ডায়েট ছাড়া ওজন কমানোর দশ উপায়?

পিবিএ ডেস্কঃ জন কমানোর জন্য কেউ বলে এটা করুন তো কেউ বলে ওটা! হাজার একটা টিপস মেনেও ওজন কমেনি। কারন ওজন কমানোর জন্য বেসিক কয়েকটা জিনিস না মানলে তা কমবে না। হেলদি খাবার খেয়ে কোন রকমের ডায়েট না করে ওজন কমান এবার। আজকের লেখায় ওজন কমানোর জন্য ছোট ছোট কয়েকটি টিপস লিখবো যা ডাক্তাররা আজীবন মেনে চলতে বলেন। এরফলে আপনি মনের মত খেয়েও পাতলা ছিমছিমে থাকতে পারেন অনায়াসে।

পানি খান, খাবারের আগেঃ অনেকেই দাবী করে থাকেন সঠিক পরিমানে জল পান করলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে, যা সত্যি।
সময় মেনে পানি পান করলে তা আমাদের মেটাবোলিজমকে ২৪-৩০% বুস্ট করে যা এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে ক্যালরি বার্ন করতে সাহায্য করে।
একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যারা খাবার ৩০ মিনিট আগে হাফ লিটার পানি পান করে তারপর খাবার খান তাদের খাবারের ৪৪% ক্যালরি বার্ন হয়ে যায় বাকিদের তুলনায়। তাই ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ ও ডিনার করার ৩০ মিনিট আগে পানি খান। মেদ জমবে না বরং তা হ্রাস পাবে।

ব্রেকফাস্টে ডিম খান অবশ্যইঃ একটা গোটা ডিম অন্যান্য উপকারের সাথে সাথে ওজন কমাতে দারুন কাজ দেয়।
একটি স্টাডি থেকে জানা যায় যে শস্য ভিত্তিক খাবার যেমন চাল, ডাল, রুটি ইত্যাদি যারা ব্রেকফাস্টে খান তারা একটা করে ডিম অবশ্যই খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ক্যালরি বার্ন হয়ে ওজন কমবে ও অতিরিক্ত চর্বি জমবে না।
যারা নিরামিষাশী তারা ডিমের বদলে যেকোনো প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার ব্রেকফাস্টে খান।

কফি পান করুনঃ কফি হাজার একটা উপকারের পাশাপাশি ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে অবশ্যই ব্ল্যাক কফি।
ব্ল্যাক কফি মেটাবোলিজমকে ৩-১১% বুস্ট করে ১০-২৯% ফ্যাট বার্ন করতে সাহায্য করে প্রতিদিন।
খেয়াল রাখবেন কোন রকমের চিনি বা দুধ মিশিয়ে কফি বানিয়ে খেলে তা কাজে দেয় না।

গ্রিন টি পান করুনঃ কফির মত গ্রিন টি ও শরীরের জন্য খুবই উপকারি।
গ্রিন টি তে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্যাট বার্ন করতে হেল্প করে। যার ফলে ওজন কমে সহজেই।
সকালে উঠে চায়ের বদলে গ্রিন টি নিয়মিত খেলে আপনার ওজন কমবেই। গবেষণায় প্রমানিত।

ঝাল জাতীয় খাবার খানঃ কাঁচা লঙ্কা, গোলমরিচের মত ঝাল জাতীয় খাবার খেলে তা হজম শক্তি বাড়ায় ফলে চর্বি শরীরে জমতে পারে না। তাই বেশি করে ঝাল খান।
যারা ঝাল একদম খেতে পারেন না তারা অল্প অল্প করে ঝাল খাওয়ার অভ্যাস করুন। না হলে ওজন কমানোর এত সহজ একটা উপায় থেকে আপনারা বাদ পরে যাবেন।

