তরুনদের মাল্টি -টাস্কিং অভ্যাস গড়তে হবে: ড. তানভীর ফারুক

scienceest-tanvir-faruk-PBa

পিবিএ ডেস্ক: পিবিএ এর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। আমাদেরকে সাক্ষাৎকার দেবার জন্য ধন্যবাদ। প্রথমেই আপনার সম্বন্ধে আমাদের একটু বলুন

তানভীর ফারুকঃ নিজের সম্পর্কে বলা হচ্ছে সবচেয়ে কঠিন। আপনার প্রশ্নের উত্তরকে একটি ছোট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ রাখা বেশ কষ্টকর তবুও আমি চেষ্টা করছি। আমার বাবা বেতার সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত ছিলেন সারা জীবন। ১৯৭১ সালে উনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সঙ্গে সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ বেতার এবং তার পরবর্তীতে “ডয়চে ভেলে” তে (Deutsche Welle/ German Radio) বাংলা বিভাগের সম্পাদক পদে নিযুক্ত হন। বাবার কর্মসূত্রে আমার শৈশবের একটা বড় সময় কেটেছে তদানীন্তন পশ্চিম জার্মানির কোলন শহরে। দেশে ফিরে আসার পর আমার স্কুল শিক্ষা শুরু ম্যাপেল লিফ স্কুলে। পরবর্তীতে দুই বছর আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুল/কলেজে অধ্যয়নের পর আমি মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হই এবং সেখান থেকেই ‘এসএসসি’ (SSC) ও ‘এইচএসসি’ (HSC) পরীক্ষা সম্পন্ন করি। এখানে না বললেই নয়, ক্যাডেট কলেজের কয়েকজন শিক্ষক আমাকে সেই সময় গভীর ভাবে নাড়া দিয়েছেন যা আমার জীবন দর্শনকে প্রভাবিত করেছে পরবর্তীতে। এঁদের কথা খুব মনে পড়ে এই ক্ষেত্রে, বাংলার শিক্ষক একরামুল হক স্যার এবং চারু ও কারুকলার শিক্ষক সুজা হায়দার স্যার। সুজা হায়দার স্যার এর অনেক শিক্ষাই আমি ‘উপাত্ত ভিসুয়ালিজেশন’ (Data Visualization) এ ব্যবহার করেছি।

২০০১ সালে বুয়েট থেকে যন্ত্রকৌশলে স্নাতক লাভের পর আমি একই বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেই এবং এক বছরের মাথায় কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় (University of Toronto) থেকে একটি বৃত্তি পাই। টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যন্ত্রকৌশলে মাস্টার্স সম্পন্ন করি ২০০৪ সালে এবং একই বিষয়ে পিএইচডি গ্রহন করি ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ড্রেক্সেল বিশ্ববিদ্যালয় (Drexel University) থেকে। পড়াশোনা শেষ করে আমি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে (Princeton University) আমার পোস্টডক্টরাল (Postdoctoral) ট্রেনিং নেই অধ্যাপক Frederick Dryer এর অধীনে এবং তারপরে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন গবেষক বিজ্ঞানী হিসাবে কাজ করি । বর্তমানে আমি দক্ষিণ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত আছি। আমার গবেষণার বিষয় “শক্তি” (Energy) – উচ্চ ক্ষমতা /সক্ষমতা সম্পন্ন শক্তির উৎস (High power/efficiency energy source), বিকল্প ও সবুজ শক্তি (alternative and renewable energy source), দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও নিরসন (pollution control and mitigation) এবং গবেষণার এই বিষয়গুলো প্লাজমা (Plasma), দহন (Combustion), NOx – SOx – Soot emission এর সাথে সংশ্লিষ্ট। বিশ্বর কর্ম-বর্ধমান জনসংখ্যা সেই সাথে জনবহুল এশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি বিশ্ব-শক্তি সংকটে (World Energy Crisis) বড় ধরণের ভূমিকা রাখবে। এইসব উন্নয়নশীল দেশে ‘carbon tax’ আরোপ করে তাদেরকে শক্তির উৎস থেকে বঞ্চিত করা সঠিক নীতিমালা নয়। বরঞ্চ উন্নত বিশ্বকে বিকল্প শক্তি, উচ্চ- দক্ষতা শক্তির উৎস ব্যবহার করে তাদের নিজেদের ‘carbon footprint’ কমানোর ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে এবং সেইটাই আমি মনে করি হবে একটা সঠিক গবেষণার দিক নির্দেশনা।

পিএইচডি-তে কি নিয়ে গবেষণা করেছেন?

