‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ প্রত্যাখ্যান তিতুমীর ঐক্যের

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরের দাবিতে গত জানুয়ারিতে আন্দোলনের সময় ক্যাম্পাস ফটকে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানার’ টানান শিক্ষার্থীরা।

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে যে বিশ্ববিদ্যালয় হতে যাচ্ছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্য’।

তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলনে নামা এ প্লাটফর্ম বলছে, নিজেদের দাবির বিষয়ে তারা ‘অবিচল’ রয়েছে।

সাত কলেজকে নিয়ে যে বিশ্ববিদ্যালয় হতে যাচ্ছে, তার নাম হবে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ (ডিসিইউ)।

রোববার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) সাত কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইউজিসি চেয়ারম্যান এস এম এ ফায়েজের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

সাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।

ইউজিসির সভার পর সন্ধ্যায় ‘তিতুমীর ঐক্যের’ দপ্তর সম্পাদক বেল্লাল হাসান বলেন, আমরা সাতটি কলেজকে এক করে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের প্রক্রিয়াকে প্রত্যাখ্যান করছি। তিতুমীর কলেজকে প্রতিষ্ঠানিক কাঠামো বা বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আমরা অবিচল।

তিনি বলেন, চারজন শিক্ষার্থীকে রোববার ইউজিসির সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমাদের তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি সভা প্রত্যাখ্যান করে তাতে অনুপস্থিত ছিলেন। একজন অংশগ্রহণ করলেও তিনি ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের প্রক্রিয়া প্রত্যাখ্যান করে সভা ত্যাগ করেন।

তিতুমীর ঐক্যের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ঢাকা সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে যে প্রশাসনিক কাঠামো প্রস্তাব করা হয়েছে, সেই প্রস্তাব আজ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।

তিতুমীর ঐক্য বলছে, চার প্রতিনিধির মধ্যে আমিনুল ইসলাম, রনি ইসলাম ও আলী আহমেদ ইউজিসির সভায় যাননি।

তিনি আরও বলেন, রেজায়ে রাব্বি জায়েদ নামের একজন প্রতিনিধি গেলেও সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সভা থেকে বেরিয়ে যান। যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত দাবির পক্ষে অবিচল থাকার ঘোষণা দেন।

এর আগে শনিবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে কলেজটিকে আলাদা স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে ঘোষণা করতে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ১৫ ঘণ্টা সময় বেধে দেয় তিতুমীর ঐক্য।

গত ১৯ নভেম্বর তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে ঘোষণায় সম্ভাব্যতা যাচাই কমিটি গঠনের কথা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হলেও সে কমিটি এখনো প্রতিবেদন দেয়নি বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘দ্বিচারিতা করছে’ অভিযোগ করে করে ‘এ বিষয়ে নালিশ দিতে’ ও ‘দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নে আলোচনা করতে’ প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ দাবি করেছিলেন।

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরসহ মোট সাত দাবিতে অনশন ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকা অবরোধে ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ শুরু করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি অনশনরত ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মহাখালী রেলক্রসিং ও সড়ক আটকে অবস্থান নিলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কলেজ শাখার যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামানসহ কর্মকর্তারা কলেজ ক্যাম্পাসে এসে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।

কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে জানানো হলেও মন্ত্রণালয়ে পক্ষ থেকে অন্যান্য দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা লাগাতার অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেন।

আরও পড়ুন...