খাবার খান আসতে আসতেঃ খাবার খাওয়ার সময় আমরা অনেকেই খুব তাড়াতাড়ি খেয়ে নি খাবার। এরফলে যা খেয়ে থাকি তা ভালো করে চিবিয়ে খাওয়া হয় না। তাতে হজম সঠিক ভাবে হতে পারে না।
দ্বিতীয়ত তাড়াতাড়ি খেলে আমাদের ব্রেন আমাদের আরও বেশি করে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার দিকে চালনা করে। তারফলে আমরা দরকারের বেশি খাবার অ্যাবজরব করি। ফলে মেদ স্বাভাবিক ভাবে বেশি মাত্রায় জমতে থাকে।
আসতে আসতে চিবিয়ে গেলে প্রথমত হজম হয় খাবার। দ্বিতীয়ত প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার গ্রহন করে থাকি তখন। ফলে মেদ জমার চান্স প্রায় থাকে না।

শাকসবজি ও ফল খান বেশি করেঃ চর্বি জাতীয় খাবার খেলে মেদ জমা স্বাভাবিক। তাই যতটা পারা যায় মাংস, ও চর্বি জাতীয় খাবার কম খান।
শাকসবজি ও ফল অন্যান্য উপকারের সাথে সাথে ওজনকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে।
এতে থাকা ফাইবার ওজন কম রাখে ও চর্বি জমার সুযোগ কমিয়ে দেয় শরীরে।
ওজন কমার সাথে সাথে শরীরের জন্য এসব খাওয়া খুবই হেলদি প্রভাব ফেলে।

খাবার খান ছোট প্লেটেঃ ছোট প্লেটে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করলে অনেক সময় নিজের অজান্তেই কম ক্যালরি গ্রহন করা হয়। কারন বেশি মাত্রায় খাবার তখন আপনি খান না।
বাংলায় একটা কথা আছে না ‘চোখের খিদা’ এটা ঠিক আপনার ওই খিদাকে খতম করে প্রয়োজনীয় আহারটুকু সম্পূর্ণ করতে সাহায্য করে।
প্লেট ছোট হলেই যে লোকে খাওয়া কমিয়ে দেবে এমন নয়। তবে যাদের অতিরিক্ত ওজন তারা এই উপায়টি সঠিক ভাবে মেনে চললে ওজন কমতে হেল্প হবে।

চিনি কে না করুন খাবার সময়ঃ যারা চিনি অতিরিক্ত মাত্রায় খান তারা তো আজই তা কমাতে শুরু করে দিন। না হলে হাজার কিছু করে নিলেও ওজন আপনার বশে আসবে না বলে রাখছি।
আর যারা কম মাত্রায় খান তারা ছেড়ে দেওয়ার অভ্যাস করুন। চিনি না খেলে আপনার কিছু ক্ষতি হবে না বরং উপকার। আর বাকি শরীরে যে মাত্রায় চিনি বা শর্করার প্রয়োজন হয় তার পূরণ ফল ও অন্যান্য খাবার থেকে সম্পূর্ণ হয়ে যায়।
চিনিতে থাকা ক্যালরি ওজন চোখের নিমেষে বাড়িয়ে দেয়। তাই চিনি বা সুগার জাতীয় ড্রিঙ্কস, ফলের জুস এগুল খাওয়া বন্ধ করুন।

ডায়েট না করে বরং হেলদি খাবার খানঃ ডায়েট করে কয়েকদিনের জন্য ছিমছাম হয়ে যাবেন ঠিকই কিন্তু তা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ দেবে না। তাই অযথা ডায়েট করে রোগা হওয়ার চেষ্টা না করে বরং হেলদি খাবার খান ও ফিট থাকুন।
হেলদি খাবার খেলে আপনা আপনি ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকবে।
তাছাড়া হেলদি খাবার খাওয়ার পাশাপাশি হালকা এক্সাসাইজ করা খুবই জরুরি।

পিবিএ/এমআর

আরও পড়ুন...