পিবিএ,ঢাকা: দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি’র কার্যনির্বাহী কমিটির ২০১৯-২১ মেয়াদের নির্বাচন আগামী ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে অংশ নিচ্ছে ‘টিম ক্যাটালিস্ট’ প্যানেল। ৮ প্রার্থী নিয়ে গঠিত হয়েছে এই প্যানেলটি। প্যানেলটির পক্ষ থেকে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছে। টিম ক্যাটালিস্ট-এর ওয়েবসাইটে নির্বাচনী ইশতেহারে তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রথম ৯০ দিনের বাস্তবায়ন লক্ষ্যঃ
১। আর্থিক, নতুন সেবা সম্প্রসারন, NTTN, আইন, জেলা ও উপজেলা ইত্যাদি বিষয়ক সাব-কমিটি গঠন করা হবে।
২। CSTF কে আরো স্বচ্ছ, শক্তিশালী এবং এর এলাকা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিশেষ সাব-কমিটি গঠন করা হবে।
৩। দেশব্যাপি আইএসপি দ্বারা ট্রিপল প্লে সেবা প্রদানে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি শক্তিশালী সাব-কমিটি গঠন করা হবে।
৪। নির্বাচিত ইসি সদস্যগণ পর পর দুই মেয়াদের বেশি নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারবে না, এই মর্মে গঠনতন্ত্রে সংশোধনী আনা হবে।
৫। আইএসপি এসোসিয়েশনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আইএসপি লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানগুলি আবেদন করা সাপেক্ষে বিনামূল্যে (প্রথম তিন মাস) সংগঠনের সদস্য করা হবে।
৬। ISPAB’কে ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রধান অনূঘটক (Catalyst) রুপে BCS, BASIS, BACCO ও e-CAB থেকেও অধিকতর গুরুত্বপুর্ন স্থানে উন্নিত করা হবে এবং উক্ত সংগঠনগুলোর সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন ও কার্যক্রম জোরদার করা হবে।
৭। সদস্যদের সঙ্গে দাপ্তরিক যোগাযোগ, লাইসেন্স সাপোর্ট, অভিযোগ দাখিল এবং বিভিন্ন ব্যবসায়িক ইস্যুতে সিদ্ধান্ত পেতে ISPAB এর ওয়েবসাইট-কে একক সেবা পয়েন্ট/ই-কেয়ার সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
৮। আন্তর্জাতিক মানের ন্যূনতম ১ টি ইন্টারনেট মেলা ও স্থানীয় পর্যায়ে ন্যূনতম ৪ টি মেলার আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি সেমিনারের আয়োজন করা হবে।
৯। সরকারের রূপকল্প-২০২১-এর বাস্তবায়নে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকলকে সর্বাত্মক সহযোগীতার দ্বার উন্মোচন করা হবে।
১০। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সহযোগীতায় বিশেষজ্ঞদের সাথে নিয়ে বিষয় ভিত্তিক নিয়মিত গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হবে।
পরবর্তি ৬ মাসের বাস্তবায়নে লক্ষ্যঃ
১১। অসম প্রতিযোগীতা রোধে ISP প্রতিষ্ঠানদের জন্য ব্যান্ডউইথের সর্বনিম্ন ক্রয়/বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হবে।
১২। ইন্টারনেট সেবাকে একটি অতীব জরুরী সেবা হিসাবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি আদায় করা হবে।
১৩। সদস্যদের ব্যবসা প্রসারে ও উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশের ৬৪টি আঞ্চলিক অফিস স্থাপন করা হবে এবং সক্রিয় নেটওয়ার্ক শেয়ারিং পপস্ (PoP) স্থাপন করা হবে।
১৪। প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি ন্যাশনাল ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ (নিক্স) স্থাপনে উদ্যোগ গ্রহন করা হবে। একইসঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ের সকল আইএসপি প্রতিষ্ঠানকে বিনামূল্যে আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার অধীনে নিয়ে আসা হবে।
১৫। লাইসেন্সের বর্নিত সীমানা অনুযায়ী, BTRC-এর সহযোগীতায় নির্ধারিত এলাকার মধ্যেই কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে প্রতিটি আইএসপি প্রতিষ্ঠানকে বাধ্য করা হবে।
১৬। IIG প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে আইএসপি পর্যায়ে একটি ব্যবসাবান্ধব মূল্য তালিকা প্রণয়ণ করা হবে যাতে কোনো IIG আইএসপি’র সঙ্গে বিধিবহির্ভূতভাবে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ না হয়।
