মোস্তাফিজুর রহমান,লালমনিরহাট: দারিদ্র্যপীড়িত লালমনিরহাটকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিশালী জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছরই তিস্তা নদীর দুই পাড় ঘিরে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রাথমিকভাবে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে তিস্তার পাড় পর্যটন এলাকায় রূপ নেবে।জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রকল্প যত দ্রুত শুরু করা যায় তার জন্য ব্যক্তিগত আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় এ তথ্য জানায়।এতে বলা হয়, মহাপরিকল্পনার আওতায় তিস্তা নদীর দুই পাড়ে ২২০ কিলোমিটার উঁচু গাইড বাঁধ নির্মাণ করা হবে।
বাঁধের দুই পাশে থাকবে রিভার ড্রাইভ রোড (চওড়া প্রস্থ মসৃণ রাস্তা)। যাতে পর্যটকরা লং ড্রাইভে যেতে পারেন। এছাড়া এই রাস্তা দিয়ে পণ্য পরিবহন করা হবে। নদী পাড়ের দুই ধারে গড়ে তোলা হবে হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট। তিস্তা নদীর বর্তমান নাব্য হ্রাস পেয়েছে। নদীর প্রশস্ততা কোথাও ৮ কিলোমিটার কোথাও আবার ১২ কিলোমিটার। শুষ্ক মৌসুমে পানি শুকিয়ে যায়। এই পরিকল্পনায় তিস্তা নদীর গভীরতা বাড়াতে মেজর খনন কাজ শিগগিরই শুরু করা হবে।লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এ জেলা শিক্ষা ও সম্পদে সমৃদ্ধিশালী হবে।
থাকবে না বেকার সমস্যা, জেলা হয়ে উঠবে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ।লালমনিরহাট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুুর রহমান বলেন, চায়না পাওয়ার কোম্পানি দুই বছর ধরে তিস্তা পাড়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে নকশা ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করেছে। তারা সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরেছে। পৃথক প্রজেক্ট আকারে পানি উন্নয়ন বোর্ড এই কাজ বাস্তবায়ন করবে। খুব শিগগিরই টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হলে এই জেলার চিত্র পাল্টে যাবে।তিনি বলেন, ইকোনমিকজোন এবং অন্যান্য প্রকল্পে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তিস্তা পাড়ের সবচেয়ে বেশি ভাঙনকবলিত ইউনিয়ন খুনিয়াগাছ।
এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিরুজ্জামান বলেন, মানুষের দাবি ছিল স্থায়ী নদী ভাঙনরোধ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বাঁধসহ তিস্তা পাড়ের মানুষকে সমৃদ্ধিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছেন।স্থানীয়রা জানান, বন্যা ও নদীভাঙ্গন এই অঞ্চলের উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এতে এই অঞ্চলের মানুষ আশার আলো দেখতে পাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই তিস্তাপাড়ের মানুষের জন্য এরকম স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করায়।
পিবিএ/এসডি