলে থেকে কিছু করলেও দোষ, না করলেও দোষ৷ আর তারপর থেকেই শুভ্রাংশুর বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা ফের প্রবলভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল৷ মঙ্গলবার সেই গুঞ্জনকে বাস্তবায়িত করে শিবির পরিবর্তন করেন শুভ্রাংশু৷
এদিকে এই দল পরিবর্তন নিয়ে উত্তর ২৪ পরগণার জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, কর্মীরা সবাই তৃণমূলেই থাকবে, সুযোগসন্ধানীরা শুধু চলে যাবে৷ অবশ্য তিনি এও বলেন, ‘স্বেচ্ছায় নয়, বন্দুক দেখিয়ে জোর করে দল বদল করানো হয়েছে৷’ পাশাপাশি, তিনি সাফ জানিয়ে দেন, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক৷ ২০২১-এ তাঁরা দেখিয়ে দেবেন৷
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শুভ্রাংশু। হেমতাবাদ বিধানসভার বাম বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায় এবং বিজেপিতে যোগ দেন তৃণমূলের তুষারকান্তি ভট্টাচার্য। হালিশহর পুরসভার ২৪টি আসনের মধ্যে ১৭ জন তৃণমূল কাউন্সিলর এবং একই সঙ্গে কাঁচরাপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান সহ ১৭ জন কাউন্সিলরও যোগ দেন এদিন৷
পিবিএ/এএইচ