১৭। সারাদেশে সকল অবৈধ ISP এবং পেশিশক্তি প্রদর্শনকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১৮। NTTN প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দর কষাকষি করে সুলভ মূল্য ও সকল স্থানে ট্রান্সমিশন বৈষম্যহীন সম-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
১৯। দেশের দুর্গম/প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেট সেবা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সাহায্যে শুধুমাত্র ISPAB সদস্যদের দ্বারা সেবা প্রদান নিশ্চিত করা হবে।
২০। ২০২০ সাল থেকে জাতীয় বাজেটে ইন্টারনেট সেবা খাতের উন্নয়নে ISPAB স্বতন্ত্র বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করবে।
শেষ ১৫ মাসের বাস্তবায়নের লক্ষ্য:
২১। DWDM ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অতিরিক্ত কোর ফাইবার ব্যবহার সীমিত করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২২। সরকারী অর্থায়নে নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম পরীক্ষণ ও মান নিয়ন্ত্রণে ল্যাব স্থাপন এবং নেটওয়ার্কিং ও ফাইবার ক্যাবলিং প্রযুক্তির ওপর পর্যায়ক্রমিক প্রশিক্ষণ সুবিধা চালু করা হবে।
২৩। দক্ষ জনশক্তি গড়ার লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষা কারিকুলামে ISPAB চাহিদা মোতাবেক বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহন করা হবে।
২৪। ক্রয়-বিক্রয় পর্যায়ে ব্যান্ডউইথের ওপর বিদ্যমান ৫ শতাংশ ভ্যাট শূণ্য শতাংশে নামিয়ে আনতে সরকারের সম্মতি আদায় করা হবে।
২৫। Fiber Optics, FTTX devices, Router, Modem, Networking Switch, WiFi devices, IP Telephony set, Set-Top-Box এবং Streaming devices এর ওপর থেকে সকল প্রকার কর প্রত্যাহার ও শুল্কমুক্ত সুবিধা আদায় করা হবে।
২৬। কর্মরত অবস্থায় মাঠ পর্যায়ে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ফাইবার কর্মীদের জন্য একটি কল্যাণ তহবিল গঠন করা হবে।
২৭। ISPAB -এর কোন সদস্যের মৃত্যুতে এককালিন সর্বোচ্চ দুই লক্ষ টাকা পরিবারকে তাৎক্ষনিক আর্থিক সহযোগীতা প্রদান করা হবে।
২৮। সরকারি সহায়তায় শিক্ষার্থী ও বয়োজ্যেষ্ঠদের অর্ধেক মূল্যে ইন্টারনেট সেবা দিতে ISP প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সরকারি প্রণোদনার ব্যবস্থা করে শিক্ষা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা বাস্তবায়ন করা হবে।
২৯। সাইবার নিরাপত্তা, ব্লক চেইন এবং ইন্টারনেট নির্ভর সেবা সম্প্রসারণে সরকার ও বিটিআরসি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল গঠন করা হবে।
৩০। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট সংগঠন/ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের পাশাপাশি ISPAB সদস্যদের জন্য বিদেশে প্রশিক্ষণের সুযোগ তৈরি করা হবে।
৩১। ৫জি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফিক্সড ওয়ারল্যাস ও ক্যাবল অপারেটরদের ব্যবসায়িক স্বার্থ ও নতুন Frequency Band পাওয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে।
৩২। সরকারি, BTRC এবং ইন্ডাস্ট্রি কমপ্লায়েন্স মেনে ইন্টারনেট সেবা ও ব্যবসা পরিচালনা করার লক্ষ্যে সিস্টেম ও নেটওর্য়াক অ্যাডমিন এবং ম্যানেজারদের জন্য একটি সার্টিফিকেশন কোর্স চালু করা হবে। এতে BTRC’র নীতিমালা, আদেশ-নির্দেশ, মাসিক রিপোর্টিং ও রেকর্ড সংরক্ষণ থেকে শুরু করে লগ সার্ভার স্থাপন পর্যন্ত সবই অন্তর্ভূক্ত থাকবে।
৩৩। ISP প্রতিষ্ঠানগুলোর বকেয়া বিল আদায়ে ISPAB-এর তত্বাবধানে একটি ইন্টারঅ্যাক্টিভ পোর্টাল চালু করা হবে এবং বিল খেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
৩৪। APNIC ফি, সফটওয়্যার ক্রয় এবং জরুরী/বিশেষ হার্ডওয়্যার সরঞ্জাম ক্রয়ে মাসিক ৫ হাজার ডলার পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদন আদায় করা হবে ।
৩৫। ঢাকায় ISPAB’র স্থায়ী প্রধান কার্যালয় স্থাপনের জন্য জমি/বিল্ডিং বরাদ্দ পেতে কার্যকরী উদ্যোগ নেয়া হবে।
৩৬। ISP-দের স্বার্থ রক্ষার জন্য ‘Network Neutrality’ নিশ্চিত করা হবে।
৩৭। ISP-দের জন্য সহজ ও সর্বোচ্চ ৬% সরল সূদে ব্যাংক লোন পাওয়ার জন্য কাজ করা হবে।