ডাকসুতে নুরদের ওপর হামলার বিচার চাইলেন অভিযুক্তরা

পিবিএ, ঢাকা : ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সহযোগীদের ওপর ডাকসু ভবনে হামলা, ‘ভিপি নুর ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সংঘর্ষ’ উল্লেখ করে এ হামলার বিচার চেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও এজিএস সাদ্দাম হোসেন।

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে ডাকসু ভবনে এক সংবাদ সম্মেলন করে সাদ্দাম হোসেন এ বিচার দাবি করেন। এ সময় তার সাথে ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে ডাকসুতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সাদ্দাম হোসেন বলেন, ডাকসু ভবন ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সাদ্দাম হোসেন আরও কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেন। তাদের দাবিগুলো হলো: ডাকসু নেতৃবৃন্দ, সিনেট সদস্য সঞ্জিত চন্দ্র দাস, হল সংসদের নেতৃবৃন্দ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহার, বহিরাগতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া, সিসি টিভি ফুটেজ উদ্ধার ও ভিপি নুরুল হক নুরের পদত্যাগ।

এ সময় লিখিত বক্তব্যে সাদ্দাম বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, গত ২২ ডিসেম্বরের ঘটনায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মনোনীত কোন ডাকসু প্রতিনিধির বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। উল্লেখিত সংঘর্ষ, হামলা-প্রতি হামলার সাথে ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কেউ কোনভাবেই জড়িত নয়। আমরা আরও বলতে চাই যে, এ সংঘর্ষের শুরুতে ডাকসু ভবনের নিচ থেকেই যদি ভিপি নুর ও তার বহিরাগত সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে অন্যত্রে চলে যেতেন তাহলে এই সংঘর্ষের যবনিকাপাত সম্ভব হতো এবং কোন প্রকার ক্ষয়ক্ষতি, ভাঙচুর, আহতের ঘটনা ঘটতো না।

সিনেট সদস্য সনজিত এবং এজিএস সাদ্দাম এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ যেমন পিছু হটেছিল, তেমন একই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভিপি নুর যদি পিছু হটতো তাহলেও সংঘর্ষ এড়ানো যেতো বলে মনে করেন সাদ্দাম।

তিনি বলেন, সিনেট সদস্য সনজিত চন্দ্র দাস, এজিএস সাদ্দাম হোসেন, সদস্য রাকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য, সদস্য মুহা. মাহমুদুল হাসান সর্বাত্মকভাবে সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করার পরও ভিপি নুর পুলিশের কাছে এদের নামে মামলার আবেদন করে। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকার পরও মামলার আবেদনে তার নাম যুক্ত করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এই মিথ্যা অভিযোগ দায়েরের জন্য ভিপি নুরের প্রতি ধিক্কার জানাচ্ছে।

সংঘর্ষে লিপ্তদের প্রকৃত নাম, পরিচয় গোপন করার জন্য ডাকসু ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ গায়েব করা হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনের রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ পরিকল্পিতভাবে যারা গায়ের করেছিল সেই একইপক্ষ সেদিন মূল ফটক বন্ধ করে ডাকসু ভবনে অবস্থান করছিল। এবং তারাই সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব করেছে বলে ও দাবি করেন তিনি।

সাদ্দাম দাবি করেন, সাম্প্রতিক সময়ে ভিপি নুরের টেন্ডারবাজি, তদবির বাণিজ্য, পার্সেন্টেজ আদায় ইত্যাদি অনৈতিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সবার সামনে উন্মোচিত হওয়ার বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাথে সংঘর্ষে জড়ানো হয়েছে কি না তা অনুসন্ধানের খোরাক রাখে বলে মনে করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পবিত্র আমানত ডাকসু ভবনকে রক্ষা না করে বরং এই ভবনকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে এ নিজের লেলিয়ে দেয় বহিরাগত বাহিনী দিয়ে ভবনের ভাঙচুরে অংশগ্রহণ করে নুর ভিপি পদে দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা আবারও হারিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস, এজিএস সাদ্দাম হোসেন, ডাকসু সদস্য রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য, সদস্য মাহমুদুল হাসান সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করেন।কিন্তু নুর (ভিপিনুরুল হক নুর) তাদের নামে মামলার অভিযোগ পত্র জমা দেন। এমনকি ডাকসুর মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকা সত্ত্বেও মামলার অভিযোগ পত্রে তার নাম ঢুকানো হয় বলে অভিযোগ করেন সাদ্দাম হোসেন।

উল্লেখ্য, ২২ ডিসেম্বর ডাকসু ভবনে ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর। হামলায় নুর ও তার সংগঠনের প্রায় ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

পিবিএ/জেডআই

আরও পড়ুন...