তানভীর ফারুকঃ আমার পিএইচডির গবেষণার বিষয় ছিল “Plasma Discharge”, আরও পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বললে “Stability of high pressure plasma discharge and maintaining their non-equilibrium state” । গতানুগতিক ভাবে আমরা পদার্থের যে তিনটি রূপ সম্পর্কে অবগত তাহলো – কঠিন , তরল এবং বায়বীয়। ‘Plasma State’ হচ্ছে পদার্থের চতুর্থ রূপ যা মুক্ত ইলেকট্রন (electron), আয়ন (ion), রেডিকাল (radical) এবং নিউট্রাল (neutral) বায়বীয় অণু পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত। এটা অনুমান করা হয়ে থাকে যে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের ৯৯ শতাংশ plasma state সমন্বয়ে গঠিত। প্রকৃতিতে plasma নানা রূপে বিরাজ করে যেমন বজ্রপাত (lightening), Aurora Borealis। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে neon sign, fluorescent lamp, plasma টেকনোলজির উদাহরণ । আশি -নব্বইর দশকে plasma systems, সমন্বিত বর্তনী (Integrated Circuit) উৎপাদন ব্যবস্থার বিপ্লব ঘটায়। Low pressure plasma discharge এর মাধ্যমে এই ধরণের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সমন্বিত বর্তনী নির্মাণ সম্ভব হয়, এবং বর্তমানে এটাই একমাত্র পদ্ধতি যার মাধ্যমে তা করা সম্ভব।

আমার গবেষণার বিষয় ছিল কিভাবে উচ্চ চাপে (High Pressure) plasma কে দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থিতিশীল রাখা সম্ভব। গবেষণার একটা বিশাল অংশ ছিল মাইক্রন স্কেলে (micron scale) ইলেকট্রন তাপমাত্রা এবং একই সঙ্গে গ্যাসের তাপমাত্রা পরিমাপ, নিঃসরণ বর্ণালীবীক্ষণ (emission spectroscopy) প্রযুক্তি ব্যবহার করে। পাশাপাশি multi-physics modeling platform তৈরি করতে হয়েছিল virtual environment এ কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে simulation করার জন্য। উচ্চ চাপ এইসব plasma র ক্ষমতা এবং efficiency বাড়িয়ে দেয় সেইসাথে তার কার্যকারিতা । এই বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়ে আমি এই প্রথম অনুধাবন করি আন্তঃ বিষয়ক (Interdisciplinary) গবেষণা কি। এই গবেষণায় কেমি, তড়িৎ এবং যন্ত্রকৌশলের যেমন ভূমিকা, সমপরিমাণ ভূমিকা রাখে পদার্থ এবং রসায়ন বিজ্ঞান। আমার স্নাতকোত্তর গবেষণাগারে এই সর্ববিষয়ের ছাত্র ও বিজ্ঞানীর সমন্বয় ছিল সেইসাথে পরিবেশ ছিল খুবই synergistic। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে তাদের সংস্পর্শে এসে আমি অনেক নতুন জিনিস শিখেছি, যা আমাকে একজন গবেষক হিসাবে পরিণত করেছে । আমার পিএইচডি কালীন গবেষণার ফলাফল থেকে আমি দুটো পেটেন্ট এপ্লিকেশন (patent application ) করি যা পরবর্তীতে গৃহীত হয়েছে ।

কানাডা ও আমেরিকা এই দুই দেশেই আপনি কাজ করেছেন। এই দুটি দেশের মধ্যে গবেষণাক্ষেত্রে কি পার্থক্য দেখছেন?

