ডিনামাইটে ভাঙ্গা হবে বিজিএমইএ ভবন!

বিজিএমইএ ভবন

পিবিএ,ঢাকা: দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে রাজধানীর হাতিরঝিলে অবস্থিত বিজিএমইএ’র বহুতল ভবন ভাঙ্গার কাজ শুরু হচ্ছে। গত দুই দিন পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠনটির প্রধান কার্যালয়ের জিনিসপত্র সরানোর পর মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ভবনটি ভাঙ্গার কাজ।

কিন্তু এত বড় একটি ভবন ম্যানুয়ালি ভাঙ্গার সুযোগ নেই।তাই ডিনামাইট বোমা ব্যবহার করে কন্ট্রোল ডিমোলিশন বা নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ পদ্ধতিতে ভবনটি ভাঙা হবে বলে জানিয়েছেন রাজউকের নির্বাহী মাজিস্ট্রেট জেসমিন আক্তার। মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।এজন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

দেশে ডিনামাইট ব্যবহার করে কোনো ভবন ভাঙার প্রথম নজির হবে এটিই প্রথম।

বিজিএমইএ ভবনের ভেতরে জেসমিন আক্তার বলেন, ভবনে থেকে যাওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালামাল সরিয়ে নিতে আমরা সময় দিয়েছি। বলেছি মালামাল সরিয়ে নিতে। মালামাল সরিয়ে নেওয়ার পর আজই ভবনটির গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানিসহ সব সেবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।

ভবনটি ভাঙার প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী মাজিস্ট্রেট জেসমিন আক্তার বলেন, রাজউকের হাতে ভবনটি ভাঙার জন্য তিন মাস সময় রয়েছে। তবে ভবনটি ভাঙার সব প্রস্তুতি রাজউক নিয়ে রেখেছে। ডিনামাইট দিয়ে ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। এত বড় একটি ভবন ম্যানুয়ালি ভাঙার সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে এই প্রথম ডিনামাইট ব্যবহার করে কোনো ভবন ভাঙার প্রস্তুতি নিয়েছে রাজউক। এ পক্রিয়ায় ভবনটি মুহূর্তেই ধূলায় পরিণত হবে। তবে এতে করে হাতিরঝিলসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক হারে দূষণের আশঙ্কা রয়েছে। ফলে ভবনটি শেষ পর্যন্ত ডিনামাইটেই উড়িয়ে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ জানিয়েছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের একটি সূত্র জানিয়েছে, পরিবেশগত দিক বিবেচনায় রেখেই ডিনামাইট ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজউক। বাংলাদেশে এমন নজির আগে না থাকায় ডিনামাইট ব্যবহার করে ভবন ভাঙার ক্ষেত্রে বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরামর্শ করা হচ্ছে।

রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই গড়ে ওঠা বিজিএমইএ’র এই ভবনটি ভাঙা নিয়ে আলোচনা শুরু প্রায় ৯ বছর আগে। ২০১০ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে ভবনটি নির্মাণে রাজউকের অনুমোদন না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের নজরে আনা হলে ভবনটি কেন ভাঙা হবে না, তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন আদালত। পরে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ ভবনটি ভেঙে ফেলার রায় দেন।

এরপর আপিল ও রিভিউ খারিজে ভবনটি ভাঙার সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে দফায় দফায় সময় প্রার্থনা শুরু করে বিজিএমইএ। সর্বশেষ গত বছরের ৩ এপ্রিল বিজিএমইএ’কে এক বছরের সময় দেন সর্বোচ্চ আদালত। সেই সময় শেষ হওয়ায় এবারে বিজিএমইএ ভবনটি ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু হলো। এর মধ্যে অবশ্য উত্তরায় নিজেদের নতুন কমপ্লেক্স তৈরি করেছে বিজিএমইএ। ১৩ তলা ভবনটির ষষ্ঠ তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। সেখানেই নিজেদের কার্যক্রম স্থানান্তর করেছে বিজিএমইএ। আজ হাতিরঝিলের ভবনটি ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু করলো রাজউক।

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...