মনির হোসেন মাহিন,রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে বিশেষ কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় ডিনস অ্যাওয়ার্ড। এর পাশাপাশি শিক্ষকদেরকেও গবেষণাকর্মে কৃতিত্বস্বরুপ প্রতিবছর এ সংবর্ধনাটি প্রদান করা হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি অনুষদের মধ্যে চারটি অনুষদে এ সংবর্ধনাটি চালু রয়েছে। ফলে বাকি ৮টি অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ডিনস অ্যাওয়ার্ড থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান, কলা, প্রকৌশল ও কৃষি অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ডিনস অ্যাওয়ার্ডের আওতায় রয়েছে।
এদিকে রাবির আইন, সামাজিক বিজ্ঞান, ফিশারিজ, বিজনেস স্টাডিজ, জীববিজ্ঞান, চারুকলা, ভূ-বিজ্ঞান ও ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এ সংবর্ধনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনরা বলছেন, ভালো ফলাফলের কৃতিত্বস্বরুপ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় উৎসাহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধি করা এবং শিক্ষকদের গবেষণামূলক কর্মে আরো আগ্রহী করে তুলতে এ সংবর্ধনা দেয়া প্রয়োজন। তবে ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রদানে ইচ্ছে থাকলেও পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকায় তা বাস্তবায়ন করতে পারছেন না অনেক অনুষদ। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি সহযোগিতা করে তাহলেই এটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ হাসান রাজু বলেন, যেখানে অন্যান্য অনুষদের শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর ডিন অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছে, অনুপ্রাণিত হচ্ছে, সেখানে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মতো গুরুত্বপূর্ণ অনুষদ এখন পর্যন্ত তা চালু করতে পারেনি। যা খুবই দুখঃজনক। এতে করে ভালো ফলাফল করেও তারা বঞ্চিত হচ্ছে এবং আগ্রহ হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত। ফলে অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে অন্যান্য অনুষদের ন্যায় ডিনস অ্যাওয়ার্ড চালু করার দাবি জানাচ্ছি। আমি মনে করি প্রশাসন চাইলে দ্রুততম সময়ে চালু করা সম্ভব হবে
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. ইলিয়াছ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, অন্যান্য ফ্যাকাল্টিতে অনেক আগেই ডিনস অ্যাওয়ার্ড চালু হয়েছে। কিন্তু আমাদের এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন উদ্যোগ নিতে হবে। এগুলো সবকিছু নির্ভর করে ফান্ডিং এর উপর। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টিগুলোর সেই অর্থে কোন ইনকাম সোর্স নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি সু-নজর দেয় তাহলে এগুলো করা সম্ভব। তাছাড়া সম্ভব নয়। তবে এ বিষয়টা আমরা পরবর্তী ফ্যাকাল্টি মিটিংয়ে আলোচনা করবো।
ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সস অনুষদের ডিন ড. মো. জালাল উদ্দীন সরদার বলেন, এর আগে আমরা কৃষি অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। তখন আমরা এ সংবর্ধনার আওতায় ছিলাম। কিন্তু এখন এটা আলাদাভাবে স্বতন্ত্র অনুষদ হওয়ার পর সংবর্ধনাটি চালু করতে পারিনি। তবে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় অনুপ্রেরণা যোগাতে এটি চালু করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহযোগিতা করলে বাস্তবায়ন করতে পারবো বলে আশা করছি।
চারুকলা অনুষদের ডিন ড. মোহাম্মদ আলী বলেন, চারুকলা অনুষদে ডিনস অ্যাওয়ার্ড চালু নেই। তবে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি অল্প সময়ের মধ্যে ডিনস অ্যাওয়ার্ড চালু করার জন্য যে প্রক্রিয়াগুলো আছে সেগুলো সম্পন্ন করা। সেক্ষেত্রে আমরা বিভাগীয় শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলে এটি দ্রুত চালু করার জন্য পদক্ষেপ নিব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ডিনস অ্যাওয়ার্ডের বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেন যারা ডিন থাকেন তারা। তবে ডিনরা যদি কোন সহযোগিতার প্রস্তাব নিয়ে প্রশাসনের কাছে আসে তাহলে ঠিকঠাক গবেষণার জন্য যে ধরনের প্রস্তাবই আসুক না কেনো তা অত্যন্ত সদয়ে গ্রহন করা হবে। এই প্রস্তাবগুলো ডিনদের থেকে আসুক। তারা শুরু করলেই অর্থ চলে আসবে। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে ধরনেরই হোক সহযোগিতা করবে। যাতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপ্রানিত হওয়ার পথটি সুগম হয়।##