ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি, টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপে প্রায় শতাধিক আহত হয়েছেন। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে ঢাবি ও জাবি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বুধবার দুপুরের পর এসব ঘটনা ঘটে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে কোটা সংস্কার দাবিতে নিহতদের গায়েবি জানাজা ও মোনাজাত শেষে কফিনসহ মিছিল নিয়ে টিএসসির দিকে যেতে থাকেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের সামনে ও পেছন থেকে গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ।
এরপর মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এতে সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ ও আহত হন। শিক্ষার্থীরা ফের ভিসি চত্বরে একত্র হয়ে আন্দোলন করতে থাকেন। ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
একই সময় মল চত্বর থেকে আরেকটি মিছিল আসলে সতর্ক হয় পুলিশ। এরপর ফের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল মারেন।
পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে নীলক্ষেত মোড় থেকে নিউমার্কেট এক নম্বর সড়ক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সাঁজোয়া যান নিয়ে আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দেয় পুলিশ। এ সময় মুহুর্মুহু সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারসেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে ১০ জন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৮০ জন আহত হয়েছেন। আজ সোয়া ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে শহীদ মিনার ও নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে দুপুর ১২টায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। ঘোষণা প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান নেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে দাবি জানিয়ে আসছি। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে পুলিশ ডেকে হামলা করাটা ন্যাক্কারজনক।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নূরুল আলম, প্র-ভিসিসহ অন্যান্যদের ফোন দিলেও তারা রিসিভ করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলমগীর কবির বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষ, হামলায় ৬ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় ৩ জন, ঢাকা কলেজের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষে ২ জন ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) এক শিক্ষার্থী নিহত হন।