ঠিকাদার বন্দর কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্বে অচল বেনাপোল

শেখ নাছির উদ্দিন,পিবিএ,বেনাপোল: বকেয়া বেতনের দাবিতে ২ দিন ধরে বেনাপোল বন্দরে পণ্য লোড আনলোড বন্ধ করে দিয়েছে বন্দরের ইকুইপমেন্ট শাখার শ্রমিকরা। স্থবির হয়ে পড়েছে বন্দরের মালামাল খালাস প্রক্রিয়া। রাজস্ব পরিশোধ করেও কোন পণ্য খালাস নিতে পারছে না আমদানিকারকরা তেমনি ভারত থেকে পণ্য বোঝাই শত শত ট্রাক আমদানিকৃত পণ্য খালাসের অপেক্ষায় পড়ে আছে বন্দর অভ্যন্তরে। বকেয়া বেতনের বিষয়টি বার বার জানানোর পরও বন্দর কর্তৃপক্ষ আমলে নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

খবর নিয়ে জানা যায় ৫ মাসে প্রায় দুই কোটি টাকা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে পাওনা রয়েছে বলে দাবি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সিস লজিস্টিক্যাল সিস্টেম লিমিটেডরে। তাই তারা শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে পারছেনা। বকেয়া বেতনের দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দেন বন্দর শ্রমিকরা।

এর আগে গত ২৬ নভেম্বর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সিস লজিস্টিক্যাল সিস্টেম বকেয়া টাকা আদায়ের দাবি নিয়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল। ২৭ নভেম্বর সকালে বেনাপোল বন্দর পরিচালকের অফিসে বৈঠকে পর শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য পাঁচ দিনের সময় দেয়ার পরও বকেয়া পরিশোধ না করায় রোববার (৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকে কর্মবিরতির ডাক দেয়।

বেনাপোল স্থলবন্দরের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সিস লজিস্টিক্যাল সিস্টেম লিমিটেডের বেনাপোল প্রতিনিধি সুলতান আহম্মেদ বাবু জানান, গত জুলাই মাস থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষ কোন বিল পরিশোধ করছে না। বার বার বিল পরিশোধের তাগাদা দিলেও তারা শুনছে না।যে কারণে আমরা শ্রমিকদের বেতন দিতে পারছি না। বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক আনু জানান, ঝামেলা বন্দরের সঙ্গে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের। আর লোকসান গুণতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। কোনো রকম পূর্বঘোষণা ছাড়া বন্দরে পণ্য খালাস বন্ধ করায় তারা অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক এমদাদুল হক লতা জানান, সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব বন্দর কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান না হলে আমাদেরও বন্দরের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে হবে।

বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) প্রদোষ কান্তি দাস শ্রমিক কর্মবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সিস লজিস্টিক্যাল সিস্টেমের শ্রমিকরা ইচ্ছাকৃত ভাবে বন্দরে গত দুইদিন ধরে ইকুপমেন্ট সাইডের সমস্ত পণ্য লোড-আনলোড বন্ধ করে রেখেছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে অনেক আগেই বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চুক্তি শেষ হয়েছে।
তাদের সাথে বন্দর কর্তৃপক্ষ নতুন করে চুক্তি নবায়ন না করায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বন্দর কর্তৃপক্ষের নামে উচ্চ আদালতে একটি মামলা করে। ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বন্দরের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার রায় দেন। রায়ের পর বন্দর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কোন বিল পরিশোধ যাবে না। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মামলা নিষ্পত্তির কোন আগ্রহ দেখাচ্ছে না। যে কারণে তারা মাঝে মাঝে বন্দরের পণ্য লোড আনলোডের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করছে।

পিবিএ/জেডআই

আরও পড়ুন...