ঢাবি শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে দুর্বৃত্তদের হামলার অভিযোগ

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদনের প্রস্তুতিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির অফিসে ঢুকে একদল দুর্বৃত্ত হামলা ও ভাঙচুর করেছে, এমন অভিযোগ করেছে শিক্ষক সমিতি।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে শিক্ষক সমিতির রুমে ঢুকে এই তাণ্ডব চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা।

তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘‘শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির অফিসে জোর করে ২০-৩০ জনের একটি দল শিক্ষক সমিতির অফিসে ঢুকে পড়ে। এ সময় ভাঙচুরসহ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের জন্য রাখা ফুল ছিঁড়ে ফেলা হয়। এ কারণে শনিবার সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। কে বা কারা হামলা করেছে ঠিক বলতে পারছি না”।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘‘ঘটনা যখন ঘটে তখন আমি অন্য একটা মিটিংয়ে ছিলাম। মিটিং শেষে উপাচার্যসহ আমরা গিয়েছি ঘটনাস্থলে। সেখানে শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিজামুল হক ভূঁইয়া ছিলেন। তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। ক্লাব ও সমিতি হয়তো সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কোনও ক্লু পেলে আমাদে জানাবে। আমরা তাদের সার্বিক সহযোগিতা করবো।’’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘‘বেশ কয়েকজন আমাদের অফিস ভাঙচুর করেছে। তারা আমাদেরকে গালিগালাজ করেছে, দরজায় লাথি মেরেছে। অফিসের ম্যানেজারকে মারতে পর্যন্ত গেছে। এটা শিক্ষকদের অবমাননা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ৫৩ বছরের ইতিহাসে এরকম ঘটনা আর কখনো ঘটেনি। এত আন্দোলন হয়েছে তবুও এখানে কখনো কোনো সমস্যা হয়নি।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমি শিক্ষার্থীদের বলব-এখানে তো শিক্ষকরাই থাকে। আর প্রশাসনের উচিত এর তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকা।’’

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ খান, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলামসহ আরো বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘‘শিক্ষক সমিতির নেতারা আমাদের বলার সাথে সাথে আমরা প্রক্টোরিয়াল টিম পাঠিয়েছি। আমি ছাত্রদেরকে বলতে চাই, আমাদের ছাত্র-জনতার যুক্তিসঙ্গত কারণেই ক্ষোভ আছে। কিন্তু সেই ক্ষোভের যেন অনিয়ন্ত্রিত বহিঃপ্রকাশ না হয়। একটা পদ্ধতিগত বা আইনগতভাবেই আমাদের যেটা করার ওভাবেই আমরা করব।’’

তিনি বলেন, ‘‘অনিয়ন্ত্রিত বহিঃপ্রকাশ যাতে না হয় সেজন্য আমাদের উভয়পক্ষেরই সহনশীলতার প্রয়োজন আছে। আমরা খুবই নাজুক একটা সময় পার করছি। দেশ একটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে। আমাদের সর্বোচ্চ বিচার বিবেচনার প্রয়োজন আছে।’’

আরও পড়ুন...