তানভীর ফারুকঃ কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাক্ষেত্রে কিছুটা বৈসাদৃশ্য আছে। আমি যদি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক গবেষণার কথা বলি, তাহলে সাধারণত প্রযুক্তি শিল্প প্রতিশ্রুত গবেষণা কম করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, অর্থাৎ প্রযুক্তি শিল্প খুব কম ক্ষেত্রেই গবেষণার দিক নির্দেশনা দেয় এবং সেই সাথে সেই খরচ বহন করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়। এর ব্যতিক্রম যে নেই তা নয় তবে তুলনামূলক ভাবে কম। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মূলত মৌলিক গবেষণার কেন্দ্রস্থল এবং রাষ্ট্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তর অনেক অংশেই এই মৌলিক গবেষণার খরচ বহন করে। কানাডায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কম হওয়াতে, অধ্যাপকদের গবেষণা প্রস্তাবনা (research proposal) বিষয়ে তুলনামূলক কম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হয়। আর স্নাতকোত্তর ছাত্র/ছাত্রীদের শিক্ষাক্রমেও কিছুটা ভিন্নতা আছে , পাঠ্যসূচীতে পাঠ্য বিষয়ের উপর গুরুত্ব কিছুটা কম। যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি সম্পন্ন করতে ১০ থেকে ১২ বিষয়ে কৃতিত্ব প্রদর্শন করতে হয়। সেখানে কানাডায় সেই সংখ্যা ৫ থেকে ৬ টি।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মৌলিক (fundamental) এবং ফলিত (applied) গবেষণা এই দুইয়ের উপরই মোটামুটি সমান গুরুত্বই দেয়া হয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রযুক্তি শিল্প প্রতিষ্ঠান অংশীদারিত্বে (University-Industry Partnership) গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করে এবং ওই কেন্দ্রে কি ধরণের গবেষণা করা হবে সেই বিষয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠানের গবেষক এবং প্রকৌশলীরা যথেষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেটের একটি বড় অংশ গবেষণা এবং উন্নয়নে ব্যবহৃত হয়। এই অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে নিগূঢ় প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যেখানে অধ্যাপকরা তাদের গবেষণার বিষয় প্রস্তাব করেন। এই প্রতিযোগিতাগুলো বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠন ও মন্ত্রণালয় সংগঠন করে থাকে যেমন ধরুন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় (Department of Defense), শক্তি মন্ত্রণালয় (Department of Energy), নাসা (NASA) ইত্যাদি। জাতীয় বিজ্ঞান ফাউন্ডেশন (National Science Foundation) এ ধরণের প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে যা সর্ব অধ্যাপকদের অংশগ্রহণের জন্য উন্মুক্ত থাকে।

South Carolina বিশ্ববিদ্যালয়ে কি নিয়ে কাজ করছেন?

তানভীর ফারুকঃ বর্তমানে আমার গবেষণাগারে তিনটি বিষয়ের উপর কাজ চলছে। “শীতল শিখা” (Cool flame) – ৬০০ – ৭০০ কেলভিন (Kelvin) তাপমাত্রায় কিভাবে দহন করা সম্ভব একই সাথে কিভাবে তাকে স্থিতিশীল রাখা যায়। আমাদের গবেষণার ফলাফল দেখিয়েছে যে “শীতল শিখায়” দূষণ নিঃসরণ কমানো সম্ভব এবং একই সাথে অন্তর্দহন (Internal Combustion) ইঞ্জিনের যান্ত্রিক/তাপীয় দক্ষতা (mechanical/thermal efficiency) ৬৫% তে উন্নীত করা সম্ভব।

তরল পদার্থে plasma (plasma in liquids) গঠন হচ্ছে আরেকটি বিষয়, যেই ক্ষেত্রে আমরা কিছু উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছি। সাধারণত বায়বীয় মাধ্যমে plasma গঠন সহজসাধ্য, কিন্তু তরল মাধ্যমে এখনো তা যথাযথ ভাবে প্রদর্শিত হয়নি। অথচ সফল হলে এই প্রযুক্তির প্রয়োগ সীমাহীন। একটা ছোট উদাহরণ দেই, plasma র সাহায্যে দূষিত পানি খুব সহজেই কোনো রাসায়নিক পদার্থ ছাড়াই পরিশোধন সম্ভব ।

তৃতীয় কাজটি চলছে পারমাণবিক জ্বালানী নিয়ে। ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানী কিভাবে নিশ্চিত ভাবে দীর্ঘদিন মজুত করে রাখা যায় এবং কিভাবে remote sensing করে তার গুনগত মান সম্পর্কে অবহিত হয় যায়।

বায়োফুয়েল নিয়ে আপনি দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। আপনার গবেষণার অভিজ্ঞতা বলুন।

