পিবিএ,ঢাকা: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার্থে নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি ডাক্তারদের দেয়ার পর এবার তাদের থাকার জন্য নিজের আলিশান বাড়ি দিয়ে দিচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এই বাড়িতে ডাক্তারসহ ১৭ জন কর্মকর্তার থাকতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।তিনি জানান, হবিগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জনের অনুমতির পর এই বাড়িটি ডাক্তারদের দিয়ে দেবেন।
এ আইনজীবী বলেন, এর আগে আমার একটা গাড়ি দিয়েছিলাম সেই গাড়িতে ডাক্তারদের নিয়ে আসতে অনেক সমস্যা হয়। একটি গাড়িতে ডাক্তারদের হচ্ছে না। তাই তাদের থাকার ব্যবস্থা করতে পারলে তারা আরও বেশি সেবা দিতে পারবেন মানুষকে। বর্তমানে এই লকডাউন পরিস্থিতিতে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারসহ সকল কর্মকর্তাদের (মোট ১৭ জন) সুবিধার্থে পরিবারের সাথে পরামর্শ করে আমি চুনারুঘাটে নিজের ডুপ্লেক্স বাসা ছেড়ে দেয়ার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি
সুমন জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এমএ মুমিন উদ্দিন চৌধুরীর কাছে প্রস্তাব আকারে ইতোমধ্যেই তিনি বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন। যে কোনো সময় ডাক্তাররা তার বাসায় উঠতে পারবেন এবং করোনাভাইরাসের এই সময়টাতে তারা তার বাসায় থাকতে পারবেন।
বাসা ছেড়ে দিলে আপনি কোথায় থাকবেন জানতে চাইলে সুমন বলেন, আমি অন্যত্র নিজের থাকার ব্যবস্থা করবো। আমি চাই ডাক্তাররা এই সময়টাতে মানুষদের নির্বিঘ্নে সেবা প্রদান করুক এবং নিশ্চিন্তে মানুষের জন্য কাজ করুক। কেবল বাসা ছেড়ে দেয়া নয়। ডাক্তারদের সুবিধার্থে আমার পক্ষে সম্ভব এমন যা করা লাগে করবো আমি।
সুমন বলেন, উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে ডাক্তাররা এসে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে সমস্যা হওয়ার কারণে তাদের বাসস্থানের জন্য নিজের বাড়ি ছেড়ে দিচ্ছি।তিনি বলেন, আমার পরিবারের সদস্যরা যেহেতু নিউইয়র্কে বসবাস করেন, তাই এখন এই বাড়িতে আমি ছাড়া আমার পরিবারের কোনো সদস্য নেই। যুদ্ধ যেহেতু শুরু হয়েছে, মরলে শহীদ, বাঁচলে সবাইকে নিয়েই বাঁচবো। তাই দেশের অন্যান্যদের উৎসাহিত করতে এই বাড়ি ডাক্তারদের জন্য ছেড়ে দিতে চাচ্ছি।
সেবা পেতে হলে চিকিৎসকদেরও তেমন সার্বিক সামগ্রী ও সহায়তা দেয়ার কথা উল্লেখ করে সুমন বলেন, ডাক্তারদের বদনাম করে লাভ কী? তাদের কাছ থেকে চিকিৎসা সেবা নেবেন, কিন্তু তাদের সুবিধা দেবেন না এটা তো হতে পারে না। যেখানে আমেরিকায় ডাক্তার-নার্সদের জন্য মানুষ রান্না করে খাবার নিয়ে যাচ্ছেন, এখানে মানুষের সেবার জন্য তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করবো না এটা তো হতে পারে না।
সুমন বলেন, ডাক্তাররা বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করার কারণে রোগী দেখার জন্য আসতে সমস্যা হয়। যেহেতু লকডাউনে পুরো এলাকায় গাড়ি চলাচল কম করে ডাক্তারদের হাসপাতাল আসার ইচ্ছে থাকলেও হয়ে ওঠে না।
তিনি বলেন, আমার উপজেলায় বড় কোনো হোটেল নেই। ভেবেছিলাম বড় হোটেল থাকলে সেটাই ভাড়া নেবো।কিন্তু ভেবে দেখলাম আমার একটি বড় বাড়ি রয়েছে। যেখানে আমি একা আছি। এখন বাড়ি ছেড়ে আমি অন্য কোথাও অবস্থান করবো আর বাড়িটি ডাক্তারদের জন্য ছেড়ে দেয়ার অফার করেছি।
পিবিএ/এএম