পিবিএ,উলিপুর: কুড়িগ্রামের উলিপুরে কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষনে তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিস্তৃর্ণ চরে চাষাবাদ করা প্রায় ৩৫ হেক্টর জমির বাদাম ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে তিস্তা নদী অববাহিকার থেতরাই, গুনাইগাছ ও বজরা ইউনিয়নের চরাঞ্চল গুলোতে বাদাম চাষাবাদ করা প্রায় শতাধিক কৃষককে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তিস্তা ও ব্রহ্মপূত্র নদের জেগে উঠা চরাঞ্চল গুলোতে চলতি মৌসুমে প্রায় ৪১১ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষাবাদ করে কৃষকরা। বাদাম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৮শত ২২ মেট্রিক টন। অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষকদের নিবিড় পরিচর্যার কারণে বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। কিন্ত কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষনে তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বজরা ইউনিয়নের ১০ হেক্টর, থেতরাই ৫ হেক্টর ও গুনাইগাছ ইউনিয়নের ২০ হেক্টর জমির বাদাম ক্ষেত তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এর ফলে প্রায় ৫২ মেট্রিক টন বাদাম উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে।
সরেজমিনে, উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের কিশোরপুর চরে গিয়ে দেখা যায়, বেশির ভাগ বাদাম ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। আবার কিছু বাদামক্ষেত আংশিক পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। ফলে বাদাম ক্ষেতের গাছগুলো পঁচে মরে যাচ্ছে। এসময় বাদাম চাষি বদরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ৫০ শতক জমিতে বাদাম চাষ করেছি। ফলনও ভাল হয়েছিল। হঠাৎ করে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া পুরা ক্ষেতই পানিতে তলিয়ে গেছে। চাষাবাদ করতে যে টাকা খরচ হয়েছে, এখন সে টাকাও আর উঠবে না। একই চরে বাদাম চাষ করা কৃষক হামিদুল ইলাম জানান, প্রায় ৭ হাজার টাকা খরচ করে ৩৫ শতক জমিতে বাদাম চাষ করেছিলেন। ক্ষেত ডুবে যাওয়ায় সব শেষ হয়ে গেল।
একই পরিস্থিতি উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের তিস্তার চরে চাষাবাদ করা বাদাম ক্ষেতগুলোও। ওই ইউনিয়নের কৃষক কাজিম উদ্দিন জানান, প্রায় ৪৫ হাজার টাকা খরচ করে দেড় একর জমিতে বাদাম চাষ করেছিলাম। ফলনও ভাল হয়েছিল, পানিতে ডুবে যাওয়ায় সব শেষ হয়ে গেল।
এদিকে উপজেলার বজরা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল কুদ্দুছের ৩৫ শতক জমির বাদাম, রফিকুল ইসলামের ৪৫ শতক জমির বাদাম ক্ষেত তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে নদী গর্ভে চলে গেছে। এরকম তিস্তা নদীর অববাহিকার বিভিন্ন চরে বাদাম চাষাবাদ করা অনেক কৃষক তাদের ক্ষতির কথা জানান।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন,ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে। সরকারী ভাবে কোন প্রণোদনা আসলে ক্ষতিগ্রস্থ এসব কৃষকদের দেয়া হবে।
পিবিএ/রোকনুজ্জামান মানু/এএম