দরজায় কড়া নাড়ছে ভর্তি পরিক্ষা, শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি এবং প্রত্যাশা

ভর্তি পরিক্ষা বর্তমান যুদ্ধ ক্ষেত্রে মতোই হয়ে ওঠছে আর প্রত্যেক শিক্ষার্থী হলো সেই যুন্ধক্ষেত্রের এক একজন সৈনিক । তবে ভর্তি পরিক্ষার সবকিছু পর্যালোচনা করলে দেখা যায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পরিক্ষা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা না থাকার কারণেই বিষয়টা এতোটা জটিল হয়ে ওঠে।

“ভর্তি পরিক্ষা ” এটা একেক জনের কাছে একেক রকম কেউ পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করে মাত্র তেমন কোন প্রস্তুতি থাকেনা আর এরা নিজেরাও জানে এদের চান্স হবেনা শুধু মনের প্রশান্তির জন্য পরিক্ষা দেওয়া।
আরেক শ্রেণি মােটামােটি প্রস্তুতি নেয় এদের মনােভাব এরকম, পড়বাে হলে হবে না হলে নাই চাপ নেওয়ার কিছু নাই। আরেক শ্রেণি অনেক সিরিয়াস এদের ভাবটা এরকম, শুদু এডমিশনে চান্স পাওয়ার জন্যই এদের জন্ম চান্স না পেলে জীবনই ব্যর্থ তবে এরা নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে পারেনা। সবসময় অন্যদের থেকে নিজেদের ছােট ভাবে। যা অনেকটা পিছিয়ে দেয় এই শ্রেণিকে।

সর্বশেষে রয়েছে যে শ্রেণী এরা অনেক ঠাণ্ডা মাথার লেখা-পড়া করে মােটামােটি তবে সিরিয়াসলি এবং নিজেদের প্রতি আত্মবিশ্বাস রাখে। এদের ভাবটা এরকম, আমি
যদি পড়ি তাহলে চান্স হবে এই বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যায় এবং এরাই সফল হয়।
“ভর্তি পরিক্ষা ” আরেকটি বিষয় অনেককে পিছিয়ে দেয় তাহলাে, অন্যের পড়াশােনা দেখে নিজে হতাশ হয়ে যাওয়া। তুমি যখন তোমার বন্ধুকে ফোন দিবে এবং শুনলে সে প্রচুর পড়াশোনা করছে এটা তুমার মাঝে এক
ধরণের হীনমন্যতা তৈরি করবে।

তোমার মনে হতে পারে ওরা অনেক পড়েছে আমিতো সেভাবে পড়িনি । আবার পরিক্ষার কেন্দ্র যাওয়ার পর যখন দেখবা অনেকে বই নিয়ে অনেক সিরিয়াসলি পড়তেছে তখন তুমার মাঝে একধরনের হীনমন্যতা কাজ করবে । আর যে বইটা পড়তেছে সেটা যদি তুমার অপরিচিত হয় তাহলেতাে তুমি শেষ। এটা তুমার মনোবল নষ্ট করে দিবে যার ফলে তুমি পরিক্ষায় খুব সহজ প্রশ্নগুলো ভুল করে আসবে।

তাই সবসময় ভাবতে হবে তুমি যা পড়েছো সেখান থেকেই প্রশ্ন আসবে। অন্যে পড়ছে তাতে তুমার কি? তুমি যা পড়েছো তা তুমার পরিক্ষার জন্য যথেষ্ট এমন আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। কে, কি পড়ছে এটা না ভেবে তোমার ভাবতে হবে তুমি যা পড়েছো তা ঠিক-ঠাক দিতে পারলেই তুমি তোমার কাঙ্খিত রেজাল্ট পাবে। আরেকটি বিষয় ভর্তি পরিক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি হতাশ করে শিক্ষার্থীদের তা হলাে, পরিক্ষার্থীর সংখ্যা। একজন শিক্ষার্থী যখন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিক্ষা দিতে যায় সর্বপ্রথম তার মাথায় পরিক্ষার্থীর সংখ্যা কত তা নিয়ে একটা হিসাব-নিকাশ চলতে থাকে। মোট কতজন পরিক্ষার্থী, এক সিটের জন্য কতজন লড়ছে, কতজন ভালো স্টুডেন্ট হতে পারে ইত্যাদি। আর এসব চিন্তা করে যখন সে দেখতে পায় সিটের তুলনায় সংখ্যা একটু বেশি ঠিক তখনি তার মনোবল দুর্বল হয়ে পড়ে।

একজন শিক্ষার্থী প্রথম যখন কোন পরিক্ষা দিতে যায় বিশেষ করে গ্রামের মফস্বলের থেকে যে শিক্ষার্থীরা আসে তারা বেশি হতাশ হয় তাদের আশে-পাশের পরিবেশ দেখে। কারণ এমন অনেক শিক্ষার্থী দেখবে যারা একদম ফিট-ফাট, যাদের চশমা পড়ার স্টাইলে দেখলে মনে হবে কেউ নাসার বিজ্ঞানী কেউ সদ্য পাশ করা এমবিবিএস ডাক্তার। অনেকের চেহারা দেখে মনে হবে পড়তে পড়তে এদের এই অবস্থা। অনেককে দেখবে কোন চিন্তাই নেই হাসি-খুশি যেন পরিক্ষা শুদু শুদু হচ্ছে সিটগুলো ওদের জন্যই বরাদ্দ। আর এসব দেখে তুমি পরিক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশ করবে আর ভাববে” আমি মনে হয় অযাচিতভাবে এখানে চলে আসছি। যার ফলে পরিক্ষায় কমন পড়লেও পরিক্ষা তেমন ভালাে হয়না।

তাই এসব চিন্তা বাদ দিয়ে তোমার যে প্রস্তুতি সে অনুযায়ী পরিক্ষা দিবে তাহলে তুমি প্রথম পরিক্ষা দিয়েই বুঝতে পারবে সংখ্যা আসলে কিছু না প্রস্তুতিই মূল। কারণ তুমার প্রস্তুতু অনুযায়ী পরিক্ষা দেওয়া পর তুমার একটা মেরিট আসবে আর দেখবে এই মেরিট পজিশনটা তুমি এমন অনেক শিক্ষার্থীদের দেখেছিলে যাদের থেকে নিজেকে অনেক ছোট ভেবেছো তুমি তাদেরকে পিছনে ফেলে দিয়েছো এবং তখন তোমার মাঝে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে, যে হে আমি পারবাে এবং এই আত্মবিশ্বাসই তোমাকে চূড়ান্ত গন্তব্যে পোচ্ছে দিবে।

ইমরান হোসাইন,গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ,কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

আরও পড়ুন...