তানভীর ফারুকঃ বায়োফুয়েল (Biofuel) কাজটির সাথে আসলে ২০১০-১১ এর দিকে যুক্ত হই । ২০০৮-২০০৯ এর বিশ্ব জ্বালানি সংকট থেকে উত্তরণের একটি উপায় হিসাবে Biofuel কে নির্বাচন করা হয়। biofuel নবায়নযোগ্য (renewable) উৎস সেটাই ছিল এই নির্বাচনের একটি বড় কারণ। কিন্তু জ্বালানি তেল হিসাবে biofuel এর গুণগত মান কি? মিশ্র দহনে (biofuel and regular fuel blends) biofuel এর কোনো ক্ষতিকারক প্রভাব বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা ? আমরা গবেষণার মাধম্যে তাই বের করার চেষ্টা করেছি। bio-ethanol, butanol, methylbutanoate, methyldecanoate এই চার ধরণের biofuel নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ চালানো হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের গবেষণার ফলাফল দেখাতে সক্ষম হয় যে জ্বালানি হিসাবে biofuel এর মান সাধারণ জ্বালানীর (octane, petrol, diesel) এর সমমানের এবং তা ক্ষতিকারক প্রভাব মুক্ত।

এখানে বলে রাখা প্রয়োজন যে ভুট্টা থেকে bio-ethanol প্রস্তুত biofuel গবেষণার ক্ষেত্রে একটি নেতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। ভুট্টা যা একটি খাবারের উৎস, জ্বালানি তেলের উৎস হওয়ার কারণে তা খাদ্যের পরিবর্তে উচ্চ মূল্যে জ্বালানির জন্য বিক্রয় হয়েছে এবং কৃত্রিম খাদ্য সঙ্কট তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে। প্রকৃত biofuel তৈরি করার কথা ছিল lignocellulosic biomass from agriculture residue থেকে কিন্তু উচ্চ মূলধন এবং খরচের কারণে তা পূর্ণতা পায়নি।

ভবিষ্যতে কি নিয়ে কাজ করতে চান?

তানভীর ফারুকঃ plasmaর মাধ্যমে স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন (Supersonic Combustion RAMjet) এর দহনকে দীর্ঘমেয়াদী ভাবে স্থিতিশীল রাখার ব্যাপারে কিছু কাজ শুরু করেছি। একই সাথে landfill gas এর অনাবশ্যক উপাদানসমহু অপসারণ করে তার জ্বালানী-মান উন্নয়ন করা যায় সে বিষয়েও কিছু প্রাথমিক কাজ করা হচ্ছে আমার গবেষণাগারে। আমাদের দেশে landfill gas শক্তির একটা ভালো উৎস হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। সুপারক্রিটিক্যাল জল জারণ (Supercritical water oxidation) নিয়ে কাজ করার আশা রাখি যা পানি শোধন এবং বিশুদ্ধিকরণে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার ক্ষমতা রাখে।

তরুণ শিক্ষার্থী যারা বিজ্ঞানে কাজ করতে চায় তাদের জন্য আপনার কোন উপদেশ বা বক্তব্য?

তানভীর ফারুকঃ আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা এখনো প্রকৌশলের বিভিন্ন শাখা নিয়ে একটা সনাতন ধারণা পোষণ করে থাকে। সবাই এখনো কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল কিংবা তড়িৎ প্রকৌশলকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে অথচ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এখন এই সনাতন শাখাগুলো সং-মিশ্রিত/মিলিত (combined) । যুক্তরাষ্ট্র অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন আন্তঃ-বিষয়ক প্রকৌশল (inter-disciplinary engineering) বিভাগ স্থাপন করা হচ্ছে। কাজেই আন্তঃ-বিষয়ক গবেষণা করার মন-মানসিকতা রাখতে হবে। মৌলিক বিষয় – পদার্থ, রসায়ন এবং গণিতের ভিত্তি মজবুত করতে হবে। খালি গৎবাঁধা অংক সমাধান না করে একটা প্রকৌশল কেন্দ্রিক বা নকশা সমস্যাকে (engineering or design problem) কিভাবে সূত্রবদ্ধ (formulate) করা যায় সে বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে কেননা প্রকৃত গবেষণায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনো গৎবাঁধা উত্তর থাকে না। জটিল সমস্যাকে কিভাবে সরলীকরণ (simplification of complicated problems) যায় তা শেখার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে। স্নাতকোত্তর গবেষণায় কত দ্রুত অংকের সমাধান দেয়া যায় সেই ব্যাপারে সাধারণত কেউ চিন্তিত নয় বরঞ্চ বিশ্লেষণাত্মক চিন্তা ভাবনাকেই (analytical thinking) অগ্রাধিকার দেয়া হয়। অপ্রত্যাশিত ফলাফলের জন্য সব সময় মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে এবং মাল্টি -টাস্কিং (multi-tasking) অভ্যাস গড়তে হবে।

পিবিএ/এফএস

আরও পড়ুন...