পিবিএ, নীলফামারী: দরজায় কড়া নাড়ছে বাংলা নববর্ষের বর্ষবরণ উৎসব পহেলা বৈশাখ। ইলিশ ছাড়া বাংলা নববর্ষ উদযাপন যেন এক অসম্ভব ব্যাপার, দাম যাই হোক না কেন! পহেলা বৈশাখ মানেই সকালে উঠে পান্তা ভাতের সঙ্গে ইলিশ ভাজা খাওয়া। এদিকে বৈশাখ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন বাজারে ব্যাপকভাবে দাম বাড়ছে ইলিশের।
দেশেরে উত্তরের জেলা নীলফামারীর বাজারগুলোতে এক কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। যেখানে একজন দিনমজুরের আয় দিনে তিনশ টাকা। এক কেজি ইলিশ কিনতে হলে ছয় দিনের মজুরির টাকা খরচ করতে হবে তাকে। আবার মণ প্রতি ধান বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা দরে। ফলে এক কেজি ইলিশ কিনতে হলে একজন কৃষককে তিন মণ ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই কৃষক ও দিনমজুরদের পক্ষে নববর্ষের দিনে ইলিশ খাওয়াটা অনেকটাই অম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জেলা সদরের রামনগর ইউনিয়নের বড় খামাত পাড়ার বাসিন্দা রাজমিস্ত্রি কৃষ্ণ চন্দ্র রায় বলেন, ‘কাজ করে দিনে একবেলা নাস্তা ও ৩০০ টাকা হাজিরা পাই। বাজারে জাট্কা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকায়। আর এক কেজির ওপরের সাইজের ইলিশগুলো বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার থেকে দুই হাজার ১০০ টাকায়। আমার আয়ের তিনশ টাকা দিয়ে সাত সদস্যের পরিবার চালায়। ইলিশ মাছ কেনার উপায় নেই। আমাদের আবার বৈশাখ আছে নাকি?’
এদিকে পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে ধুম পড়ে যায় কেনাকাটার। বর্ষবরণের এই উৎসবে পরিবারের ছোট-মেয়েরা বাবা মায়ের কাছে বায়না ধরে নতুন কাপড়ের। পাশাপাশি, খাবার তালিকায় থাকতে হবে ইলিশ মাছ। বৈশাখ উদযাপনের আগ দিয়ে নীলফামারীর গ্রামে-গঞ্জে মাছের বাজারগুলোতে জমজমাট ব্যবসা চলছে। বিশেষ করে ইলিশের। দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই বৃত্তবানরা এই মাছ কিনতে পারলেও দিনমজুর, কৃষক ও পেশাজীবীরা তা কিনতে পারছে না। বর্তমানে এক কেজি ইলিশ কেনার জন্য ২/৩ মণ ধান বিক্রি করতে হয় কৃষককে।
সরেজমিনে বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায়, আর প্রতি বস্তা (৮০ কেজি) এক হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়। ফলে একজন কৃষককে এক কেজি ইলিশ কিনতে দরকার হচ্ছে তিন মণ ধান। আর দিনমজুরকে লাগে ৫-৬ দিনের টাকা।
পিবিএ/এএইচ